পিসি রোডসহ ২০১ কোটি টাকার দুটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন

নগরের সড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণে বন্দরের প্রতি মেয়রের আহ্বান

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

২০১ কোটি টাকার পৃথক দুইটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রকল্পগুলো হচ্ছে ১৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকায় নির্মিত পোর্ট কানেকটিং রোড (পিসি রোড) এবং ২১ কোটি তিন লাখ ৬৭ হাজার টাকায় নির্মিত পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ। প্রকল্প দুটিতে অর্থায়ন করেছে জাইকা।

গতকাল বিকেলে নিমতলা এলাকা পিসি রোড উদ্বোধনকালে মেয়র চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতি নগরের সড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। এর কারণ ব্যাখা করে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শহরের সড়কগুলোর ধারন ক্ষমতা অনুযায়ী দশ হতে বার টন ওজনের গাড়ি চলাচলের উপযোগী। কিন্তু বন্দরের পণ্য বহনকারি ট্রাক, লরিগুলো পঁচিশ থেকে ত্রিশ টন ওজনের মালামাল বহন করে চলাচল করছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সংস্কারের পর অতি স্বল্প সময়ে নষ্ট হয়ে চলাচলের উপযোগিতা হারায়। জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে চারটি প্যাকেজে শুরু হয় ছয় লেনের পিসি রোডের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ। তখন প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১৩ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে দুই ও তিন নম্বর প্যাকেজের জন্য ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর, এক নম্বর প্যাকেজে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই এবং চার নম্বর প্যাকেজে ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। দুই ও তিন নম্বর প্যাকেজের কার্যাদেশের মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১৩ মে, এক নম্বর প্যাকেজে ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল এবং চার নম্বর প্যাকেজের কার্যাদেশের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ১ অক্টোবর পর্যন্ত।

তবে নির্দিষ্ট সময় কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দুই ও তিন নম্বর প্যাকেজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স মাঝপথে পালিয়ে যায়। পরে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ দেয় চসিক। এদিকে প্রথমবারের সড়কটিতে আধুনিক প্রযুক্তির থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর সড়কটি উদ্বোধন হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এর আগে বিভিন্ন সময়ে সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।

২১ কোটি টাকার স্কুল ভবনে সোলার সিস্টেমসহ নানা সুবিধা : ২১ কোটি তিন লাখ ৬৭ হাজার টাকায় নির্মিত পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন ভবনগুলোতে রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। ছয় তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত এই ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক সোলার সিস্টেম, জেনারেটর ও সাবস্টেশন, দুর্যোগকালীন সময়ে নিরাপদে প্রতিবন্ধীসহ মানুষের আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়া দুইটি ক্যান্টিন, প্রশাসনিক কক্ষ, ১৮টি আধুনিক শ্রেণী কক্ষ, অধ্যক্ষ রুম, প্রধান শিক্ষকের রুম, দুইটি টিচার্স রুম, আধুনিক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞানাগার (কস্পিউটার ল্যাব দুইটি, কেমিস্ট্রি ল্যাব দুইটি, বায়োলজি ল্যাব দুইটি, পদার্থ বিদ্যা ল্যাব দুইটি) লাইব্রেরি দুইটি, অ্যাম্পি থিয়েটার, দুইটি লিফট, প্রতি ফ্লোরে ওয়াশরুম, দুইটি গার্লস কমনরুম, দুইটি মিটিং রুম এ্যাডমিশন ফান্ড, দুইটি একাউন্টস অফিসইনডোর গেম, সুপ্রশস্ত বারান্দা রয়েছে।

স্কুল ভবন উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, নগরবাসীর সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য ডিগ্রি কলেজসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে সিটি কর্পোরেশন। নগরবাসীর ট্যাঙের টাকায় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ভবন দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ছিল। সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জাইকার অর্থায়নে সেগুলো মানসম্মত ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে কর্পোরেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত আলো বাতাসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে পড়া লেখা করার সুযোগ পাবে।

দুই উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পতেঙ্গা ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল বারেক, প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর নুরুল আমিন, ছালেহ আহমদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহনুর বেগম, হুরে আরা বিউটি, তসলিমা বেগম নুরজাহান, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা বেগম লুৎফুন নাহার। প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতি. প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, মুনিরুল হুদা, ঝুলন কুমার দাশ, অধ্যক্ষ ইসমত আরা, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান ও তৌহিদুল ইসলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুপ্তধনের লোভে শিশুকে হত্যা!
পরবর্তী নিবন্ধবহির্নোঙরে অপেক্ষায় থাকা দুই জাহাজ থেকে চাল খালাস শুরু