কক্সবাজারের সৈকতে মৃত জেলিফিশ ও ডলফিনের পর এবার ভেসে এলো টনকে টন প্লাস্টিক দ্রব্যসহ নানা প্রকারের জৈব–অজৈব বর্জ্য। গত বৃহস্পতিবার রাতে ও গতকাল শুক্রবার ভোরে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে শহরের কলাতলী থেকে কবিতা চত্বর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সৈকতজুড়ে এ বর্জ্যবন্যা দেখা দেয়।
এসব বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে জেলেদের ব্যবহার্য্য ছেঁড়া জাল, ফ্লোট, প্লাস্টিকের দঁড়ি এবং সাগর ও ভূমিতে ব্যবহৃত কাঁচ ও প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের স্যান্ডেল, ব্যাগ ও মেডিক্যাল বর্জ্য। একইসঙ্গে ভেসে আসে বিভিন্ন ধরনের শুকনো লতা, গুল্ম ও কাঠের টুকরা এবং মৃত সামুদ্রিক প্রাণির অঙ্গ–প্রত্যঙ্গ।
সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে কক্সবাজার সৈকতে মাঝেমধ্যেই ভেসে আসে নানা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ। এরআগে ২০২০ সালের জুলাই মাসেও কক্সবাজারের কলাতলী থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত সৈকতজুড়ে দুই দফায় বর্জ্য বন্যা দেখা দেয়। ওইসময় নানা বর্জ্যের সাথে মরা কচ্ছপ, সাপসহ আরো বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির
মৃতদেহ ভেসে আসে। গতবছর অক্টোবরে সিত্রাং এর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসেও সোনাদিয়া সৈকতসহ কক্সবাজারের সাগর ও নদী তীরবর্তী উচ্চ জোয়ার প্লাবিত অঞ্চলে শত শত টন প্লাস্টিক বর্জ্য আঁচড়ে পড়ে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, কক্সবাজার সৈকতে বর্জ্য ভেসে আসার কারণ অনুসন্ধানের জন্য সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকু্ল ইসলামের নেতৃত্বে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা শুক্রবার ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করেন এবং নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, সমুদ্রে নিন্মচাপ, বায়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণয়ন (এডি), সমুদ্রের পানির গতি প্রবাহসহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ধরনের উপর ভিত্তি করে উচ্চ জোয়ারের সময় সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় এ ধরনের ভাসমান প্লাস্টিকসহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়। বোরি
মহাপরিচালক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গপোসাগরে একটি ছোট আকারের নিন্মচাপ লক্ষ্য করেছি। নিন্মচাপে জোয়ারের সময় সমুদ্রের উপরি পৃষ্ঠের পানি অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে ফুলে উঠে এবং ঘুর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান প্লাস্টিক বর্জ্য একসাথে জমা হয়ে ভেসে আসে সমুদ্র সৈকতে।