ডিসেম্বরে উন্মুক্ত হচ্ছে বাকলিয়া এক্সেস রোড

রক্ষা পেল ‘বিতর্কিত’ সেই ১০ তলা ভবন সিডিএ’র নতুন এ্যালাইনমেন্ট অনুমোদন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩০ মে, ২০২২ at ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

 

 

অবশেষে অনুমোদন মিলেছে বাকলিয়া এক্সেস রোডের নতুন এ্যালাইনমেন্ট। ‘বিতর্কিত’ সেই ১০তলা ভবনের জন্য গত চার বছরেরও বেশি আটকে থাকা প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন মিলেছে। নতুন এ্যালাইনমেন্টে ভবনটিকে অক্ষত রেখে বিকল্প সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে একশ’ মিটার জায়গার জন্য আটকে থাকা বাকলিয়া এক্সেস রোড যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

সূত্র জানিয়েছে, নগরীর চন্দনপুরা থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত ১৬শ মিটার দীর্ঘ বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। নগরীর নবাব সিরাজুদ্দৌলাহ রোড থেকে বাকলিয়া থানা পর্যন্ত (বহদ্দারহাট শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক) সড়কটি ৬০ ফুট প্রস্থ করে নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়কটি সিরাজুদ্দৌলা রোডের চন্দনপুরা মসজিদের বিপরীত পাশে আয়েশা খাতুন লেন (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের বাড়ির পাশ দিয়ে) দিয়ে আড়াআড়িভাবে গিয়ে চাক্তাই খাল পার হয়ে ডিসি রোড থেকে উত্তরপশ্চিম কোণে বেঁকে বগার বিল, সৈয়দশাহ রোড অতিক্রম করে বাকলিয়া থানার পাশে গিয়ে শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কে যুক্ত হয়েছে। ২০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের নভেম্বরে। বাকলিয়া থানার কাছ থেকে শুরু হওয়া দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাকলিয়া ডিসি রোডে মৌসুমী আবাসিক এলাকায় সিডিএ’র অনুমোদন নিয়ে গড়ে ওঠা ১০ তলা একটি ভবনের কারণে নির্ধারিত সময়ে এটির কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। রাস্তার এ্যালাইনমেন্টের উপর গড়ে ওঠা দশ তলা ভবনটি ভাঙতে সিডিএকে ১১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আবার ভবন ভাঙার জন্য খরচ করতে হবে অন্তত চার কোটি টাকা। প্রায় ১৫ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছিল সিডিএ। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সুপারিশে গঠন করা হয় একটি টেকনিক্যাল কমিটি। টেকনিক্যাল রিপোর্টের ভিত্তিতে ভবনটি না ভেঙে রাস্তার নকশা পাল্টানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে করে ভবনটি রক্ষা পাওয়া ছাড়াও সিডিএর খরচও সাশ্রয় হবে।

হাজী চাঁন্দমিয়া সওদাগর ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি বাবইউসুফ নামের ‘বিতর্কিত’ ভবনটিতে সর্বমোট ৩৭টি বিভিন্ন সাইজের ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করেছে। একই সাথে আরো পাঁচটি ভবনের অনুমোদন নিয়ে ফ্ল্যাট নির্মাণ ও বিক্রি করা হয়। ওই ভবনগুলো রাস্তার এ্যালাইমেন্টের বাইরে থাকায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে ১০ তলা ভবনটি একেবারে রাস্তার মাঝখানে পড়ায় সাড়ে তিনশ’ ফুটের মতো জায়গায় রাস্তার কাজ করা সম্ভব হয়নি। গত চার বছরেরও বেশি সময় ধরে রাস্তার এই জায়গাটি নিয়ে তদন্ত, পরামর্শ, নতুন এ্যালাইনমেন্টসহ নানা ধরনের কার্যক্রম চলেছে। টেকনিক্যাল কমিটির নতুন এ্যালাইনমেন্টের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় বেশ আগে। কিন্তু নতুন খরচ এবং একনেকের অনুমোদনের বিষয় থাকায় প্রকল্পটি ঝুলে থাকে। অবশেষে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন মিলেছে। সম্প্রতি রাস্তাটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অনুমোদন মিলেছে একনেকের। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নতুন এ্যালাইনমেন্টে রাস্তার এই অংশটির কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রেখেছিল। সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার সাথে সাথে টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করা হয়েছে।

নতুন এ্যালাইনমেন্টের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই সড়কটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এটি নগরীর বিস্তৃত এলাকার যান চলাচলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপল্লী উন্নয়নে সিরডাপের পুরস্কার পেলেন শেখ হাসিনা
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে এক হাসপাতালসহ তিন প্রতিষ্ঠান সিলগালা