জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আন্তর্জাতিক ভেন্যু। বিশ্বকাপের ম্যাচসহ প্রায় শতাধিক টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি–টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। অথচ দেশের এই সেরা আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে নেই কোনো ডিপ টিউবওয়েল। ২০০৪ সাল থেকে এই মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হলেও এখানে কোনো ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা যায়নি। স্টেডিয়ামটি সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের চেষ্টা করা হলেও কখনো স্বচ্ছ ও সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যায়নি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক চার ইঞ্চি এক্সপ্রেস লাইন স্থাপনের মাধ্যমে স্টেডিয়ামের পানি সমস্যার সমাধান করা হয়। সেই থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া স্টেডিয়ামে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ ছিলো। কিন্তু ২০২৩ সালের শুরু থেকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওয়াসার পানি সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। ২০১২ সালে স্টেডিয়ামের মাঠটি আধুনিকায়ন করা হয়। উন্নত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন করতে বালি, পাথর ও ইটের খোয়ার বিভিন্ন স্তর তৈরি এবং বিশেষ ছিদ্র যুক্ত পাইপ স্থাপনের মাধ্যমে মাঠটি আধুনিকায়ন করা হয়। যার ফলে ভারি বৃষ্টিপাতের পরেও মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে উক্ত মাঠে পুনরায় খেলা শুরু করা সম্ভব। কিন্তু এই মাঠ রক্ষণাবেক্ষণে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। নিয়মিত পানি না দিলে মাঠের ঘাস মরে যায়। খেলা আয়োজন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অথচ এ বছর প্রায় ৯ মাস যাবৎ স্টেডিয়ামে পানির তেমন কোনো সরবরাহ দিতে পারেনি চট্টগ্রাম ওয়াসা। এ বছর আয়োজন হওয়া প্রতিটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক খেলায় চট্টগ্রাম ওয়াসাকে পানি প্রদানের অনুরোধ করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
এই বছরের ইংল্যান্ড সিরিজ, আয়ারল্যান্ড সিরিজ, পাকিস্তান অনূর্ধ্ব–১৯ দলের সিরিজসহ সমপ্রতি সমাপ্ত আফগানিস্তান সিরিজ পর্যন্ত সবকটি খেলায় বিসিবি কর্তৃপক্ষ ওয়াসার ভাউচারের পানি ক্রয় করে ভবনসমূহ পরিচালনা করলেও মাঠের জন্য পর্যাপ্ত পানির সংকুলান করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন স্টেডিয়ামের কর্মকর্তারা। যেহেতু এখন কিছুটা শীতল আবহাওয়া চলে আসছে তাই এই মুহূর্তে পর্যপ্ত পানি না পেলে স্টেডিয়ামের ঘাস রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেল। কারন এখন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। সামনে অনেক সিরিজ রয়েছে এই মাঠে। ফলে মাঠ প্রস্তুত রাখতে না পারলে তা দেশের জন্য বদনাম বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। এদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন নিয়মিতই ওয়াসার পানি যাচ্ছে স্টেডিয়ামে। তবে কিছুদিন ধরে একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লোকজন গিয়ে চেক করে সমস্যা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কোথায় আসলে সমস্যাটা সেটা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন তারা। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওয়াসার এই প্রকৌশলী।