জুম্‌’আর খুতবা

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি | শুক্রবার , ১ জুলাই, ২০২২ at ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ

নবীজির শহর মদীনা মুনাওয়ারা’র ফযীলত

প্রিয় ইসলামী ভাই ও বোনেরা! আল্লাহকে ভয় করুন, জেনে রাখুন, পবিত্র ধর্ম ইসলামে মদীনাতুন্নবী তথা নবীর শহর মদীনা মুনাওয়ারার রয়েছে এক বিশেষ মর্যাদা। মদীনা শরীফ নবীজির হিজরতের স্থান, ইসলামী দাওয়াতের প্রাণ কেন্দ্র। যে শহরের শান্তি সমৃদ্ধি ও কল্যাণের জন্য রয়েছে নবীজির বিশেষ দুআ। যেটি ইসলামের দ্বিতীয় হেরম এর মর্যাদায় অভিষিক্ত। যেখানে নবীজি নুরানী জীবনের শেষ দশ বৎসর অতিবাহিত করেছেন। যেখানে রয়েছে তাঁর পবিত্র রওজা শরীফ। যেখান থেকেই ইসলামের হেদায়তের আলোকরশ্মি পৃথিবীর দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। নবীজিকে কেন্দ্র করেই এ শহরের প্রতি বিশ্বের মুসলমানদের অকৃত্রিম ভালবাসা ও দুর্নিবার আকর্ষণ। যে শহরে আল্লাহর ঐশী বাণী ওহী নিয়ে ফেরেস্তাকুলের সরদার হযরত জিবরাইল আমীন (আ:)’র হাজারো বার আগমন ঘটেছিল নবীজির রেসালতের দরবারে। সেই বরকতময় শহরের গুরুত্ব ও মর্যাদা ইসলামের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আল কুরআনের দৃষ্টিতে মদীনা মুনাওয়ারা: মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেছেন, “আপনি বলুন, হে আমার প্রতিপালক, আমাকে সত্যভাবে প্রবেশ করাও এবং সত্যভাবে বাইরে নিয়ে যাও এবং আমাকে তোমার পক্ষ থেকে সাহায্যকারী বিজয় শক্তি দাও।” (সূরা: বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৮৩)
বর্ণিত আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে হযরত যায়েদ বিন আসলাম (রা.) বলেন, সত্যভাবে প্রবেশ করার দ্বারা মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরতের কথা বুঝানো হয়েছে।

আল্লাহ তা’য়ালা আরো এরশাদ করেছেন, “এ শহরের শপথ করছি কেননা হে মাহবুব আপনি এ শহরে অবস্থান করছেন।” (সূরা: বালাদ, আয়াত ১-২)
এ আয়াতের প্রসিদ্ধ তাফসীর মতে মক্কা মোকাররমা উদ্দেশ্য। কিন্তু আল্লামা সমহুদী (রা.) এর এক বর্ণনা মতে মদীনা মুনাওয়ারাও আয়াতে অন্তর্ভুক্ত। (সূত্র: খোলাসাতুল ওয়াফা পৃ:৫, ওয়াফাউল ওয়াফা পৃ:১২)

পবিত্র কুরআনে মদীনা মুনাওয়ারাকে বরকতময় স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, এরশাদ হয়েছে “আপনি বলুন! হে আমার প্রতিপালক আমাকে কল্যাণকর স্থানে অবতরণ করাও এবং তুমি সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী (সূরা: মুমীন: আয়াত:২৯) বর্ণিত আয়াতে “মুনযালান মুবারাকা”দ্বারা মদীনা মুনাওয়ারা তথা নবীজির নূরানী শহরকে বুঝানো হয়েছে।

হাদীস শরীফের আলোকে মদীনা মুনাওয়ারার গুরুত্ব ও মর্যাদা: মদীনা মুনাওয়ারার গুরুত্ব ও মর্যাদা বিষয়ক অসংখ্য হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে নিম্নে কয়েকটি হাদীস শরীফের উদ্ধৃতি উপস্থাপন করা হলো।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা শরীফের কল্যাণ ও বরকতের জন্য এভাবে দুআ করেছেন “ হে আল্লাহ! ইবরাহীম (আ:) আপনার বান্দা, বন্ধু ও নবী, আমিও আপনার বান্দা ও নবী, তিনি আপনার নিকট মক্কার জন্য দুআ করেছেন। আমিও তাঁর অনুরূপ আপনার নিকট মদীনার জন্য দুআ করছি।” ( কানযুল উম্মাল, খন্ড: ১, পৃ: ১২৭)

নবীজি আরো এরশাদ করেছেন “মদীনা আমার হিজরতের স্থান, এখানে আমার শয়নকক্ষ, এখান থেকেই আমি হাশরের ময়দানে উত্থিত হব। (সহীহ মুসলিম, খ.২, পৃ: ৯৯২)

মদীনা শরীফকে অত্যধিক ভালবাসার দুআ: প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা শরীফকে অত্যধিক ভালবাসতেন, উম্মতেরও উচিৎ মদীনাকে অত্যধিক ভালবাসা, নবীজি দুআ করতেন, হে আল্লাহ! মদীনা শরীফকে আমাদের নিকট মক্কা শরীফ বা তার চেয়ে অধিক প্রিয় করে দাও। (সহীহ বুখারী শরীফ, খন্ড ১, পৃ:২৫৩)

আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় শহর মদীনা: আল্লাহ পাক নবীজিকে তিনস্থানের যেকোন একটিতে হিজরত করার এখতিয়ার দিয়েছেন নবীজি মদীনা তৈয়্যাবাকে হিজরতের স্থান হিসেবে মনোনীত করেছেন। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে নিশ্চয় আল্লাহ পাক আমার নিকট ওহী করেন আপনি তিনটি জন পদের যে কোন একটিতে যেন অবতরণ করেন তা হবে আপনার হিজরতের স্থান মদীনা, বাহরাইন, অথবা কিন্নিসিরিন।” (সুনানে তিরমিযী)

নবীজি এরশাদ করেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যে জমীন থেকে হিজরতের নির্দেশ দিয়েছ সেটা আমার নিকট প্রিয় ছিল, এখন এমন স্থানে আমাকে বসবাসের সুযোগ দাও যেটা তোমার কাছে অধিক প্রিয়। (ওয়াফাউল ওয়াফা, পৃ: ৩৪)

প্রতীয়মান হলো আল্লাহর কাছেও মদীনা মুনাওয়ারা অধিক প্রিয় জন পদ। ইবনে জওযী হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর কোন স্থানে তাঁকে দাফন করা হবে এ নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছিলেন, সৈয়্যদানা হযরত আলী (রা.) এরশাদ করেন, “যে জায়গায় হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন সে জায়গার চেয়ে উত্তম জায়গা নেই। ( খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ:১২)

হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বলেন, আমি রাসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি কোন নবীর প্রিয়স্থান ব্যতীত তাঁর রূহ মুবারক কবজ করা হয় না। (প্রাগুক্ত,পৃ:১৩)

মদীনা শরীফে ইন্তেকাল করা সৌভাগ্যের বিষয়: প্রিয় নবীর পদধূলিধন্য মদীনার পুণ্যভূমিতে মৃত্যু বরণকারীর জন্য রাসূলে পাকের শাফায়াতের শুভ সংবাদ রয়েছে। এরশাদ হয়েছে, হযরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “ যে ব্যক্তির মদীনা শরীফে মৃত্যু বরণ করার মত সুযোগ আছে সে যেন মদীনাতেই মৃত্যু বরণ করে আমি কিয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশকারী হব। (তিরমিযী, কানযুল উম্মাল, খন্ড ১, পৃ: ১২৫)
মদীনা শরীফের বরকতময় স্থান সমূহ: রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরতের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র মদিনা নগরীতে প্রধান আকর্ষণ নবী প্রেমিকদের একমাত্র অবলম্বন রওযাজে আনওয়ার ছাড়াও এতে রয়েছে মসজিদুন নববী শরীফ, জান্নাতুল বাক্বী, হযরত সায়্যিদুনা হামযা রদিয়াল্লাহু আনহু’র মাযার শরীফ, জবলে ওহুদ, পাঁচ মসজিদ যথাক্রমে-মসজিদে ফতেহ, মসজিদে আবু বকর সিদ্দীক, মসজিদ সালমান ফারসী, মসজিদে আলী (বর্তমানে মসজিদে আবু বকর সিদ্দীক ভেঙ্গে গাড়ীর পার্ক স্থাপন করা হয়েছে) শোহাদায়ে উহুদের সমাধিস্থল, মসজিদে গামামা, মসজিদে কো’বা, মসজিদে ক্বিবলাতাঈন, হযরত হারূন আলাইহিস সালাম’র মাযার শরীফ যা উহুদ পাহাড়ের উপর অবস্থিত। হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু’র কূপ, হযরত আবু আয়ুব আনসারী রদিয়াল্লাহু আনহু’র বাসগৃহ গুম্বজে খাজরা শরীফের সামনের দিকের স্থান, (বর্তমানে খোলা প্রাঙ্গণ), মসজিদে ওয়াদিয়ে আকীক-উহুদ সংলগ্ন, মসজিদে উমর ফারুকে আযম রদিয়াল্লাহু আনহু, মসজিদে হযরত বেলাল রদিয়াল্লাহু আনহু, মসজিদে বনী নাজ্জার, মসজিদে জুমুআ, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আব্বাজান হযরত আবদুল্লাহ রদিয়াল্লাহু আনহু’র মাযার শরীফ, মসজিদে ক্বোবার নিকটস্থ কবরস্থান, মসজিদে ক্বোবার উটের পায়ের পদচিহ্ন বর্তমান নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। হযরত সালমান ফারসীর বাগান, খাকে শেফার কুয়া (সালমান ফারসীর বাগানের নিকটে), বীরে গরীম, হযরত বিবি মারিয়া কিবতিয়ার বাসগৃহ, মসজিদে মায়েদা, নবীজির উটের পদচিহ্ন অঙ্কিত স্থান, মাদরাসা-এ আবু হুরায়রা, হযরত আলী ইরছ রদিয়াল্লাহু আনহুর মাযার, মসজিদে ইস্তারাহাত, যা জবলে উহুদের দিকে যাত্রা পথে এ মসজিদ অবস্থিত।

মদীনা মুনাওয়ারা’র প্রতি আদব রক্ষা করা মু’মিনের পরিচায়ক: হাজ্বীগণ হজ্ব করার পূর্বে বা পরে মদীনা মুনাওয়ারায় রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারক যিয়ারত করুন। যিয়ারতকারী গুম্বজে খাদ্বরা নজরে পড়ামাত্রই গাড়ী থেকে নেমে পায়ে হেঁটে আদবের সাথে মদীনা শরীফে প্রবেশ করুন। মদীনা শরীফে পৌঁছে অজু গোসল করে ইহরাম অবস্থায় না থাকলে আতর খোশবু লাগিয়ে বাবুস সালাম বা বাবে জিবরীল দিয়ে মসজিদে নববীতে ডান পায়ে প্রবেশ করুন। মসজিদে প্রবেশের পর রওজা মোবারক এবং মিম্বরের মাঝামাঝি অংশে রওজাতুম মিন রিয়াদ্বিল জান্নাত (বেহেশতের টুকরো), এখানে দুই রাকাত নামায আদায়ের পর ক্বিবলার দিকে পিঠ দিয়ে ইমামুল আম্বিয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারকের দিকে মুখ করে মুহাব্বতসহকারে দরূদ-সালাম পাঠ করুন। এরপর সামান্য উত্তর-পূর্বাংশে হযরত আবূ বাকার ছিদ্দীক রদিয়াল্লাহু আনহু’র রওজার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকেও সালাম পেশ করুন। এরপর সামান্য উত্তর-পূর্বাংশে হযরত উমর রদিয়াল্লাহু আনহুর রওজার সামনে দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করুন। মদীনা শরীফে অবস্থানকালে মসজিদে নববীতে জামাতের সাথে নামায আদায় করুন এবং জান্নাতুল বাকীসহ অন্যান্য মোবারক স্থান যিয়ারত করুন।

মদীনাবাসীদের ইহসান ও অনুগ্রহ ভুলার নয়: সাবধান! মদীনা শরীফে যেন কোনরূপ বেআদবী না হয়। যে মাটিতে আল্লাহর মাহবূব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং শুয়ে আছেন এবং যাঁরা আল্লাহর রসূলকে সসম্মানে মদীনায় সাদর অভ্যর্থনা করেছেন, তাঁদের সম্মান না করা চরম বেআদবীর শামিল।

মদীনা শরীফে কয়েকটি দু‘আ কবুলের স্থান: ১. মসজিদে নববী, ২। নবীজির রওজা ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান, ৩। রাসূলুল্লাহ্‌’র মিম্বর শরীফ, ৪। উসতুয়ানা-ই-তাওবা, এখানে তাওবা কবূল হয় ৫। সূফ্‌ফা, বর্তমানে স্থানটুকু একটু উঁচু করে ঘেরাও দেয়া আছে, ৬. মসজিদে কুবা। হিজরতের পর সর্বপ্রথম এ মসজিদই নির্মিত হয়েছিল, ৭। মসজিদে জুমুআ, বনী সালেমের মহল্লায় প্রথম জুমুআ হুজুর এ মসজিদে পড়েন, ৮। মজজিদে গামামা, নবীজি এ মসজিদে ঈদের জামাতের ইমামতি করতেন এবং এক সময় বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামায পড়েছিলেন। এজন্য এর নাম গামামা (মেঘ), ৯। মসজিদে সুকয়া, বদরের যুদ্ধের সময় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মসজিদে নামায পড়েছিলেন এবং মদীনাবাসীদের জন্য দু’আ করেছিলেন, ১০। মসজিদে যুল ক্বিবলাতাঈন, এ মসজিদে সাহাবীগণ সমেত হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায পড়া অবস্থায় মক্কার কাবার দিক হয়ে নামায পড়ার জন্য অবকাশ দেয়া হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি নামাযের মধ্যেই ক্বিবলা পরিবর্তন করেন, ১১. মসজিদে আহযাব বা মসজিদে ফাতহ, ১২। মসজিদে আবূ বাকার রদিয়াল্লাহু আনহু, ১৩। মসজিদে উমার রদিয়াল্লাহু আনহু, ১৪। মসজিদে আলী রদিয়াল্লাহু আনহু, ১৫। মসজিদে বনী জা‘ফার, ১৬। মসজিদে যোবার, ১৭। মসজিদে বনী হারাম, ১৮। মসজিদে ইজাবা, ১৯। মসজিদে উবাই, ২০। ময়দানে উহুদ, এখানে নবীজির দান্দান মোবারক শহীদ এবং হযরত হামযা রদিয়াল্লাহু আনহুসহ সত্তরজন বিশিষ্ট শহীদ সাহাবীর রওজা মোবারক।

লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), বন্দর, চট্টগ্রাম।
খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।

মুহাম্মদ আবদুল বাতেন
বাহুলী পটিয়া, চট্টগ্রাম।

প্রশ্ন: শোহাদায়ে ওহুদ, জবলে ওহুদ ও মসজিদে জবলে ওহুদ’র ফযীলত সম্পর্কে জানতে চাই।

উত্তর: মদীনা মনোওয়ারার চার কিলোমিটার উত্তরে ওহুদ পাহাড় অবস্থিত। পাহাড়ের পাশেই বিশাল ওহুদ ময়দান। তৃতীয় হিজরির শাওয়াল মাসে এ স্থানে ইসলামের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে হযরত হামযা বিন আবদুল মুত্তালিব (রা.) ওমর বিন সাবিত (রা.) সাদ বিন রভী (রা.) মুসআব বিন ওমর (রা.) সহ সত্তরজন সাহাবায়ে কেরাম শাহাদাত বরণ করেন। হযরত ওবাদাহ ইবনে আবি সালিহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিবৎসর শোহাদায়ে ওহুদের কবর যিয়ারতে তাশরীফ আনতেন। (খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ: ২০৪)
জবলে ওহুদ তথা ওহুদ পাহাড় মদীনা শরীফের বরকতমন্ডিত পবিত্র পাহাড়। এ পাহাড়ের ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে, হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, এ পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে আমরাও এ পাহাড়কে ভালবাসি। (খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ: ৩০২)
চারটি জান্নাতী পাহাড়ের একটি হচ্ছে ওহুদ পাহাড়। (ওয়াফাউল ওয়াফা, খন্ড: ১, পৃ: ১১০, তারিখে মদীনা, পৃ: ২৪৯)
ওহুদ পাহাড়ের উপর হযরত সৈয়্যদানা হারুন আলাইহিস সালাম’র মাযার শরীফ রয়েছে। ইবনে নাজ্জার ওহুদ শরীফে একটি মসজিদের কথাও উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধ সমাপ্তির পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মসজিদে নামায আদায় করেছিলেন। ইবনে শায়বাও এ কথা বর্ণনা করেছেন, কিন্তু সময়ের কথা উল্লেখ করেননি। ( খোলাসাতুল ওয়াফা, পৃ: ২৭৭, রাহাতুল কুলব, পৃ: ১৫৬)
এ পাহাড়ে শায়িত সৈয়্যদুশ শোহাদা হযরত আমীর হামযা (রা.)’র মাযার থেকে বহুবার সালামের জবাব শোনা গেছে মর্মে হযরত শায়েখ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (র.) বিরচিত জযবুল কুলুব কিতাবের ১৭৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইক্বামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব- এটি আল্লাহর ফরজ বিধান
পরবর্তী নিবন্ধদূরের দুরবিনে