জেলেরা মাছ ধরতে ফের সাগরে

সতর্ক সংকেত প্রত্যাহার

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:০৪ অপরাহ্ণ

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় কক্সবাজারে জেলেরা এক সপ্তাহ পর ফের মাছ ধরতে সাগরে রওয়ানা দিয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার সকালে সতর্ক সংকেত প্রত্যাহারের পর অনুকূল আবহাওয়ায় জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে রওয়ানা দিতে শুরু করে।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারের ৯০% ট্রলারই সাগরে রওয়ানা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৮ হাজার মাছধরার বোট রয়েছে। এতে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ১ লাখ জেলে। বৃহস্পতিবার অনুকূল আবহাওয়ায় কক্সবাজারের ৯০% ট্রলারই সাগরে রওয়ানা দিয়েছে। বাকি ট্রলারগুলোও আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে সাগরে রওয়ানা দেবে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সাগরে ট্রলার চলাচলের ওপর ৩নং স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। দুর্যোগের আশংকায় আবহাওয়া বিভাগের জারি করা এ সতর্কতা সংকেতের খবর পেয়ে জেলেরা সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরে আসে।

এক সপ্তাহ পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে সতর্ক সংকেত প্রত্যাহারের পর অনুকূল আবহাওয়ায় জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে রওয়ানা দিতে শুরু করে।

ট্রলার মালিকরা জানান, এর আগে গত ১৮ আগস্ট একই কারণে সাগরে সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। এসময় সাগর থেকে ফেরার পথে অন্তত দু’টি বোটডুবির ঘটনা ঘটে এবং এতে ৮ জন জেলে মারা যায়। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে সাগরে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হলেও দুই সপ্তাহ পর পুনরায় হোঁচট খায় জেলেরা।

জেলেরা জানায়, গত এক মাসে সাগরে তিনটি লঘুচাপ তৈরি হয়। লঘুচাপের কারণে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত একইভাবে সাগরে মাছধরা বন্ধ ছিল।

আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করায় গত ১৬ আগস্ট থেকে ট্রলারগুলো ফের মাছ ধরতে সাগরে ফিরতে শুরু করেছিল কিন্তু মাত্র দুইদিন পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ১৮ আগস্ট থেকে আবহাওয়া দপ্তর ফের ৩নং সতর্কতা সংকেত জারি করলে মাছ না ধরেই ঘাটে ফিরে ট্রলারগুলো।

বঙ্গোপসাগরে বারবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ার কারণে গত এক মাসের অধিকাংশ সময়ই সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল এবং এ কারণে সাগর থেকে মাছ ধরাও কম পড়েছে বলে জানান শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।

ট্রলার মালিকরা জানান, কক্সবাজারে একেকটি বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৯ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে।

ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এসব জেলে বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালী‌তে পু‌লি‌শের অ‌ভিযা‌নে সাড়ে ৬ হাজার ইয়াবাসহ আটক ১
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা