প্রথমবার বাঁচল, দ্বিতীয়বারে হারিয়েই গেল

উখিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৪ আগস্ট, ২০২২ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

চার মাস আগে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোর ওসাইমিম। তখন বেঁচে যায়। তবে এবার আর তাকে আত্মহননের পথ থেকে ফেরানো গেল না। গত শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় উখিয়ার নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে আত্মহত্যা করেন তিনি। ওসাইমিম ইতিপূর্বে কক্সবাজার সদর মডেল থানা ভবনের তিনতলায় উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, শনিবার ভোরে শয়নকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় ওসাইমিমের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্বজনরা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্র ওসাইমিম প্রথম দফায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন গত ১৬ এপ্রিল। ওইদিন বিকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানার কনস্ট্রাকশনের কাজে ব্যবহৃত অস্থায়ী সিঁড়ি বেয়ে হঠাৎ ওই কিশোর তিনতলার সানসেটে উঠে যায়। এরপর সেখানে নিজের গায়ে ব্লেড দিয়ে আঘাত করে। একই সময় লাফিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন। পরে কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস তিনতলার ওই সিঁড়িতে উঠে তাকে আত্মহত্যা না করার জন্য নানাভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে নিচে পুলিশ কম্বল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে আসে। লাফ দিলেও যাতে প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়। ওই কিশোরকে বুঝাতে সক্ষম হলে সে নিচে নামতে রাজি হয়। প্রায় ২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস চেষ্টার পর তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ওইদিন ওই কিশোরের লেখা একটি কাগজও উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এরপর কিশোরকে নিয়ে উখিয়ায় পালংখালীর গয়ালমারা গ্রামে নিজ বাড়ি চলে যান তার পিতা মো. শাহজাহান। পরিবারের তথ্য মতে, তাকে আন্তর্জাতিক সংস্থার একটি হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসাও প্রদান করা হয়। সম্প্রতি ওই কিশোর স্বাভাবিক আচরণও করে। কিন্তু গত শুক্রবার রাতে আত্মহত্যা করেন।

এলাকাবাসী জানান, নিহত কিশোরের এক সহপাঠীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে উক্ত কিশোরীর অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে টিসি নিয়ে নিজ জেলায় চলে যায়। তবে এতেও থামেনি তাদের যোগাযোগ। কথা চলতো মোবাইল ফোনে। অবস্থা বেপরোয়া দেখে কিশোরীর অভিভাবকরা তার থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় এবং স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে ঐ মেয়ে আত্মহত্যা করে।

সেই ঘটনার পর থেকে ওসাইমিম একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং মোবাইল ফোনের প্রতি অত্যাধিক আসক্তি হয়ে ওঠে। এলাকাবাসী ওসাইমিম আত্মহত্যার পিছনে এছাড়া অন্য কোনো কিছু বলতে পারেনি। ওসাইমিমের বাবা মো. শাহজাহানের উখিয়ার পালংখালী বাজারে একটি কম্পিউটার দোকান রয়েছে। তা দিয়েই চলে সংসার।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ইন্টারনেট ও গেইম আসক্তি কিশোরের আত্মহত্যার কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধওদের চোখে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন