পাহাড় দখলে এবার টিনের ঘেরা

বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে যানজটমুক্ত করতে তৈরি করা হয় বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড। কাটা হয় সবুজ পাহাড়ও। সড়কটি হওয়ার আগে পাহাড়গুলোর বেশ কিছু পাদদেশ ও টিলায় বসতি গড়ে উঠলে সড়ক হওয়ার পরে নজর পড়েছে প্রভাবশালীদের। পাহাড় দখলে সক্রিয় হয়ে পড়ে ভূমিদস্যুরাও। সড়কের পাশে সিডিএর অধিগ্রহণকৃত জায়গাতেও সবুজের নামে পোঁতা হচ্ছে খুঁটি। আবার নিত্যনতুন কৌশলে সিডিএর কাটা পাহাড়গুলোও দখল চলছে। রাতে উঠছে নতুন নতুন ঘেরা। পাহাড় কেটে আরসিসি পিলার জমিয়ে চলছে পাহাড় দখল। আর ঘেরাওয়ের মধ্যে কৌশলে কাটা হচ্ছে এসব পাহাড়। বর্ষায় পাহাড় কাটা থামলেও আবহাওয়া যত শুষ্ক হচ্ছে, ততই প্রতিযোগিতা দিয়ে বাড়ছে দখল। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে দখলে মেতে উঠেছে প্রভাবশালীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিডিএর রাস্তার দুই পাশে কাটা ১৬ পাহাড়ের অনেকগুলোতে খুঁটি দেয়া হয়েছে। কয়েকটি পাহাড়ে চলছে টিনের ঘেরাও। এসব পাহাড় দখল তদারকির জন্য পাহাড়ের আশেপাশে কৌশলে বসানো হয়েছে বেশ কিছু অস্থায়ী টং দোকানও। মূলত বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড় দখলে প্রতিযোগিতা চলছে। চলছে পাল্টাপাল্টি দখলও।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রভাবশালীরা লোক নিয়োগ দিয়ে এসব টং দোকান থেকে দখলকৃত পাহাড় তদারকি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জঙ্গল সলিমপুর এলাকার এক বাসিন্দা আজাদীকে বলেন, পাহাড়গুলোতে প্রথমে ঘেরা দিয়ে দখল করা হয়। তারপর রাতে রাতে ঘেরাওয়ের মধ্যে পাহাড়গুলো কাটা হয়। বাইরের কেউ এসব পাহাড়ে ভয়ে যান না। এ সুযোগে পাহাড়ের উপরের অংশ কেটে সমান করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। অনেকে খামার করছে, খামারে যাতায়াত সুবিধার জন্য পাহাড় কেটে সিঁড়ি বানাচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. নূরুল্লাহ নূরী আজাদীকে বলেন, ব্যক্তিগত পাহাড় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকে ঘেরা দিচ্ছে। যেসব পাহাড়ে ঘেরাও দেয়া হচ্ছে, সেগুলোতে নজরদারি করা হবে। কেউ পাহাড় কাটলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের পাশে সলিমপুর এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড়ে বসতি তৈরি করায় গত বছর অনেক বসতি উচ্ছেদ করা হয়েছে। সবুজ পাহাড়ে কেউ বসতি নির্মাণ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা যায়, ১৯৯৭ সালে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড করার উদ্যোগ নেয় সিডিএ। নানা জটিলতার কারণে প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে। বর্তমানে প্রকল্পের মূল সড়ক নির্মাণ শেষ হয়েছে। ফৌজদারহাট প্রান্তে একটি ওভারপাস নির্মাণ শেষ করার পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য কাটা খাড়া পাহাড়গুলো নতুন করে রক্ষণাবেক্ষণ করার মাধ্যমে পুরো প্রকল্পটি শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সিডিএ কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওই বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : আইনমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধখালেদা আবার হাসপাতালে