নতুন আকর্ষণ চার উট পাখি

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ।। যুক্ত হয়েছে এক জোড়া সিংহ, এক জোড়া ইমু, ১০টি ময়ূর ও আটটি ম্যাকাউ

চকরিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক বনাঞ্চল নিয়ে দেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রথমবারের মতো আনা হয়েছে আফ্রিকান প্রজাতির চারটি উটপাখি। একইসাথে নতুন অতিথি হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও একঝাঁক পশু-পাখি।

চলতি পর্যটন মৌসুমে দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করতে পার্কটিতে আনা হয়েছে এসব নতুন অতিথি। চার উট পাখি ছাড়াও তদ্মধ্যে রয়েছে বিপরীত লিঙ্গের এক জোড়া সিংহ, এক জোড়া ইমু পাখি, ১০টি ময়ুর ও আটটি ম্যাকাউ। তবে পার্কে আগতদের বেশি আনন্দ দেবে প্রথমবারের মতো আনা উটপাখিগুলো। পার্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই উটপাখির জন্য কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

এদিকে সাফারি পার্কটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে একেবারে নতুন রূপে। আন্তর্জাতিক সাফারির মতো রূপ দিতে পার্কে ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ‘উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের ৩১টি গুচ্ছের (প্যাকেজ) উন্নয়ন কাজ। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় দুই বছর আগে শুরু হওয়া এসব প্রকল্পের কাজ ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। আর এরইমধ্যে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। শীতের শুরু থেকে পার্কে আসতে শুরু করেছে দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা। তারা এই পার্ককে নতুন রূপে দেখে বেশ বিমোহিতও হচ্ছেন।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে জানান, পার্কে আরো দেশি-বিদেশি বন্যপ্রাণী আনার জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

তবে অতি সম্প্রতি পার্কে আনা হয়েছে বিপরীত লিঙ্গের দুটি সিংহ, চারটি উটপাখি, বিপরীত লিঙ্গের দুটি ইমু পাখি, ১০টি ময়ুর ও ৮টি ম্যাকাউ। নতুন এসব অতিথি পার্কে আনার পর কয়েকদিন বন্যপ্রাণী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে স্ব স্ব বেষ্টনীতে এসব প্রাণীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ জুলকার নাইন জানান, পার্কে আনা নতুন প্রাণীগুলো বেশ সুস্থ ও সবল রয়েছে। পার্কের অন্যান্য বন্যপ্রাণী ও পশু-পাখির মতোই নিয়ম করে নতুন অতিথিদেরও সেবা-শ্মশ্রুষা করা হচ্ছে।

চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রথম প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশগত সংরক্ষিত বনভূমিতে গড়ে তোলা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটিকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরের কাজ মাস্টার প্লানের আওতায় সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে আগামীতে এই পার্কটি প্রকৃত সাফারিতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। পর্যটক-দর্শনার্থী থাকবে বেষ্টনীর ভেতর আর বন্যপ্রাণীগুলো নির্দিষ্ট বিশাল বেষ্টনীর মধ্যে উন্মুক্তভাবে বিচরণ করবে।

ডিএফও রফিকুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, এখনো অনেক প্রাণীর অভাব রয়েছে এই পার্কে। ইতোপূর্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরিত চাহিদার বিপরীতে নতুন করে উপরোক্ত বন্যপ্রাণীগুলো পার্কে প্রেরণ করা হয়েছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে। ভবিষ্যতেও নতুন নতুন বন্যপ্রাণীর সমাহার ঘটানো হবে এই পার্কে। যাতে দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীরা আনন্দ-বিনোদনে মাতিয়ে থাকতে পারেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোর থেকে অপেক্ষা, দীর্ঘ লাইন
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় দুই ভাই খুনের ঘটনায় দুই ভাই গ্রেপ্তার