জনগণের তাড়া খেয়ে ট্রলার নিয়ে পালালেন সাংসদ

| বুধবার , ২ জুন, ২০২১ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছিলেন গ্রামবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি ট্রলার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। এ সময় বাঁধে কাজ করা উত্তেজিত জনতা তাকে দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা কাঁদা ছুড়ে মারতে থাকেন সংসদ সদস্যকে বহন করা ট্রলারের দিকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ট্রলার নিয়ে চলে যান বাবু। মাইকে উত্তেজিত মানুষকে শান্ত হওয়ার আহবান জানান একজন ঘোষক। কিন্তু প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে উত্তেজনা বিরাজ করে বাঁধ এলাকায়। বাবুকে ট্রলার নিয়ে ফিরে যেতে দেখে হাততালি দিয়ে ওঠেন অনেকেই। তবে কিছুক্ষণ পর আবার তিনি ফিরে আসেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে বাঁধ নির্মাণ কাজে অংশ নেন। খবর বাংলানিউজের।
স্থানীয়রা বলেন, বাঁধ মেরামত করা যাদের দায়িত্ব তারা কেউ এগিয়ে আসে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই, আমাদেরই বাঁধ মেরামতের দায়িত্ব নিতে হয়। তাহলে জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব কী? স্থানীয়রা আরো বলেন, ইয়াসের পর কয়রায় পানিবন্দি মানুষ ভীষণ কষ্টে আছে। জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। ঘরে খাবার নেই। তারপরও তারা খেয়ে না খেয়ে স্বেচ্ছায় বাঁধ মেরামত করছে। বাঁধ ভেঙে গেলে বেড়িবাঁধের কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন এমপি বাবু। তার ঘনিষ্ঠদের ঠিকাদারির কাজ দেওয়া হয়। এ কারণে বাঁধের কাজ বেশি দিন টেকে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তারাও ভয়ে কিছু বলেন না।
সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ওরা (স্থানীয়রা) বিক্ষুব্ধ। তারা বলেছে, আমরা কষ্টে আছি, আপনি থাকতে আমরা কেন এত কষ্ট পাচ্ছি? ওরা টেকসই বেড়িবাঁধ হয় না কেন এ নিয়ে স্লোগান দিয়েছে। এখানকার রাজনীতি তো বেড়িবাঁধ নিয়ে। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তো চেষ্টা করবে আমাকে হেয় করতে। বেড়িবাঁধ মেরামতে ৫-৭ হাজার লোক কাজ করছেন। তার মধ্যে আমার বিপক্ষে তো কেউ থাকবে। কিছু লোক বিক্ষুব্ধ হলেও কিছু লোক বলেছে, উনি তো নিজে এসেছেন। কাজ করছেন বরাদ্দ বাড়াচ্ছেন। সময় তো লাগবে। ওদের দাবি আমি যেন একটু মাটি কাটি। আমি ওদের সঙ্গে মাটি কেটেছি। তাদের বুঝিয়ে বলেছি, আমাকে একটু সময় দেন। প্রকৃতির ওপর তো আমাদের হাত নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১০ ছাত্রলীগ নেতার জামিন
পরবর্তী নিবন্ধবিমান বাহিনীর নতুন প্রধান শেখ আব্দুল হান্নান