দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্তকারীদের সম্পর্কে সচেতন হওয়ার তাগিদ

| বুধবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্তকারীদের সম্পর্কে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাঁর সরকার দেশব্যাপী একটি শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেলেও দেশে একটি শ্রেণি রয়েছে, তারা এই উন্নয়ন দেখে না বরং নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই সেতুর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। এর মাঝেই কিছু কিছু ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটছে, ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনো হচ্ছে সেটা আপনারা নিজেরাও টের পান। যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। সেইসাথে প্রচারও চালানো হয়। আমরা যতই উন্নতি করি, ভাল কাজ করি একটা শ্রেণি আছে বাংলাদেশের বদনাম করতে তারা ব্যস্ত।
বিশেষজ্ঞদের আশংকা, একটি মহল দেশ বিরোধী নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখতে পায় না। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে বাধাগ্রস্ত হয় তার জন্য তারা একের পর এক নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রগতিশীল প্রতিটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. শামসুল আলম তাঁর এক লেখায় বলেছেন, বাংলাদেশ নামের সাথে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র তকমা তামাদি হয়েছে বহুকাল। ‘উন্নয়নের নিরীক্ষা ক্ষেত্র’ অভিধাটিও আজ অচল। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে হতবুদ্ধি তাত্ত্বিকেরা এর একটা গালভরা নাম দিয়েছে ‘উন্নয়নের ধাঁধা’। প্রচলিত উন্নয়ন ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উন্নয়নের রহস্য তাত্ত্বিকদের এটা ব্যাখ্যাতীত হলেও এদেশের আম জনতার অজানা নয়। তারা জানে বাংলাদেশের উন্নয়নের কাণ্ডারি কে, যাকে ভালোবেসে আস্থায় নিয়ে ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে বারবার। তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের উন্নয়নের মহাসড়কে- সে পথ ধরে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল- আর বাংলাদেশের এ রূপান্তরের রূপকার শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় আপন মহিমায় স্থান করে নেওয়া একজন সফল বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়ক। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক নানান ইস্যুতে তার বিচক্ষণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। আশা জাগিয়েছে বাংলাদেশ একদিন তার হাত ধরে উন্নয়নের সকল ধাপ অতিক্রম করে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে এক কাতারে শামিল হবে। সেটিও বেশি দূর নয়, এখন থেকে মাত্র দুই দশকের প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সমৃদ্ধিশালী দেশ।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকদের জন্য শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন একজন অনুসরণীয় নেতৃত্ব। তিনি দেশ-বিদেশের নেতাদের কাছে হয়ে গেছেন আস্থা ও ভরসাস্থল। তার একাগ্রতা, দৃঢ়তা ও চিন্তাশীল নেতৃত্ব দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা সমুজ্জ্বল হয়েছে। এমনকি করোনা মোকাবিলায় শক্তিধর দেশগুলো হিমশিম খেলেও শক্ত হাতে শেখ হাসিনা অদৃশ্য ভাইরাস সামাল দিচ্ছেন। অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনো আক্রান্ত ও মৃতের হার কম। করোনায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেই রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এবং খাদ্য উৎপাদনে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। বলা যায়, ‘শেখ হাসিনা সরকারের’ নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
সেই অনুসরণীয় দেশে যদি সহিংস ঘটনা ঘটে, তা হবে দুঃখজনক। দুর্গোৎসবের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মকে ব্যবহার করে যারা সহিংসতা সৃষ্টি করছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যেখানে যেখানে যারাই এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাবে সঙ্গে সঙ্গে তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমরা অতীতেও করেছি, ভবিষ্যতে আমরা করতে পারব এবং যথাযথ শাস্তি তাদের দিতে হবে। এমন শাস্তি- ‘যেন ভবিষ্যতে আর কেউ সাহস না পায়, সেটাই আমরা চাই।’ কাজেই সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা দিতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু বিভাজন কোনোভাবে কাম্য নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে