ডিসেম্বরে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন

বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত ।। দলীয় শৃঙ্খলা মানতে হুঁশিয়ারি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আগামী ১২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যখন যে ওয়ার্ডে ইউনিট সম্মেলন শেষ হবে, সেই ওয়ার্ডে-ওয়ার্ড সম্মেলনও হয়ে যাবে। ওয়ার্ড সম্মেলন শেষে থানা সম্মেলনও হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি থাকবে। কেন্দ্র নির্দেশ দিলে ডিসেম্বরের যে কোনো সময় সম্মেলন করতে প্রস্তুত মহানগর আওয়ামী লীগ।
গতকাল সকাল থেকে দিনব্যাপী থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ক্ষেত্রে-যারাই নতুন সদস্য হবেন প্রত্যেককে মহানগর আওয়ামী লীগ কর্তৃক তৈরিকৃত ‘তথ্য ফরম’ পূরণ করেই সদস্য হতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সদস্য ফরমের সাথে-নতুন এই তথ্য ফরমটিও দেয়া হবে। নতুন এই তথ্য ফরমটি সদস্য-যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সারাদেশের মডেল হতে পারে বলেও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা অভিমত প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন।
সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এম.পি বলেন, অন্যান্য জেলার চাইতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। আমার অভিজ্ঞতায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ স্থানীয় নেতৃত্বকে বেগবান করে যে পর্যায়ে এসেছে তা নেত্রীর আস্থার স্থল। সামনে জাতীয় নির্বাচন আসছে। এক্ষেত্রে তৃণমূলকে আরো শক্তিশালী হতে হবে। বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগ নব উদ্যমে নতুন ফরমের মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহের যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তাতে তৃণমূলে পরিচ্ছন্ন এবং ত্যাগী কর্মীরা সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদেরকে চলতে হবে। এর বাইরে প্রথম শর্ত দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা দলীয় পদ পদবী নিয়ে যারা আছি তাদেরকে স্বীয় দায়িত্ব পালনে আরো সচেষ্ট হতে হবে এবং অনুপ্রবেশকারীরা দলে যেন ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ১নং ওয়ার্ডের আবদুল মান্নান চৌধুরী, ২নং ওয়ার্ডের ফরিদ আহমদ চৌধুরী, ৩নং ওয়ার্ডের আবদুস শুক্কুর ফারুকী, ৪নং ওয়ার্ডের এড. আইয়ুব খান, ৫নং ওয়ার্ডের খালেদ হোসেন মাশুক, ৬নং ওয়ার্ডের শামসুল আলম, ৭নং ওয়ার্ডের আবদুর রহিম, ৮ নং ওয়ার্ডের শেখ সরওয়ার্দী, ৯নং নং ওয়ার্ডের সরওয়ার মোরশেদ কচি, ১০নং ওয়ার্ডের ইকবাল চৌধুরী, ১১ নং ওয়ার্ডের আসলাম সওদাগর, ১২ নং ওয়ার্ডের নুরুল আমিন কালু, ১৩ নং ওয়ার্ডের কায়সার মালিক, ১৪ নং ওয়ার্ডের দিদারুল আলম মাসুম, ১৫ নং ওয়ার্ডের আবুল বশর, ১৬ নং ওয়ার্ডের মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, ১৭ নং ওয়ার্ডের আলী নেওয়াজ, ১৮ নং ওয়ার্ডের আহমেদ ইলিয়াছ, ১৯ নং ওয়ার্ডের ইফতেখারুল আলম জাহেদ, ২০ নং ওয়ার্ডের আবু তৈয়ব ছিদ্দিকী, ২১ নং ওয়ার্ডের মিথুন বড়ুয়া, ২৩ নং ওয়ার্ডের এম এ হান্নান, ২৪নং ওয়ার্ডের সৈয়দ মো: জাকারিয়া, ২৫ নং ওয়ার্ডের আবুল কাশেম, ২৬নং ওয়ার্ডের নাজিমুল ইসলাম মজুমদার, ২ নং ওয়ার্ডের আবদুল্লাহ আল ইব্রাহিম, ২৮নং ওয়ার্ডের সেলিম রেজা, ২৯নং ওয়ার্ডের আলী বঙ, ৩০নং ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন ইবনে আহমেদ, ৩২ নং ওয়ার্ডের ইকবাল হাসান, ৩৩নং ওয়ার্ডের স্বপন কুমার মজুমদার, ৩৪ নং ওয়ার্ডের আশফাক আহমেদ, ৩৫নং ওয়ার্ডের নুরুল আমিন শান্তি, ৩৬ নং ওয়ার্ডের ইসকান্দর মিয়া, ৩৭ নং ওয়ার্ডের আবদুল মান্নান, ৩৮ নং ওয়ার্ডের মো: হাসান, ৩৯ নং ওয়ার্ডের সুলতান নাছির উদ্দিন, ৪০নং ওয়ার্ডের আবদুল বারেক, ৪১নং ওয়ার্ডের ছালেহ আহমদ চৌধুরী, ৪২নং ওয়ার্ডের সৈয়দ আমিনুল হক, ৪৩নং ওয়ার্ডের আবদুল মালেক প্রমুখ।
এছাড়া বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. সুনীল কুমার সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, বদিউল আলম, আবদুচ ছালাম, উপদেষ্টা শফর আলী, শেখ মাহমুদ ইছহাক, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, মো: হোসেন, জহুর আহমেদ, জোবাইরা নার্গিস খান, জালাল উদ্দিন ইকবাল, মাহবুবুল হক মিয়া, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, আবু তাহের, শহিদুল আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য এম এ জাফর, পেয়ার মোহাম্মদ, দোস্ত মোহাম্মদ, গাজী শফিউল আজিম, এড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, কামরুল হাসান ভুলু, ইঞ্জিঃ বিজয় কিষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মহব্বত আলী খান, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, অমল মিত্র, আবদুল লতিফ টিপু, ড. নেছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, বেলাল আহমেদ, মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের ফিরোজ আহমেদ,্ব ফয়েজ আহমেদ, মনিরুল হক, ছিদ্দিক আলম, মো: খলিলুর রহমান, হারুন অর রশিদ, মো: আবু তাহের, সুলতান আহমদ চৌধুরী, এম এ হালিম, এ এস এম ইসলাম, রেজাউল করিম কায়সার, মো: ইলিয়াছ, মো: ইছহাক, মো: মঈনুদ্দিন, মো: সালাউদ্দিন প্রমুখ।
বর্ধিত সভায় ৪৩টি সাংগঠনিক এবং ১৫টি থানার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কগণ উপস্থিত ছিলেন। সভার প্রারম্ভে করোনায় মহানগর আওয়ামী লীগের যে সকল নেতাকর্মী প্রয়াত হয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ।
সভায় আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সাবেক মন্ত্রী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম এ মান্নান, ও ২২ সেপ্টেম্বর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা কাজী ইনামুল হক দানুর মৃত্যুবার্ষিকী এবং ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও ৩ অক্টোবর প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত চৌধুরী এন জি মাহমুদ কামালের মৃত্যুবার্ষিকী পালনে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
বর্ধিত সভায় তৃণমূলের নেতারা যা বললেন : বর্ধিত সভায় তৃণমূলের (ওয়ার্ডে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) নেতারা সবাই ইউনিট-ওয়ার্ড-থানা ও মহানগরের সম্মেলনের পক্ষে কথা বলেছেন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি করার পক্ষে কথা বলেছেন।
নগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য জননেতা এম এ আজিজের সন্তান সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার আজাদীকে জানান, আজকের সভায় (গতকাল রবিবার) সিদ্ধান্ত হয়েছে-অক্টোবর থেকে ইউনিট সম্মেলন শুরু হবে। ১৫ দিনের মধ্যে ইউনিট সম্মেলন শেষ করতে হবে। এরপর ওয়ার্ড সম্মেলন এবং থানা সম্মেলন এগুলো নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর ডিসেম্বরে কেন্দ্রের সাথে আলাপ-আলোচনা করে মহানগর সম্মেলন করা হবে। ডিসেম্বরে অবশ্যই সম্মেলন হবে। এবার কথার-কথা নয়।
এদিকে ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদার বাড়ি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আলী বঙ বলেন, সভায় আমি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সদস্য হতে আসবেন; তাদের বিষয়ে কি করবো তা জানতে চেয়েছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে, যুবলীগ-ছাত্রলীগ থেকে যারা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে আসবেন-তাদেরকে স্ব স্ব পদ থেকে (যুবলীগ-ছাত্রলীগ) পদত্যাগ করে আসতে হবে।
২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মিথুন বড়ুয়া জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী অক্টোবরের ১২ তারিখ থেকে ধারাবাহিক ভাবে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে সদস্য সংগ্রহ অভিযানও চলবে। ডিসেম্বরে মহানগরের সম্মেলন করার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। নতুন সদস্য করার ক্ষেত্রে যাতে স্বাধীনতা বিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের কেউ সদস্য হতে না পারে এজন্য প্রত্যেককে মহানগর আওয়ামী লীগ কর্তৃক তৈরিকৃত একটি ‘তথ্য ফরম’ পূরণ করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপরীর পাহাড় সংক্রান্ত সব বিষয় সরকারই দেখছে, আমার কোনো বক্তব্য নেই : ডিসি
পরবর্তী নিবন্ধখালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ল আরও ছয় মাস