দুদিনে আট নাবিকসহ ৯ লাশ উদ্ধার

জাহাজ দুর্ঘটনায় এখনো নিখোঁজ ৪ জন

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২২ at ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ

দুটি জাহাজ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ ১৩ জনের মধ্যে দুদিনে আট নাবিকসহ ৯ জনের লাশ উদ্ধার হলো চট্টগ্রামে। নিখোঁজ রয়েছেন আরো ৪ জন। কর্ণফুলী নদী এবং বন্দরের বহির্নোঙরে সংঘটিত দুইটি ঘটনায় লাশের এই মিছিল নামে সাগর ও নদীতে।
সূত্র জানায়, গত বুধবার বন্দরের বহির্নোঙরে দুটি লাইটারেজ জাহাজের সংঘর্ষ হয়। এতে ‘এমভি সুলতান সানজা’ নামের একটি জাহাজ ডুবে যায়। জাহাজটির ৯ নাবিকের মধ্যে ৩ জন জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ ছিলেন ৬ জন। এদের মধ্যে বহির্নোঙর থেকে গতকাল সকালে প্রথমে ২ জন, পরবর্তীতে গতকাল বিকেলে পতেঙ্গা এলাকা থেকে ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন, সুরুজ মিয়া (২২), নাজমুল হোসাইন (২৮) এবং জাহেদুল ইসলাম (৩০)। বিকেল পাঁচটার দিকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা থেকে মো. মনির হোসেন (২০) নামে আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কুমিরায় স্থানীয় জেলেরা ভাসমান লাশটি দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এর আগের দিন কোস্ট গার্ড এবং নৌ পুলিশ উদ্ধার করে একটি ফিশিং জাহাজের ক্যাপ্টন এবং ৩ নাবিকসহ ৫ জনের মরদেহ।
কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম জোনাল সদর দপ্তরের (পূর্ব জোন) স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার এম আশফাক বিন ইদ্রিস বলেন, বুধবার বিকেলে বহির্নোঙরে দুটি লাইটার জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এমভি সুলতান সানজা নামের একটি জাহাজ ডুবে যায়। জাহাজটিতে থাকা ৯ নাবিকের মধ্যে ৩ জন সাঁতরে অন্য জাহাজে উঠলেও বাকি ৬ জন নিখোঁজ ছিলেন। আজ (শুক্রবার) ওই ৬ জনের মধ্যে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়। দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধারকৃতদের লাশ পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকরাম হোসেন জানান।
লে. কমান্ডার এম আশফাক বিন ইদ্রিস জানান, নিখোঁজদের সন্ধানে কোস্টগার্ডের ডুবুরিরা অভিযান চালাচ্ছেন। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে কর্ণফুলী নদীর ইছানগর সি-রিসোর্স ডকইয়ার্ড ঘাট এলাকায় ‘এমভি মাগফেরাত’ নামের একটি ফিশিং ভ্যাসেল ডকে তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ডুবে যায়। ওই জাহাজে থাকা ২০ জনের মধ্যে ১৩ জন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও কেবিনে থাকা ৭ জন নিখোঁজ হন। ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষের অভিযানে ৫জনের মরদেহ উদ্ধার হয় বৃহস্পতিবার। বাকি দুজনের কোন হদিশ মিলেনি। তবে গতকাল এফভি মাগফেরাত জাহাজটিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে কর্ণফুলী ব্রিজের পাশে মন্দিরঘাটে নিয়ে রাখা হয়েছে। পলির কারণে জাহাজটির ভিতরে ডুবুরি প্রবেশ করতে পারছে না। জোয়ারের পানিতে পলি সরে গেলে ডুবুরি ঢুকে জাহাজটির ভিতরে কোনো মরদেহ আটকে আছে কিনা অনুসন্ধান করবে বলেও নৌ পুলিশ জানিয়েছে। দুই জাহাজের নিখোঁজ ৪ নাবিকের হদিশ করতে কোস্টগার্ড এবং নৌ পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধসকালে একজন নিখোঁজ, বিকালে ভেসে এল লাশ