ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে গিয়ে বেধড়ক পিটুনির শিকার ছাত্রদল

| বুধবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

সংগঠনের নতুন কমিটি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের কাছে নীলক্ষেত মোড়ে তারা মারধরের শিকার হন। হামলায় অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে জানিয়ে ছাত্রদলের নেতারা বলছেন, ছাত্রলীগ সংগঠিতভাবে এই হামলা চালিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সেখানে আগে থেকে মহড়া দিতে দেখার কথা জানিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তারা হামলার শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলছেন, আসলে কী ঘটেছে, তা তারা খতিয়ে দেখবেন। হামলায় আহতরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আমিনুল, মো. মাসুম বিল্লাহ, ফারহান মো. আরিফুর রহমান, মো. নাছির উদ্দীন শাওন, মো. রাজু আহমেদ, সুপ্রিয় দাশ শান্ত, নাজমুস সাকিব, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুন্সি সোহাগ, প্রচার সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জসিম খান, বিজয় একাত্তর হলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সাইফ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকিব জাভেদ রাফি, কবি জসিমউদ্দিন হল ছাত্রদলের কর্মী জোসেফ আল জুবায়ের। ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার পাশাপাশি সমপ্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটিও ঘোষণা করা হয়। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতারা মঙ্গলবার বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এরপর একই সময়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা সমাধানে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে সংগঠনটির ৩০ থেকে ৩৫ নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে ঢুকতে গিয়ে বাধা পান। তারা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্রের তোরণের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করলে স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের এক কর্মী মিছিলের সামনে দাঁড়িয়ে তর্কতর্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে উপাচার্যের জন্য ছাত্রদলের আনা ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলেন ওই কর্মী। পরে এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা ও স্টাম্প দিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পেটাতে শুরু করেন। আরেকটি অংশ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর নীলক্ষেত মোড়ে আসেন কবি জসীম উদদীন হল শাখা ছাত্রলীগ এবং বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে এফ রহমান হলের নেতাকর্মীরাসহ মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। সেখানে ছাত্রদলবিরোধী স্লোগান দেওয়ার পর তারা ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা বিষয়টি গণমাধ্যম মারফত জেনেছি। কী ঘটেছিল, এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকানাডায় পাড়ি জমালেন মুহিবুল্লাহর পরিবারের আরও ১৪ জন
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত কলেজ ছাত্রের মৃত্যু