পাহাড়ে বাড়ছে মৌ চাষ

অল্প খরচে অধিক লাভ, বান্দরবানে ব্যাপক সাড়া

আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান | শুক্রবার , ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানে পাহাড়ি গ্রামে মৌ চাষে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে চাষিদের। বাড়ির আঙ্গিনায় মৌ চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্বত্য এই জনপদের সাতটি উপজেলায়। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় এটি পাহাড়ি গ্রামগুলোতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষি কর্মকর্তা ও চাষিরা জানান, মৌ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বান্দরবানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে মৌ চাষি কল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় ১৪ হাজার এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উদ্যোগে ৪০ জন মৌ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকেও মৌ চাষে উদ্ধুদ্ধ করতে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
চাষিদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে মৌ চাষি কল্যাণ সমিতি সমবায় বিভাগ থেকে নিবন্ধন নেয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে মৌ চাষ সম্প্রসারণে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাননি প্রশিক্ষিত মধু চাষিরা।
এদিকে রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়াপাড়া হয়ে উঠেছে মৌ চাষের গ্রাম। স্থানীয়দের ভাষায় মধু গ্রাম। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দার মিগ্য মারমা। তার সফলতায় তেঁতুলিয়াপাড়া পাহাড়ি গ্রামের ৩৪টি পরিবারের মধ্যে এখন ২৮টি পরিবারই মধু চাষে সম্পৃক্ত। এই মৌসুমে তেঁতুলিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি পর্যন্ত মধু আহরণ করা হয়। কোনো ধরনের প্রক্রিয়া ছাড়াই এই খাঁটি মধু বান্দরবান বাজারসহ আশপাশের হাট-বাজারগুলোতে ১২শ থেকে ১৪শ টাকায় বিক্রি হয়।
সফল মধু চাষি মিগ্য মারমা বলেন, আমরা সফলতায় উদ্বুদ্ধ তেঁতুলিয়াপাড়া গ্রামের ২৮টি পরিবার এখন মধু চাষ করছে। বাড়ির আঙ্গিনায় বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা বাঙে এই মধু চাষ করা হচ্ছে। উৎপাদিত মধু সংগ্রহ করে বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের ৯শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করি। আর এসব মধু খুচরায় ১২শ থেকে ১৪শ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান মধু চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলী আহমদ বলেন, সদরের কাইচতলী, সুলতানপুর, গেজমনি পাড়া, রোয়াংছড়ির আমতলী তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া, থানচি মরিয়ম পাড়া, আলীকদম নয়া মারমা পাড়া, পান বাজার ত্রিপুরা পাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি দোছড়ি এলাকায় মধু চাষ হচ্ছে। বাড়ির আঙ্গিনায় বা চাষের জমিতে বাঙে মধু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই অঞ্চলে। তবে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মধু চাষিরা কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এম. শাহনেওয়াজ বলেন, মৌ চাষিদের কৃষি বিভাগের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে নিয়মিত। মৌ চাষিদের মূলত উপজেলা পর্যায়ের দপ্তরগুলো থেকে যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হয়। সরকারিভাবে মৌ চাষিদের ঋণ দেয়ার ব্যাপারেও কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবর্তমান মেয়র জহিরুল আ.লীগের একক প্রার্থী
পরবর্তী নিবন্ধস্বামী দাবি করে যুবকের সাথে মহিলার হতাহাতি