দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন

আজাদী অনলাইন | রবিবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ২:২০ অপরাহ্ণ

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অপসারণের আদেশ পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে প্রত্যাহার করে চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সদ্য চাকরিচ্যুত সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। আজ রোববার দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর এই আবেদন করেন তিনি।

আবেদনে তিনি বলেন, ‘আমি দুর্নীতি দমন কমিশনে বিগত ১২.১০.২০১৪ হতে ১৬.০২.২০২২ খ্রি. তারিখ পর্যন্ত কমিশনে সততা, বিশ্বস্ততা, অধ্যবসায় ও সর্বোচ্চ ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময়ে আমি আমার সর্বোচ্চ দক্ষতার সহিত সত্তরেরও (৭০) বেশি গুরুত্বপূর্ণ মামলা সুপারিশ/রুজু/সিএস দাখিল করে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মামলাগুলো হলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও এনআইডি প্রদান (২০টি মামলা), কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা, পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ রেলওয়ের ৮৬৩ জন খালাসী নিয়োগের দুর্নীতির মামলা ও সম্পদের অনুসন্ধান, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল করিম ও মো: আমিনের বিরুদ্ধে মামলা, স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মামলা, কেজিডিসিএল এর শিল্প গ্রাহক আবুল খায়ের গ্রুপ, ক্রাউন স্টিল, বায়েজিদ স্টীলস লিমিটেড, ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড, আর,এফ বিল্ডার্স সহ বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু ও সুপারিশ করেছি। ময়মনসিংহ সজেকায় কর্মকালীন ভালুকা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্তৃক সরকারি সম্পদ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের দায়ে মামলা রুজু পূর্বক দুই জনকে গ্রেপ্তার, ভূমি অফিসের নাজিরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তারসহ আরো অনেক প্রশংসনীয় কাজ করেছি।’

তিনি আরও লিখেন, ‘এছাড়াও চট্টগ্রাম-২ এ কর্মরত থাকাকালীন আমার নিকট প্রায় ৭০টি অভিযোগের অনুসন্ধান ও ৪২টি মামলার তদন্তভার ছিল। এর বাহিরেও প্রধান কার্যালয়ের রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট প্রদান বিষয়ক ৬টি অভিযোগের অনুসন্ধান টিমের সদস্য, মাহিনী ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড অভিযোগের অনুসন্ধানকারী টিমের সদস্য, ১৫৭ প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাঁকখালী নদী দখল, চট্টগ্রাম এল, এ শাখার দুর্নীতির বিপরীতে মামলা করার সুপারিশ, মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান, মহেশখালীর ২৭ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান টিমের সদস্য হিসেবে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেছি।’

আবেদনে শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতি ও তদসংশ্লিষ্ট অনিয়মকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে স্বপরিবারে বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। তথাপি আমি ও আমার পরিবারের আর্থিক, সামাজিক ও জানমালের নিরাপত্তার দিকগুলো ন্যূনতম বিবেচনায় না নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (চাকরী) বিধিমালা-২০০৮ এর ৫৪ (২) বিধি মোতাবেক বিগত ১৬.০২.২০২২ খ্রি. তারিখ কোনরূপ কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান না করে আচমকাই আমাকে অপসারণ করা হয়।’

আবেদনে তিনি বলেন, তাকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিকভাবে করা হয়েছে। এই আদেশটি প্রদানের পূর্বে তাকে কোনরূপ কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়নি যা কিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৫ (২) অনুচ্ছেদ এবং মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।

তাই শরীফ উদ্দিন যৌক্তিক, আইনানুগ ও মানবিক কারণসমূহ বিবেচনায করে দুর্নীতি দমন কমিশন (চাকুরী) বিধিমালা ২০০৮ এর ৪৮ বিধি মোতাবেক বিগত ১৬/০২/২০২২ খ্রি. তারিখের চাকরী থেকে অপসারনের আদেশ পুননিরীক্ষনের মাধ্যমে প্রত্যাহারপূর্বক চাকরীতে ধারাবাহিকতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ পুনর্বহালের জন্য আবেদন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউক্রেনে ৬৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত : জাতিসংঘ
পরবর্তী নিবন্ধশাটলের দাবিতে চবির প্রধান ফটকে তালা