নগদে তেল কিনছে বিমান

বিপিসির বকেয়া ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা, পরিশোধ করেছে ২০ কোটি নগদে কেনায় চুক্তি, ভঙ্গ করলে সরবরাহ বন্ধ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৮ মে, ২০২২ at ৭:৩০ পূর্বাহ্ণ

দিনের টাকা দিনে পরিশোধ করে জ্বালানি তেল কিনতে হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে। বকেয়া টাকার অংক বড় হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) সাথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নগদে তেল কেনার ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে। চুক্তি ভঙ্গ করলে পদ্মা অয়েল কোম্পানি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।

রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বেড়েছে। এতে করে জ্বালানি তেল বিক্রিতে প্রতিদিন লোকসান দিচ্ছে বিপিসি। এর মাঝে গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই ফ্লাইট অপারেটরের কাছে বিপিসির বকেয়া পাওনার পরিমাণ ২ হাজার ১০৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। বকেয়া পরিশোধে বারবার তাগাদার প্রেক্ষিতে বিমান মাত্র ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিপিসির মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিপিসি বেশ কিছুদিন ধরে বেশি দামে কেনা জ্বালানি তেল কম দামে বিক্রি করছে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি প্রতিদিন ৬০ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিচ্ছে। এই পরিস্থিতির মাঝে বিপিসির জন্য বড় সংকট সৃষ্টি করছে বাংলাদেশ বিমান। বিমানের জ্বালানি তেলের প্রায় পুরোটা যোগান দেয় বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি। তেল বিক্রি হয় বকেয়ায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সপ্তাহে গড়ে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার জেট ফুয়েল সরবরাহ করে। ফ্লাইট অপারেশন বাড়লে কিংবা কমলে এই হিসেবে কমবেশি হয়। তবে ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পদ্মা অয়েল কোম্পানি বিমানের কাছে ২ হাজার ১০৮ কোটি ২০ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। এই টাকা পরিশোধের জন্য বারবার তাগাদা দেয়া হলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স টাকা পরিশোধ করেনি। বেশ কয়েকবার তাগাদা দেয়ার পর সম্প্রতি ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। বিপিসির পক্ষ থেকে পুরো পরিস্থিতি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়। পরে বিমানকে বকেয়ার পরিমাণ আর না বাড়াতে নগদে জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। অর্থাৎ যতটুকু জ্বালানি তেল নেয়া হবে প্রতিদিন কিংবা প্রতি সপ্তাহে সেই টাকা পরিশোধ করতে হবে। এর হেরফের হলে বিমানে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হবে। অপরদিকে আটকে পড়া ২ হাজার ১০৮ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য আল্টিমেটাম দেয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধ না করলে অ্যাকশনে যাবে বিপিসি।

এ বিষয়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, আমাদের সাথে একটি চুক্তি করা হয়েছে। এখন যা তেল নেয়া হবে তার মূল্য পরিশোধ করে দিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেব।

বিমানের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুটিই সরকারি সংস্থা। উভয়ের জন্য কল্যাণকার কোনো পথ নিশ্চয় বের করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী নদী ও খালের সংযোগস্থলে স্টিলের ট্র্যাপ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ
পরবর্তী নিবন্ধচারজনের ১৪ বছর করে একজনের ৫ বছর দণ্ড