পুশ ইন করতে হলে হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান : নাহিদ

| শুক্রবার , ৪ জুলাই, ২০২৫ at ৫:০১ পূর্বাহ্ণ

গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ে পদযাত্রা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ৩য় দিনের এই পদযাত্রা শেষে এক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গত ৫০ বছরে কোনো সরকার সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি। এখনও পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এখন প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর সীমান্তে পুশ ইন করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, ছাত্র জনতার বাংলাদেশ। যদি পাঠাতেই হয় হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান। আমরা তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবো। কোনোভাবেই এই পুশ ইন আর মেনে নেওয়া হবে না। আমরা দলমত নির্বশেষে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমাদের সঙ্গে থাকুন আমরা যেই স্বাধীনতা এনেছি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে তা রক্ষা করব। খবর বাংলানিউজের।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় পঞ্চগড় এনসিপির আয়োজিত পদযাত্রা শেষে এক পথ সভায় একথা বলেন তিনি। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, সারাদেশে এনসিপির উদ্যোগে পহেলা জুলাই থেকে শুরু হয়েছে জুলাই পদযাত্রা। আর অভ্যুত্থানের পর থেকে এবং এই পদযাত্রায় আপনাদের এলাকার কৃতি সন্তান এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়ের নানা সমস্যা তুলে ধরেছেন। পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্যসেবা নানা দুর্নীতির অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা চেষ্টা করছি আপনাদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে।

এর আগে সভায় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, পঞ্চগড়বাসীর সমস্যা ইনশাল্লাহ এনসিপির হাত ধরেই সমাধান হবে। পঞ্চগড়বাসীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্যসেবা সবই এনসিপির হাত ধরেই শুরু হবে আর যা অনিয়ম হচ্ছে তা সংস্কার হবে এবং নতুন অবস্থার তৈরি হবে। আপনাদের এলাকার কৃতি সন্তান সারজিস আলমের হাতকে শক্তিশালী করুন। আগামী ৩ আগস্ট ছাত্র জনতার সামনে আমরা জুলাই সনদ ইনশাআল্লাহ ঘোষণা করবো। আর এই কর্মসূচিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবাইকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড়ে কোনো মানুষ আহত হলে তাকে রংপুর বা অন্য জেলায় পাঠানো হয়। অনেককে নিয়ে যেতে পথেই মারা যায়। পঞ্চগড়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবাই অবহেলিত। কিছুদিন আগে এখানে পাথর উত্তোলন শুরু হলেও চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। রাতের আঁধারে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে পাথর তোলা হচ্ছে। স্থানীয়দের হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। এসব কারা করছে আপনারা জানেন। পঞ্চগড়ের চিনিকল চালু হওয়ার কথা ছিল এই বছরেই। কিন্তু কাদের জন্য চালু হয়নি আপনারা জানেন। আগামী ২০২৬ সালেই আমরা পঞ্চগড় চিনিকল চালু চাই। এবং সব অনিয়ম নির্মূল করে সুন্দর একটি পঞ্চগড় জেলা হিসেবে উপহার দিতে চাই।

সারজিস আলম আরও বলেন, অনেক পুলিশ আছে যারা আগে টাকা পরে কথা বলে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে হবে। কেউ ভাবেনি হাসিনার মতো ফেরাউনের ৩৬ দিনে পতন হবে। পঞ্চগড়ে হাসিনার চেয়ে বড় ফেরাউন নেই। আমাদের সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। পঞ্চগড়ে দুর্নীতি, চুরি, বাটপারি বন্ধ করতে হবে। আমরা ঝামেলা করতে চাই না।

দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সবকিছুর পরিবর্তন হলেও পঞ্চগড়ে চাঁদাবাজি দখলদারি বন্ধ হয়নি। কারা করছে আপনারা জানেন। আওয়ামী লীগের সবাই চাঁদাবাজি করে তো ভারতে পালিয়ে গেছে। আপনারা কোথায় পালাবেন। আমরা বলে দিচ্ছি আপনারা পালানোর পথ পাবেন না।

পঞ্চগড়বাসীকে সাক্ষী রেখে বলছি যেই প্রশাসন দিয়ে পুলিশ দিয়ে মধ্যরাতের নির্বাচন হয়েছিল। আওয়ামী ভারসেস ডামি নির্বাচন হয়েছে। সেই প্রশাসন ও পুলিশকে সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না।

এর আগে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. তাসনিম জারা বলেন, রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী সবার হয়ে কাজ করবে। কোনো দলের বা পক্ষের হয়ে কাজ করবে না। আমরা এমন ব্যবস্থায় আর ফেরত যাব না যেখানে রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিজেই তার নাগরিককে খুন গুম করে। হান্নান মাসউদ বলেন, এনসিপি সরকার গঠন করলে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরের বৈষম্য দূর করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবাসী রুবেলের মরদেহ ফিরল গ্রামের বাড়িতে
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সুন্নিয়ত ও সুফিবাদি দর্শনকে প্রসারিত করতে হবে