প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে

শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

মহালয়ার মধ্য দিয়ে দশ দিন আগে যে উৎসবের শুরু হয়েছিল, ঢাকের বাদ্যে, সিঁদুর খেলায় তা শেষ হলো গতকাল। ‘দুর্গতিনাশিনী’ দেবী দুর্গার দেবালয়ে ফেরার দিনে ঢাকের বাদ্য আর অশ্রুভেজা ভালোবাসায় তাকে বিদায় জানালেন মর্ত্যের বাসিন্দারা। ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় ‘আনন্দময়ীর’ নিদ্রাভঙ্গের বন্দনায় যে উৎসবের সূচনা হয়েছিল, দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনে তার সাঙ্গ হলো গতকাল শুক্রবার। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের গতকাল দশমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহীত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অতঃপর দেবীর বিসর্জন আর ‘শান্তিজল’ গ্রহণ। গত সোমবার বোধনে অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে মর্ত্যে। হিন্দু বিশ্বাসে- টানা পাঁচদিন মৃন্ময়ীরূপে ফিরে যাচ্ছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে।
সকাল থেকেই বিহিত পূজার পর ভক্তের কায়মনো প্রার্থনা আর ঢাক-উলুধ্বনি-শঙ্খনিনাদে হিন্দু রমণীদের পরম আকাঙ্ক্ষিত সিঁদুর খেলায় মুখর হয়ে ওঠে মন্দিরগুলো। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল, কাঁসর আর শঙ্খ বাজিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভক্তরা বিদায় জানিয়েছে দেবী দুর্গাকে।
জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে প্রথমে প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে সড়কে অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেও পরবর্তীতে প্রশাসনের অনুরোধে সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সন্ধ্যার পর থেকে অনেকেই ট্রাকে, ছোট ছোট যানবাহনে করে মায়ের প্রতিমা নিয়ে অনেকেই পতেঙ্গা, অনেকেই কর্ণফুলীতে, ফিরিঙ্গী বাজার বাঁশঘাটা, নেভাল-২, কালুরঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে প্রতিমা বির্সজন দেয়। সকালে পূজা শেষে-শেষবারের মতো মাকে দর্শন, পূজা করার পাশাপাশি বিদায় দেওয়ার জন্য পূজা মণ্ডপ গুলিতে ভিড় জমান ভক্তরা। নারীরা দেবীর ললাটের সিঁদুর আপন ললাটে এঁকে নেন। আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে মা দুর্গা ফিরে আসবেন, সে আশায় থাকবেন ভক্তরা।
মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য জানান, এবার চট্টগ্রাম মহানগরে ২৭৭টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা উদযাপন হয়েছে। শত শত ভক্তের উপস্থিতিতে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকের শব্দের সঙ্গে কাঁসার ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিমাগুলো নদীতে এবং স্থানীয় পুকুর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব। এদিকে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত আজাদীকে জানান, এবার চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ১ হাজার ৯৬৪টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন পূজা ১ হাজার ৫৫৩টি। দশমীর অঞ্জলি শেষে উপজেলায় উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালী ও বাঁশখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ জনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হলো কক্সবাজার সৈকত