বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনে সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

প্রকল্পের ৯৩ ভাগ কাজ শেষ

আনোয়ারা প্রতিনিধি | বুধবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:১৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চালুর তোড়জোর থাকলেও এখনও প্রায় ৭ শতাংশ কাজ বাকী। টানেলে গাড়ি চলাচলের দুই টিউবের সাথে সংযোগ স্থাপনে তিনটি ক্রস প্যাসেজ তৈরির জটিল কাজটিও নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে। প্রক্রিয়াগত জটিল আর কোন কাজ না থাকলেও এখন চলছে কন্ট্রোলিং সিস্টেমকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া।
তবে প্রকল্প পরিচালক নিজেও নিশ্চিত করে জানাতে পারেন নি কবে নাগাদ খুলে দেয়া হতে পারে স্বপ্নের এই প্রকল্প। অবশ্য গত সপ্তাহে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমভাগে কর্ণফুলী তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের নানা দিক দেখানো হতে পারে। তখন পরীক্ষামূলকভাবে একটি টিউব খুলে দেয়াও হতে পারে। টানেল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কর্ণফুলী টানেলে গাড়ি চলাচলের জন্য মূল দুটি টিউবের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আপদকালীন সময়ে একটি টিউব
থেকে আরেক টিউবে যাওয়ার জন্য বানানো হয়েছে ৩ ক্রস প্যাসেজ। সেগুলোর খনন কাজও শেষ। এর মাধ্যমে টানেলের প্রায় সব চ্যালেঞ্জিং ও ঝুকিপূর্ণ কাজ শেষ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে চলছে টানেলের ভেতরে বাতি স্থাপন, অগ্নিপ্রতিরোধক বোর্ড স্থাপন, ডেকোরেটিভ প্লেট স্থাপন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, পাম্প স্থাপন, টানেলের ভেতরে বাতাস চলাচলের জন্য ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ।
টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চ্যালেঞ্জিং কাজগুলো আমরা শেষ করেছি তা বলা যায়। কিন্তু আরো অনেকগুলো ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজ আছে। মূল কাজ শেষ হলেও অনেকগুলো টেকনিক্যাল ইস্যু থাকে। লাইটিং সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমসহ সবগুলো টেকনিক্যাল বিষয় কন্ট্রোলিং সিস্টেমের সাথে যুক্ত করে ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত হতেও সময় লাগে। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে উদ্বোধন হবে এমন কোন তারিখ কেউ বলেনি। কাজ শেষ করার জন্য একটি ডেট লাইন থাকে। কাজ শেষ হলে তবেই বলা যাবে কবে চালু হবে। অক্টোবর পর্যন্ত ৯৩ শতাংশ কাজ হয়েছে, এ কয়দিনে কাজ আরো খানিকটা এগিয়েছে। কবে টানেল চালু হবে সেটা মন্ত্রণালয় ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
এদিকে চলতি বছর দুটি টিউবের একটি পরীক্ষামূলক চালুর কথা শোনা গেলেও সবকিছুই এখনো পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর নির্ভর করছে। প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ করতে আরো প্রায় ৩ মাস লেগে যেতে পারে। বর্তমানে ৩০০ প্রকৌশলীসহ এক হাজার কর্মী কাজ করে যাচ্ছেন। অপরদিকে টানেলের নিরাপত্তায় দুটি থানা ও দুটি ফায়ার স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। থানার জন্য আনোয়ারা প্রান্তে ৪ তলা ও পতেঙ্গা প্রান্তে ২ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া উভয় প্রান্তে ফায়ার স্টেশনের জন্য ২ তলা বিশিষ্ট ২টি ভবন হবে। এসব কাজে ব্যয় হতে পারে ৩০ কোটি টাকা।
টানেলের পাশাপাশি ৬ লেইনের সংযোগ সড়ক চালু করতে চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোর। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (দোহাজারী) নির্বাহী প্রকৌশলী ও ৬ লেইনের সংযোগ সড়ক প্রকল্পের পরিচালক সুমন সিংহ বলেন, টানেলের সঙ্গে চালু করা হবে ৪ লেইনের সড়ক। এই চার লেইনে ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী কাজ চলতি বছর ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। চার লেইন পুরোপুরি প্রস্তত করতে মাত্র ২ কিলোমিটার কার্পেটিং বাকী আছে। ২১ কালভার্টের মধ্যে ১৭টি প্রস্তুত হয়ে গেছে। দুইটির কাজ শেষ হবে নভেম্বরে। সড়কের চাতরী বাজারের দক্ষিণের কালভার্ট ও ডাকপাড়া এলাকার কালভার্ট দুটির কাজ শেষ হলে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে ৪ লেইনের সড়ক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবায়েজিদ থেকে ১২ মামলার আসামি মোকাম্মেল গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধদেশে হাসপাতালে যাওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছুঁই ছুঁই