নিখোঁজ ছেলেকে ফেরতের কথা বলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৫ মার্চ, ২০২২ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড এলাকার মোঃ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মাঈনুল ইসলাম ঈমন (২০) নিখোঁজ হয় ২০১৭ সালের ২ আগস্ট।
ছেলে নিখোঁজের ব্যাপারে ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ড থানার একটি জিডি করেন। দীর্ঘদিন ছেলের কোনো সন্ধান না পেয়ে দেলোয়ার
প্রায় দিশেহারা। ছেলেকে ফিরে
পেতে যে যা বলে তিনি তা-ই করেন। যোগাযোগ করলে মোঃ জিয়া নামে এক জ্যোতিষী তাকে জানান, তার ছেলেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বের করে দিতে পারবেন, তবে তার জন্য আগরবাতি, মোমবাতি ইত্যাদি বাবদ ৬৫০ টাকা লাগবে। দেলোয়ার জ্যেতিষীর কথা মতো তাকে বিকাশের মাধ্যমে ৬৫০ টাকা পাঠান। পরবর্তীতে ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ছেলে ফিরে না আসায় পুনরায় জ্যোতিষীকে ফোন করলে তিনি কালক্ষেপণ করতে থাকেন। প্রায় দুই মাস পরে তিনি জানান, এটা অনেক কঠিন কাজ তার বড় ওস্তাদ করতে পারবেন। তখন ছেলেকে পাওয়ার আশায় দেলোয়ার বড় ওস্তাদের ফোন নম্বর চাইলে কথিত জ্যোতিষী তার স্ত্রী জোনাকি আক্তার মুক্তাকে বড় ওস্তাদ পরিচয় দিয়ে মোবাইল নম্বর দেন। দেলোয়ার কথিত বড় জ্যোতিষী জোনাকি আক্তার মুক্তাকে ফোন করলে তিনি জ্যোতিষি জিয়ার ভাই জীবনকে দেলোয়ারের ছেলে সাজিয়ে তার সাথে কথা বলিয়ে দেন। ছেলে হারিয়ে যাওয়ার তিন বছর পর ছেলে পরিচয়দানকারী জীবন দেলোয়ারকে জানায়, তার ছেলে ঢাকায় কামরাঙ্গীরচরে চাকুরি করছে এবং ভালো আছে। দুদিন পর পুনরায় দেলোয়ার কথিত জ্যোতিষী জোনাকি আক্তার মুক্তাকে ফোন দিলে তিনি জানান, তার ছেলের কাছে টাকা নেই তাই বাড়িতে আসতে পারছে না। দেলোয়ার জিজ্ঞেস করেন তার ছেলে কোথায় তখন জানান, সে কাজে গেছে তার নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন। কথা মতো মুক্তার মোবাইলে দেলোয়ার ১৫০০ টাকা বিকাশ করেন। এরপরও ছেলে ফেরত না আসায় আবার ফোন করলে মুক্তা জানান ছেলেকে গাড়িতে তুলে দিয়েছেন। এ ভাবে একেক সময় একেক কথা বলতে থাকেন। অবশেষে র‌্যাব-৭ এর সহায়তা নেন দেলোয়ার।
গত ২৩ মার্চ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি অভিযানিক দল নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন এওজবালিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি মোঃ জিয়া (২৫), পিতা-মৃত জেবের আহমেদ এবং জোনাকি আক্তার মুক্তা (১৯) কে আটক করে। দু’জনই ঘটনার কথা অকপটে স্বীকার করেন।
র‌্যাব-৭ জানায়, প্রতারক চক্র বেদে সমপ্রদায়ের লোক। তারা জায়গা পরিবর্তন করে বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করে। তবে আসামিদের নিকট ভিকটিমের ছেলেকে পাওয়া যায়নি। এই প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাবিজ কবজের দোহাই দিয়ে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিত।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব এবং নিয়মিত মামলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে আবাসিক হোটেলে যুবকের ঝুলন্ত লাশ
পরবর্তী নিবন্ধবাসের ধাক্কায় একজন নিহত, আহত মোট ১১