ডিলান টমাস : ব্যতিক্রমী কবি প্রতিভা

| বুধবার , ৯ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ডিলান টমাস। পূর্ণ নাম ডিলান মারলিয়াস টমাস। তিনি ওয়েলস প্রদেশীয় কবি এবং লেখক। ইংল্যান্ডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই কবি যুক্তরাষ্ট্রেও ছিলেন জনপ্রিয়। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কবিতার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হন। ডিলান টমাসের জন্ম ১৯১৪ সালে লন্ডনের সোয়ানলি অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলে। তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে স্কুল জীবন শেষ করে এবং খুব অল্প সময়ে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। তার অনেক লেখাই কৈশোর জীবনে প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৩৪ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লাইট ব্রেকস হয়ার নো সান শাইন্স’ প্রকাশিত হলে কাব্যভুবনে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। হৃদয় দিয়ে তিনি উপভোগ করেছেন প্রকৃতির পালাবদল। যা তাঁর কবিতার অনুষঙ্গ হয়েছে। তবে কেবল রোমান্টিকতার বৃত্তে আবদ্ধ থাকেন নি কবি।

ডিলানের কবিতার অনুষঙ্গ হয়ে এসেছে ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি, জন্ম শহরের কথা, ভ্রমণ বৃত্তান্ত, রোমান্টিকতা এবং যুদ্ধ ও যুদ্ধ-বিরোধিতা। যুদ্ধ সব সময় তাঁকে বিব্রত, ব্যথিত ও বিপর্যস্ত করতো। যুদ্ধবিরোধী বেশ কিছু কবিতা লেখেন তিনি। তাঁর রচনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্যে তা এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। প্রকৃতি, প্রেম, রহস্য, নারী, মনস্তত্ত্ব, পরাবাস্তবতা, মৃত্যুচিন্তা সব মিলিয়ে এক বৈচিত্র্যের সমাহার। ভাষাশৈলী, বাক্যনির্মাণ, চিত্রকল্প, প্রতীক তাঁর কবিতাকে অপূর্ব ব্যঞ্জনাময় করে তোলে। আর এই বহুমাত্রিকতার ফসল সনেট, মুক্তছন্দের কবিতা, গদ্য কবিতা প্রভৃতি। কবিতার পাশাপাশি চলচ্চিত্র ও বেতারের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন স্বল্প সময়।

চিত্রনাট্য লেখা তাঁর কবিতায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। তাঁর রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ‘ডেথ অ্যান্ড এন্ট্রি লিরিক’, ‘আন্ডার মিল্ক উড’, কবিতা বিষয়ক গদ্য ‘কবিতা বিষয়ে কবি’, আত্মজীবনী ‘পোর্ট্রেট অব দ্য আর্টিস্ট অ্যাজ আ ইয়ং ডগ’ ইত্যাদি। টমাস তার লেখনীর মাধ্যমে অনেক কষ্টে আয়-উপার্জন করলেও তিনি জীবিত থাকতেই লেখক হিসেবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন। তিনি ভ্রমণ কথ্য এবং বেতার ব্রডকাস্টের মাধ্যমে তার আয় বাড়িয়েছেন। জনগণের মনোযোগ বাড়ানোর জন্যে তিনি বিবিসিতে কণ্ঠ দিতেন। ১৯৪০ সালের দিকে তাঁকে বারবার বিবিসি এর সাহিত্য দৃশ্যের একটি উপযোগ্য কন্ঠস্বর হিসাবে ব্যবহার করা হত। কবি ডিলান টমাস ১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবুয়েট ছাত্র ফারদিনকে ‘হত্যা’
পরবর্তী নিবন্ধপ্লাস্টিক-পলিথিন ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ চাই