প্রবীণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম খাদ্য প্রয়োজনীয়তা

হাসিনা আকতার লিপি | শনিবার , ১ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

‘পরিবর্তিত বিশ্বে প্রবীণ ব্যক্তির সহনশীলতা’। স্বয়ং জাতিসংঘ ১৯৯১ সাল থেকে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ দিবসটি পালন করা শুরু করে। প্রবীণ বয়সে সঠিক মাত্রায় পুষ্টি সম্পন্ন ও সুষম খাবারের প্রয়োজন তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ পুষ্টিহীনতা বা সুষম খাবার না খেলে তাদের দেহ ও স্বাস্থ্য রোগাক্রান্ত হবে। আবার অতিরিক্ত পুষ্টি ও তাদের জন্য নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি করবে।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে দৈনন্দিন কাজকর্ম কমতে শুরু করে, দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গে নানা ধরনের পরিবর্তন আসে। এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে খাদ্য ও পুষ্টিতে পরিবর্তন দরকার।
প্রথমেই বার্ধক্যে হাড়ে ঘনত্ব কমতে শুরু করে (সবার না), হৃদপিণ্ড, কিডনি, হরমোন, শিরা, ধমনী, যকৃত, চোখ, চামড়া অর্থাৎ পায়ের নখ থেকে মাথার চুল সব কিছুরই কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা কমতে থাকে, যার ফলে স্মরণ শক্তি কমতে থাকে। খাদ্য শোষণ ক্ষমতা বা মেটাবলিজম কমতে থাকায় প্রবীণ বয়সে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে পুষ্টির মাত্রা সঠিক হওয়া অর্থাৎ প্রতিদিন সুষম খাদ্য খেতেই হবে।
নারীদের বেলায় নির্দিষ্ট বয়সের পর ইস্ট্রোজেন হরমোন কমতে শুরু করে। এবং হাড় ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। পরিমিত ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
এ সময় যা করা উচিত

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। বিশেষ করে সেন্ট্রাল ওবেসিটি যেন না হয়।
২. বৎসরে দুইবার না পারলে অন্তত: একবার চিকিৎসকে কাছে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত।
৩. যার যা সমস্যা আছে উদাহরণস্বরূপ ডায়বেটিস, হার্ট, কিডনী, অথ্রাইটিস, হাইপারটেনশন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
৪. অবশ্যই সুষম খাদ্যে অভ্যস্থ হতে হবে।
৫. সপ্তাহে অন্তত: ১৫০ মিনিট অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
যা একদম করা যাবে না

১. বাইরের খোলা খাবার খাওয়া যাবেই না।
২. দোকানের এবং দাওয়াতের খাবার বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার নিয়মিত খাওয়া যাবে না।
৩. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ খাওয়া যাবে না।
৪. গরু-খাসীর মাংস খাওয়া যাবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো, কিন্তু মগজ, কলিজা, নলা একদম খাওয়া যাবে না। সফট ড্রিংকস পান করা যাবে না।
৫. সেই সাথে যাদের অভ্যাস আছে ধুমপান, মদ্যপান, তামাক দয়া করে বর্জন করুন এবং সুস্থ থাকুন।
প্রবীণরা সমাজের সম্পদ। তাদের মেধায় এবং পরামর্শে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

লেখক : পুষ্টিবিদ, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ও কনসালটেন্ট ল্যাব এইড লিমিটেড এবং
পার্ক ভিউ হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক
লিমিটেড, চট্টগ্রাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপরিবর্তিত বিশ্বে প্রবীণ ব্যক্তির সহনশীলতা
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্ব প্রবীণ দিবসে আমাদের অঙ্গীকার