নারী ফুটবলারদের মানসিক দৃঢ়তা

প্রতিমা দাশ | শনিবার , ১ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টির চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখায় সৃষ্টি এবং কল্যাণে নারী শক্তির জয় গান উঠে এসেছে বারবার।
গত কয়েকদিন ধরে পত্রিকা, ভার্চুয়াল জগত থেকে শুরু করে সারা বাংলাদেশের মানুষের মুখে একটাই নাম, সেটা হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য আমাদের নারী ফুটবল টিম। তাঁদের অবিশ্বাস্য জয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই উচ্ছ্বসিত। যে পাহাড়ের মানুষগুলো দুঃখ দারিদ্রের কথা আমরা কখনও খেয়াল করিনি সে পাহাড়ের মেয়েরাও সামিল হয়েছে ফুটবল নৈপুণ্যের জয়ে। সারা বাংলাদেশ থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হীরকখণ্ড আমাদের জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছে। রাজটিকা তাদেরই প্রাপ্য।
ভাবা যায়, আমাদের দেশের নারী ফুটবল টিম এখন দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন দল এবং প্রতিনিধিত্বে আমাদের নারী-সর্বজয়ারা! এই জয় আগামীদিনের নারী ফুটবলারদের মানসিক দৃঢ়তা কয়েক শ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আর সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নারীদের ছোট করে মূল্যায়ন করা যাবে না। নারী বলে সে ফুটবল খেলতে পারবে না এ ধরনের ফতোয়া এখন আর কেউ জারি করতে পারবে না। প্রত্যেক ঘরে ঘরে একজন নারী ফুটবলার উঠে আসা উচিত। বাবা মায়েদের উচিৎ এখন পুত্র আর কন্যার মধ্যে পার্থক্য না করে ছেলে মেয়ে উভয় সন্তানকে ক্রিকেট, কাবাডি, দাবা ফুটবল খেলায় উৎসাহিত দেওয়া। কি জানি, হয়তো আপনার কন্যা সন্তানের মধ্যেই সাবরিনা, কৃষ্ণার মতো অসাধারণ ফুটবলারদের প্রতিভা লুকিয়ে আছে। শুধু একটা সুযোগ দিন তাদের। তাদের জন্য জানালাটা অবারিত খোলা রাখুন। ঐশ্বরিকভাবে একজনের মধ্যে একটা প্রতিভা থাকে, সে প্রতিভাকে বের করার দায়িত্ব মা বাবা, বিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রের। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়ে কন্যার হাতটি শক্ত করে ধরুন। তার সাথে আলোর পথের যাত্রায় সামিল হোন। আপনি তাদের পাশে থাকলে পৃথিবীর কেউ তাদেরকে নিরুৎসাহিত করতে পারবে না। আপনার উৎসাহে আপনার কন্যার এগিয়ে যাওয়ার পথটি সমৃদ্ধ হবে।
তাই প্রত্যেক বাবা-মার কাছে অনুরোধ কন্যা সন্তানকে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা থেকে শুরু করে সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের উৎসাহ দিয়ে যাবেন। একদিন তারাই আপনার মুখ উজ্জ্বল করবে। পত্রিকায় কন্যার সাথে আপনার ছবিটিও জ্বলজ্বল করবে।
তাই শেষে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের কথায় বলতে হয়, আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো। শিক্ষার পাশাপাশি এখন খেলোয়াড় মাও লাগবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্লভ ঝিনুকের মুক্তা
পরবর্তী নিবন্ধব্যাকুল হয়ে আছে প্রাণ