পকেট কমিটি নয়, তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের পরামর্শ

বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠকে চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

পকেট কমিটি নয়, তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির চট্টগ্রামের নেতারা। একইসঙ্গে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার আগে সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলনে না যাওয়ার পক্ষেও মতামত দিয়েছেন তারা। এছাড়া ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়া এবং অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বিএনপির সমন্বয়হীনতা দূর করার উদ্যোগ নেয়ারও পরামর্শ দেন। বৈঠকে দলের সাংগঠনিক অবস্থাও তুলে ধরা হয়। সারা দেশের সাংগঠনিক চিত্র জানার লক্ষ্যে দ্বিতীয় দফায় তিনদিনের ধারাবাহিক বৈঠক করছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। বৈঠকের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার অংশ নিয়ে চট্টগ্রামের নেতারা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত একটানা ৬ ঘন্টার বেশি সময় এ বৈঠক হয়েছে। এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডন থেকে যোগ দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও।
গতকালকের বৈঠকে চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাভুক্ত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বিভাগ থেকে কেন্দ্রে স্থান পাওয়া নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার ১৪ নেতাও রয়েছেন। তবে অংশ নিয়েছেন মাত্র ৬ জন। জানা গেছে, চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক জেলার মধ্যে নগরের আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান অংশ নেন বৈঠকে। উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদেও আছেন। তিনি এর আগে উপদেষ্টা ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়ায় গতকাল উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপিতে চটগ্রামের ১১ জন নির্বাহী সদস্য পদে আছেন। তাদের মধ্যে মাত্র চারজন গতকাল অংশ নেন। এরা হচ্ছেন সরওয়ার জামাল নিজাম, সুশীল বড়ুয়া, সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ চৌধুরী ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী। এছাড়া একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় আত্মগোপনে আছেন এম শামসুল আলম। বিদেশে আছেন মীর হেলাল। অসুস্থতার জন্য গাজী শাহাজাহন জুয়েল মোস্তফা কামাল পাশা, কামাল উদ্দিন চৌধুরী, উদয় কুসুম বড়ুয়া ও আনোয়ার হোসাইন অংশ নেন নি।
কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, আমরা বলেছি দলকে শক্তিশালী করতে হবে। সংঘটিত করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন দল গোছানো। কমিটি গঠন করতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়। পকেট কমিটি করা যাবে না। সেক্ষেত্রে দলের সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের পরামর্শে যাকে তাকে নেতৃত্বে আনলে হবে না। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই নেতৃত্বে আনতে হবে। অন্যান্য জেলা থেকে যারা বক্তব্য রেখেছেন তাদের কথায়ও একই সুর ছিল। তিনি বলেন, অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বিএনপির সমন্বয় করার বিষয়টিও বলেছি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার কথা হয়েছে। জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান আজাদীকে বলেন, বেশিরভাগই বলেছেন আন্দোলনে যেতে। সেক্ষেত্রে আগে সংগঠন গোছাতে বলেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে যেন কোনো নির্বাচন না হয় তা আন্দোলনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে বলেছি। সবার এককথায় ছিল, আওয়ামী লীগের অধীনে প্রহসনের কোনো নির্বাচন হতে দেয়া যাব না।
প্রসঙ্গত, গত ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ধারাবাহিক বৈঠক হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সারা দেশের সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি-আহ্বায়কদের সাথে মতবিনিময় করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরিটকারী দুই শিক্ষার্থীর ভর্তি বিবেচনা করতে চবিকে নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধমায়ের বুকে থেকেই চিকিৎসা পাবে অসুস্থ শিশু