পথে পথে বিজয়গাথা

বোধনের মাসব্যাপী আয়োজন

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মহান মুক্তিযুদ্ধ মূলতই জনযুদ্ধ। বাংলাদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এই যুদ্ধ করেছিল বলেই নয় মাসে বিজয় অর্জিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন। সেই চেতনাকে ধারণ করে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে একটি ট্রাককে ভ্রাম্যমাণ মঞ্চে রূপান্তর করে ‘পথে পথে বিজয়গাথা’- শিরোনামে মাসব্যাপী পথ আয়োজনের সূচনা করেছে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম। সকালে নিউমার্কেট মোড়ে এ আয়োজনের সূচনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র। এ সময় তিনি বলেন, স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের শিখা অম্লান রাখতে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। এ সময় স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের অকাতরে আত্মদানের গৌরবগাথা এ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। আয়োজনের শুরুতে কথা ও কবিতায় অনুষ্ঠানের তাৎপর্যতা তুলে ধরেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান। কণ্ঠে কবি সৈয়দ শামসুল হকের নূরুল দিনের সারাজীবন কবিতার নাট্যরূপ তুলে ধরেন নাট্যজন সুচরিত চৌধুরী। আবৃত্তি শিল্পী সঞ্জয় পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ, চট্টগ্রামের সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম চৌধুরী। এরপর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

নগরীর সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে একই মঞ্চে কথামালায় অংশ নেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর হোসাইন কবির, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রণব বল ও মিন্টু চৌধুরী। এ সময় বক্তারা বলেন, বোধন আবৃত্তি পরিষদ আজকের এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেই বিভীষিকাময় সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জ্বীবিত ও সাহস যোগানোর সময়কে মনে করিয়ে দিয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, এখনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও সামপ্রদায়িক অপশক্তি বাঙালির জাতীয়তাবোধে বারবার আঘাত হানছে। তাদের প্রতিহত করতে আজকের তরুণ প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলতে হবে।
এ পর্যায়ে আবৃত্তি করেন ইসমাঈল সোহেল, জসীম উদ্দীন, সেঁউতি মজুমদার, সুনিপুন সেনগুপ্ত। উপস্থিত ছিলেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের সহ সভাপতি সুবর্ণা চৌধুরী, আবৃত্তি শিল্পী বিপ্লব কুমার শীল, মৃন্ময় বিশ্বাস, অনুপম শীল প্রমুখ। পরে নগরীর সিটি গেট ও কর্নেল হাট নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক টুন্টু দাশ বিজয় সেই একাত্তরের অপশক্তির ন্যাক্কারজনক উত্থান রুখে দেওয়ার ইতিহাস তুলে ধরেন। এ পর্বে মুক্তির গান পরিবেশন করেন ঈশা দে, দীপান্বিতা দেবী, পড়শী ধর, উৎপল চন্দ্র নাথ প্রমুখ। এরপর বোধনের আবৃত্তি শিল্পীরা পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে বাংলার বীর সন্তানদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।
দিন শেষে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথা তুলে ধরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক এম নওশের আলী খান, কামরুল হাসান বাদল ও রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে নতুন শনাক্ত ৮
পরবর্তী নিবন্ধদুই কিশোরীর আত্মহত্যা