দেশে ফের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

মে মাসের শুরুতে বৃষ্টির আভাস

| রবিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পারদ চড়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এই মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, টানা দুইদিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে। তবে কালকে (রোববার) সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এ মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল যশোরে, ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খবর বিডিনিউজের। চুয়াডাঙ্গা ও যশোর তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণ কী, এ প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, সবসময়ই এসব এলাকায় তাপমাত্রা বেশি আসে, বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে। কারণ এই এলাকাগুলো ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গের পাশে। ওইসব এলাকায় ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠেছে কালকে, সেটার আঁচ এসেই পড়ে এখানে।

গতকাল রোববার দেশের আবহাওয়া কেমন থাকতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে আবহাওয়াবিদ শাহীনুল বলেন, বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রা বাড়বে, আর তা ৪৩ ডিগ্রির আশেপাশে থাকার কথা। গত বছর ১৭ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এপ্রিল এমনিতেই দেশের উষ্ণতম মাস। চৈত্রের শেষ আর বৈশাখের শুরুতে গরমের তীব্রতায় হাঁসফাঁস করতে হয়।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদের ভাষ্য, গত বছর বাতাসে আর্দ্রতা কম ছিল। এবার আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে মানুষের শরীর ঘামছে, অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। এই সময়ে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। এবার বৃষ্টিপাত কম। কালবৈশাখী এবং বৃষ্টি না থাকার কারণে এবার গরমের তীব্রতা বেশি।

শনিবার সন্ধ্যার বুলেটিনে দেশের ৪২ জেলার উপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার তাপপ্রবাহ আরও বেশি জায়গায় বিস্তার করতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাকি অংশে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে।

বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

এবার বৃষ্টিপাতের প্রবণতা না থাকায় চৈত্র মাসের শেষ সময় থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। চলতি মৌসুমে ৩১ মার্চ থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে মাত্রা বাড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত টানা ২৮ দিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে। এর আগে কোনো বছরই এতো সময় ধরে দাবদাহ চলেনি বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাই হ্রদের মাছ থেকে এক বছরে ১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা শুল্ক আদায়
পরবর্তী নিবন্ধসৈকতে ফোনে কথা বলতে বলতে মৃত্যু