তিন প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার করতে পারছেন না প্রকল্প পরিচালক

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

নিয়ম হচ্ছে, উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে কেনা গাড়ি সংশ্লিষ্ট কাজে যাতায়াতের সুবিধার্থে ব্যবহার করবেন প্রকল্প পরিচালক। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এমন চিত্র দেখা গেলেও ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। সংস্থাটিতে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পের বিপরীতে কেনা দামি গাড়ি প্রকল্প পরিচালককে ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। বরং তা ব্যবহার করেন পদস্থ কর্মকর্তারা।
দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও চুপ থাকতে দেখা গেছে প্রকল্প পরিচালকদের। তবে এবার প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে গাড়ি বুঝিয়ে দিতে সিটি মেয়রকে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন এক নির্বাহী প্রকৌশলী। মো. ফরহাদুল আলম নামে এ প্রকৌশলী ‘বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ প্রকল্পের পরিচালক। বারইপাড়া প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় ৫৯ লাখ টাকায় কেনা ডাবল পিকাপ ব্যবহার করছেন চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নতুন খাল খনন প্রকল্পটি ছাড়াও আরো দুইটি প্রকল্পের গাড়িও সিনিয়র কর্মকর্তারা ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রকল্পের বিপরীতে কেনা গাড়ি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ব্রিজ সমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সড়ক আলোকায়ন’ প্রকল্পের বিপরীতে কেনা গাড়ি ব্যবহার করছেন প্রধান প্রকৌশলী। এছাড়া যান্ত্রিক বিভাগের আরেকটি প্রকল্পের বিপরীতে কেনা গাড়ি একই বিভাগের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ব্যবহার করছেন। অবশ্য যান্ত্রিক বিভাগের প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং প্রকল্প পরিচালকও চসিক থেকে অবসর নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে মেয়রকে দেয়া চিঠিতে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরহাদুল আলম লিখেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের একটি মামলার (এল.এ) জমি জেলা প্রশাসন কর্তৃক সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ চলমান আছে। প্রকল্প কাজ পরিদর্শন ও তদারকির স্বার্থে প্রকল্প কাজের জন্য ক্রয়কৃত চট্টমেট্টো-ঠ-১১-০৪৮৭ গাড়িটি প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে যান্ত্রিক উপ-বিভাগ থেকে ফেরত প্রদান করে প্রকল্পের কাজের গতি বৃদ্ধি ও সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের অনুরোধ করা হয়।
জানা গেছে, ডাবল পিকাপটি কেনা হয়েছে ৫৮ লাখ ৮২ হাজার টাকায়। এছাড়া ৯ লাখ টাকায় ৫টি মোটরসাইকেল, এক কোটি ৮৩ লাখ টাকা একটি লং বোম স্কেভেটর ও এক কোটি ৪২ লাখ টাকায় ৫টি ড্রাম ট্রাক কেনা হয়েছে প্রকল্পের আওতায়। বর্তমানে লং বোম স্কেভেটর চসিকের টিজিতে এবং ড্রাম ট্রাক ময়লা-আর্বজনা পরিবহনে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে খাল খনন কাজ পুরোপুরি শুরু হলে ড্রাম ট্রাক ও লং বোম স্কেভেটর সেখানে ব্যবহার করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরহদুল আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। একটি এলএ মামলার বিপরীতে জেলা প্রশাসন জায়গা বুঝিয়ে দিয়েছে। সেখানে কাজ শুরু করেছি। প্রকল্পের বিপরীতে কেনা গাড়ি বুঝে পাইনি। বিষয়টি মেয়র মহোদয়কে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, এতদিন তো প্রকল্প বন্ধ ছিল। সেজন্য হয়তো অন্য কেউ ব্যবহার করছেন। এখন যেহেতু কাজ শুরু হয়েছে গাড়ি বুঝিয়ে দেয়া হবে। অন্যান্য প্রকল্পের গাড়ি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে আমাদের হচ্ছে টানাটানির সংসার। বারইপাড়া প্রকল্প সম্পর্কে মেয়র বলেন, পুরো ভূমি কখন বুঝিয়ে দিবে তার জন্য অপেক্ষা না করে যতটুক পেয়েছে সেখানে কাজ শুরু করে দিতে বলেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশার গার্মেন্টসের পরিচালকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পরবর্তী নিবন্ধমুহিবুল্লাহ হত্যা দুই রোহিঙ্গা তিন