ছড়া-কবিতা চর্চায় চট্টগ্রামের নারী

আবুল কালাম বেলাল | বৃহস্পতিবার , ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

অবরোধপ্রথা ভেঙে নারীদের আলোর জগতে এনেছেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া। জাগরণের এই ঢেউ সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের নারীদেরও আলোড়িত করে। উজ্জীবিত এই নারীরা সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে চষে বেড়ান এ অঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেত্র। এমনিতে চট্টগ্রাম বিপ্লবের সূতিকাগার। সেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধিকার আন্দোলনসহ প্রায় সব আন্দোলনে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণ আজ অবধি চলছে। কী রাজনীতি, কী অর্থনীতি, শিক্ষা-চিকিৎসা-বিজ্ঞান সব ক্ষেত্রে এদের ভূমিকা অনন্য। অধুনা সংসদীয় কার্যক্রম, বিচার বিভাগসহ সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও এদের সাফল্য উল্লেখযোগ্য। দেশ বিনির্মাণেও এঁরা আগুয়ান। কোথায় নেই নারীদের অবিস্মরণীয় স্পর্শ? উল্লিখিত ক্ষেত্রের মতো সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও নারীদের অবদান অসামান্য। বরং অপরাপর ক্ষেত্রের তুলনায় এ আঙিনায় তাঁদের গৌরবময় ভূমিকা প্রশংসনীয়। মূল্যায়নযোগ্যও বটে। এদের সৃষ্টিশীল প্রাণপ্রাচুর্য আমাদের চমকিত করে চলেছে। যার গতি নতুন মাত্রায় নতুন নতুন চিন্তাভাবনায় ক্রমশ বর্ধনশীল। বাড়ছে গৌরবের পরিধি, প্রসারিত হচ্ছে সমৃদ্ধির ব্যাপ্তি- নারী লেখকদের স্বতঃস্ফূর্ত লেখনি শক্তিতে।
এ সব নারী লেখক সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করছেন। লিখে চলেছেন আলোচ্য বিষয় কবিতা-ছড়া। সুদূর চর্যার কাল থেকে শুরু করে হাজার বছরের পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে বাংলা কবিতা। আর এ কবিতার আদিমাতা হচ্ছে ছড়া। ছড়া আর কবিতা মূলত হাত ধরাধরি করে স্রোতঃস্বিনীর মতো প্রবাহিত হচ্ছে এখনও। সমকালের বাঁকে বাঁকে প্রবহমান এ ধারাকে উর্বর রেখেছেন ঋষিতুল্য কবিরা। সে হতে পারে নারী কিংবা পুরুষ। একথা সত্যি, নারীরা আজ পুুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। ইতিমধ্যে তারা প্রমাণ করেছেন, সাহিত্যে (ছড়া-কবিতায়) পুরুষের চেয়ে তাদের অবদান কোন অংশে কম নয়। অপরাপর ক্ষেত্রে যে হারে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে, অনুপাত বিচারে সাহিত্য তথা পঙক্তি চর্চায়ও নারী লেখকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। সারাদেশে যেমন বেড়েছে, বেড়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও। কলম হাতে এ জনপদের নারীরাও আজ সাহিত্যপ্রেমীদের বিস্মিত করে চলেছেন। বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারে জমা পড়ছে এদের সোনালি মানসসম্পদ। সাহিত্যের যতগুলো শাখা আছে, গল্প-প্রবন্ধ-নিবন্ধ-উপন্যাস-নাটক, প্রায় সব শাখায় এদের বিচরণ গৌরবদীপ্ত। এরা প্রতিনিয়ত সৃষ্টি করে চলেছেন অনুদ্ঘাটিত, অনুন্মোচিত নতুন নতুন বিষয়-আশয়। কেবল উপর্যুক্ত শাখা নয় ছড়া-কবিতা রচনার মাধ্যমে সাহিত্যের জগতকে প্রাণবন্ত করে রেখেছেন এসব লেখক। এদের পদচারণায় দিন দিন পঙক্তিমালার জগত উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে। এরা যেমন বড়দের জন্য ছড়া-কবিতা রচনায় আন্তরিক তেমনি শিশুদের জন্যও শিশুতোষ পঙক্তিমালা উপহার দিয়ে যাচ্ছেন দরদী মনে।
বাংলা সাহিত্যে ছড়া-কবিতার দ্যুতি ধ্রুবতারার মতো উজ্জ্বল। একে আরো শাণিত ও ঝকঝকে করে রেখেছেন কবি-সাহিত্যিকরা। প্রকৃতপক্ষে কবিতার সাথে মেধা, রক্ত, ঘাম ও শ্রমের সখ্যই বেশি। যথাযথ আন্তরিকতার সাথে মেধা, শ্রম, চিন্তা ও শৈলী দিয়ে বহুকাল ধরে, স্বাধীনতার আগে-পরে, নিরলস লেখনির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে চলেছেন চট্টগ্রামের নারী কবি-সাহিত্যিকরাও। এদের অনেকের ছড়া-কবিতা সাহিত্যের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে। যারা এ কাজগুলো করেছেন তাঁদের অনেকেই হারিয়ে গেছেন, অনেকেই লেখালেখিতে নিষ্ক্রিয় আবার অনেকেই এখনও নিরবচ্ছিন্ন চর্চায় নিবেদিত আছেন। তাদের সাথে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন প্রতিভা। যাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময়ী। কবিতার নতুন ধারা নির্মাণের প্রত্যয় আজ সব কণ্ঠশাসিত তরুণ কবিদের স্বপ্নে। অথচ এদের প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা গুমরে মরছে অর্থশাসিত সমাজে। সহজাত কাব্য প্রতিভা আজ বিত্তের হাতের ক্রীড়নক। এরপরও বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে নব কল্লোল আছড়ে পড়ছে সাহিত্যের উর্বর তটে। চট্টগ্রামের নারীদের অধিকাংশই, যাঁরা কাব্যসাহিত্য ও শিশুসাহিত্যকর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট, গৃহিনী। ঘরকন্নার চাবুক সয়েই অদম্য স্পৃহায় তারা সৃজনকর্ম চালিয়ে নিচ্ছেন দুর্বার গতিতে।
আলোচ্য নিবন্ধে প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক যুগের সাহিত্য পর্যবেক্ষণে যেসব নারী লেখক আবেগ ও চিন্তারবাহনে যাত্রী হয়েছেন তাদের তুলে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র। বলা যেতে পারে অসম্পূর্ণ শ্রম। আদতে চলমান এ ধারাকে সম্পন্ন করা সহজও নয়। পণ্ডিত, গবেষক শিক্ষাবিদ ড. আহমেদ শরীফ মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চট্টগ্রামের হিন্দু-মুসলিম কবিরা মিলিতভাবে রাধাকৃষ্ণ লীলা বিষয়ক প্রচুর বৈষ্ণবপদাবলী রচনা করেছেন আর পুরুষ পদকারদের সাথে যে দুজন মহিলা পদকার শ্রবরের ঝি এবং হীরামনি ছিলেন তাদের সন্ধান দিয়েছেন। একই সাথে হরিকৃপা চৌধুরী নামে আরও একজন মহিলা কবির নাম পাওয়া যায় বিভিন্ন জায়গায়।
ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের বিদূষী ত্রিরত্না- যাঁদের চট্টগ্রামের নারী সমাজের শিক্ষা ও সংস্কৃতির উদঘাটনকারী ও কলম সৈনিকতার পথিকৃৎ বলা চলে- শুধু চট্টগ্রামের নয় বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্ররূপে এরা কাব্যিক রশ্মি বিলিয়ে গেছেন। এরা হচ্ছেন কবি রহিমুন্নেসা, রহিমা ও জামিরুন্নেসা। এদের আবিষ্কার করেন রহিমুন্নেসা (শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ এনামুল হক), জামিরুন্নেসা (আবদুস সাত্তার চৌধুরী, শিক্ষক ও প্রাচীন সাহিত্য সংগ্রাহক) এবং রহিমা (মুহাম্মদ ইসহাক চৌধুরী- পুঁথি গবেষক)।
বিশ শতকের গোড়ায় কবি হেমন্ত বালা দত্ত ও অমিয় বালা গুহের অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। হেমন্ত বালা আনোয়ারা নিবাসী কবি জীবেন্দ্র কুমার দত্তের বোন এবং ‘শিকার’ ও ‘মাধুরী’ নামে তাঁর দুটি কাব্যের নাম পাওয়া যায়। এভাবে চট্টগ্রামের নারী লেখকদের ইতিহাস যাত্রা শুরু হয়। এ নিবন্ধে ভুক্ত নারীলেখকদের একটি ফিরিস্তি এলফাবেটিক্যালি (অক্ষর ক্রমধারায়) সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী নারী লেখকদের সাথে যারা জন্মাননি তাদেরও ভুক্ত করা হয়েছে। আর যারা অভিবাসিত ছিলেন এবং এখনও আছেন, এমন নারী লেখকরা চট্টগ্রামের সাহিত্য জগতের সধন্য সংযোজন। গণ্য করেছি চট্টগ্রাম থেকে গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন এমন লেখক ও অনুবাদকদেরও। যাঁদের হাতে ছড়া-কবিতা নতুন ভাব, রূপ ও রসে সঞ্জীবিত হয়ে চলেছে।
অ.
অঞ্জন সাহা; অপরাজিতা ফেরদৌস; অপরাজিতা বড়ুয়া; অনামিকা দত্ত; অনুপমা অপরাজিতা [স্বপ্নভুক লোনাজল, দ্বিখণ্ডিত হিরন্ময় গন্তব্য, তোমার সমাসঙ্গে কবিতার উঠোন, নদীর জন্য পিপাসা]; অনুপা দেওয়ানজী; অরুণদ্বতী ভট্টাচার্য আইভী; অলকা নন্দী (পিননের ভাঁজে মহাকাশ হাঁটে)।
আ.
আইনুন নাহার [কাজেম আলী মাস্টারের নাতনি, পঞ্চাশ দশকের অনন্য প্রতিভাদীপ্ত কবি, : উত্তরণ]; আইরীন পারভীন; আকতার ইমাম; আখতারী ইসলাম (অপ্সরা ও বৃদ্ধ গাছ); আঁখি সুলতানা (কষ্টের ভুবনে কবিতার ফেরিওয়ালা); আজিজা রূপা; আনজানা ডালিয়া; আনোয়ারা আলম; আফরোজা মুক্তা; আরাফাত সুলতানা; আরিফা সিদ্দিকা (মৌনতার নীলপাঠ); আলেয়া চৌধুরী (নন্দিত সূর্য, সমীরণ সৌরভে); আলেয়া আরমিন আলো; আসমা বিথী।
ই.
ইসমত আরা জুলী; ইলা মজুমদার; ইয়াসমিন ইউসুফ; ইয়াসমিন মাসুদ (নিঃশব্দ অনুভূতি)।
উ.
উমরতুল ফজল (বিংশতি)।
এ.
এমিলি মজুমদার; এলিজাবেথ আরিফা মুবাশ্‌শিরা; (নক্ষত্রহীন রাতে, শ্রাবণ দিনের কেয়া, বকুল ঝরা পথে)।
ক.
কঙ্কন নন্দী; কণিকা রায়; করুণা আচার্য ( নিষিদ্ধ সীমানা, মাঠ পেরুলেই মা, পাখির বাসা রঙিন আশা)। কাজী আয়েশা সিদ্দিকা; কাজী কামরুন নাহার (যৌথ ভালোবাসার ফাঁসি চাই, বিরহ বিলাস, কবিতার উৎসব, আঁধারে আলো রেখা, এককগ্রন্থ বিপ্লবী মায়া, হৃদয়ে রভস); কাজী ঝিলন; কাজী মোহিনী ইসলাম (পুতুল বউ, জ্যোস্না কুড়াই জোনাক বনে), কাঞ্চনা চক্রবর্তী, কানিজ ফাতেমা (ছায়াতরী, বিকেল হাসে প্রজাপতি রঙে, খেয়ালী এক মেঘের সাথে, ছুটি রাঙা দুপুর); কামরুন ঋজু (শেষ বসন্তের আশায়, মামার বাড়ি মজা ভারি); কামরুন নাহার ঝর্না (মেঘ মালা); কুন্দপ্রভা সেন; কোহিনুর আকতার [অন্তর্জালে অন্তর জ্বলে, ভালোবেসে ছেড়ে দেব সব অধিকার। কোহিনুর শাকি (অনুভবের ছোঁয়া, ছুঁয়ে যায় অন্তর)।
খ.
খায়রুণ নূর; খালেদা সিনহা (ছোটমনিদের ছড়া।); অধ্যাপক খালেদা হানুম (চিরকাল বেঁচে আছি)।
গ.
গুলশান আরা বেগম; গোপা চৌধুরী; গৌরী প্রভা দাশ [মায়াডোর, হৃদ কলমের আঁচড় (যৌথ)]; গৌরী সর্ববিদ্যা।
চ.
চম্পা চক্রবর্তী, অধ্যক্ষ চেমন আরা (স্বাগতভাবনা)।
ছ.
ছায়া দে।
জ.
জরিনা আখতার; জান্নাতুল নাঈম; জান্নাতুল ফেরদৌস (বিষাদের কালো মেঘ); জান্নাতুল ফেরদৌস সোনিয়া; জায়তুন্নেছা জেবু; জাহানারা আঙ্গুর; জাহানারা মুন্নী; জুবাইদা গুলশান আরা ফেন্‌সী (চিনে নেব অনন্ত আত্মা), জুলিয়া আফরোজ; জেনিস মাহমুদা; জেবারুত সফিনা (উপলব্ধির অন্তরালে নীরবে নিভৃতে, ডানপিটে রোদ); জেসমিন সুলতানা চৌধুরী; জোনাকী দত্ত (বাংলার খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু), জোবায়দা আক্তার চৌধুরী (তোমার জন্য এক পৃথিবী লিখব, সে তুমি নও, তোমার ছায়া) ; জোলেখা খাতুন; জোহরা পারুল ইরা; জ্যোতির্ময়ী চৌধুরী; জ্যোতির্মালা দেবী (শকুন্তলার স্বপ্ন ১৯৪১; জ্যোতির্ময়ীর চতুর্দ্দশপদী কবিতা, জ্যোতির্ময়ী কাব্য সংকলন, পন্ডিচেরি, জ্যোতির্মালার কবিতা, মরণোত্তর অপর)।
ঝ.
ঝরণা খানম; ঝিনু পাটোয়ারী; ঝিনুক জোবাইদা।
ট.
টুম্পা ভট্টাচার্য্য।
ত.
তসলিমা খান রোজী; তহুরীন সবুর ডালিয়া (আভূমি নত হয়ে আছি, কহে কথা শব্দ সকল, আমাদের রাজহংস দিনে); তাজকেরা খানম নীলু; তারিফা হায়দার, তাসলিমা রহমান; তাসলিমা শিরীন; তাহেরা ফৌজি (না চাহি কেউ পড়ুক আমার কবিতার প্রেমে, শিশিরের কান্না), তুতুল বাহার; তৃষ্ণা ভট্টাচার্য।
দ.
দিলরুবা আখতার, দিলরুবা খানম (সম্পাদনা : একুশের নির্বাচিত ছড়া), দীনা মরিয়ম; দীপালী ভট্টাচার্য (প্রায় দেড়শ ছড়া নিয়ে বের করেছেন ছড়াসমগ্র।) দেবী রায়।
ন.
নওশেবা সবিহ কবিতা (কবিতায় কবিতা); নন্দিতা বড়ুয়া; নাঈমা শেলী; নাজনীন আকতার নাজু, নাজমা আলী নিপা; নাজমুন নাহার; নাজমে নওরোজ; নার্গিস চমন; নাশিদা খান চৌধুরী; নাসিমা আক্তার মুক্তা, নাসরিন সুলতানা খানম; নাসরীন রহমান; নাসিম লীনা [ছড়াগ্রন্থ ঝিঙে তলায় ফিঙে নাচে]; নাহিদা খানম ; নিভাননী চৌধুরী (বন্যায় অমিত ঘ্রাণ); নিলুফারুল আলম (ছড়াগ্রন্থ অবুঝ সবুজ); নিলুফার জাহান; নিলুফার পান্না; নিলোফার সুলতানা; নিশাত হাসিনা শিরিন [বিষণ্ন বাতাসে বিষণ্ন মানবতা, বৃষ্টি দেখেই মনে পড়েছিল মিষ্টিকে, কখনো সেভাবে ভাবোনি বলে]; নীলিমা শামীম [ভালোবাসায় হাত বাড়িয়ে, আগুনে লেখা বসন্ত কাবিন, তুমি হীনা আমি, পড়ন্ত বিকেলের ভালোবাসা, গদ্য প্রেমালাপ]; অধ্যক্ষ নীলুফার জহুর (আনন্তিক); নুরুন্নাহার; নুরুন্নাহার জহুর; নুরুন্নাহার শিরীন [শ্যাওলায় রেখেছি পা, হাওয়ায় হাওয়ায় ঋণ, কাগজের ডানা, ও পাতাল ও মাটি, পাতাভর্তি মেঘ, জেগে আছি জয়োচ্ছ্বাসে, অন্তে আজ কী লেখ্য জানা থাকলে ভালো হতো, ছড়াগ্রন্থ : মা মানে কী জানো?, বাংলাদেশের বাজনা]; নুরুন্নাহার ডলি (ছড়াগ্রন্থ : ছন্দে আনন্দে, ইচ্ছে করে যাই হারিয়ে); নুর নাহার নিপা [উড়ে বেড়ায় মনের ঘুড়ি]।
প.
পারভিন খলিল; পারভিন জালাল; পারভীন বাশার শহীদুল্লাহ; প্রতীতি দেবী; প্রিয়াংকা দেবী; প্রিয়াংকা সরকার।
ফ.
ফজিলতুল কদর (স্মৃতিতে গোলাপ, নীলা চৌধুরীর কবিতা, শুভা চৌধুরীর কবিতা, হীরা মুক্তা পান্না, সময়ের টিপ, মন উড়ে যায় পাখির সাথে, হাজার কবিতা); ফজিলতুন নাহার রনু; ফরিদা ইয়াসমিন সুমি; ফরিদা ফরহাদ [জীবনের পঙক্তিমালা, অগ্নি সাক্ষীর নেই প্রয়োজন, নদী ও নারী নর ও বন, ছড়াগ্রন্থ : স্বপ্নে রাঙা দিনগুলি, ছড়ার দেশে পড়ার দেশে, খেলতে পড়তে ছড়া]; ফরিদা রহমান; ফাওলা চৌধুরী; ফাতেমা আলী (তোমাকে হারিয়ে আমরা কাঁদি); ফারজানা রহমান শিমু (দরজা খুলেই ছুট); ফারহানা আনন্দময়ী (মেঘ অরণ্য, ইচ্ছেসবুজ এবং দীর্ঘায়ু চাইনি- আনন্দায়ু দাও); ফারহানা সাদেক লিপি (অন্যরকম পূর্ণিমা); ফাহমিদা ইয়াসমিন; ফাহমিদা আমিন (ছড়াগ্রন্থ : মৌ ঝুর ঝুর); ফিরোজা শাকুর (ছায়া শিকার); ফেরদৌস আরা আলীম (তাঁর শুধু তোমার জন্য); ফেরদৌস আরা কবির; ফেরদৌস আরা রীনু, ফেরদৌসী বেগম।
ব.
বদরুন্‌নেসা সাজু (শব্দহীন রাতের শব্দ, নিসর্গ আলোর ঠিকানা, মাইজভাণ্ডারী গীতিগুচ্ছ); বনশ্রী মজুমদার; বিভা ইন্দু; বৃষ্টি বড়ুয়া; বেলা ইসলাম; বিচিত্রা সেন।
ম.
মধুমিতা কানুনগো; মনিদীপা দাশ; মমতাজ লতিফ; মমতাজ সবুর (বাবার চিঠি, কান্না হাসির পান্না); মর্জিনা আখতার (ভালোবাসা জেগে থাক, অন্তরের বসতবাটি, ছড়াগ্রন্থ : দুরন্ত শৈশব); মরজিনা সুলতানা মুক্তা; মর্জিনা হক চৌধুরী পপি; মরিয়ম শিল্পী; মহুয়া চৌধুরী (কথারা মেলেছে ডানা, ধূসর বিকেলের পদাবলী); মহুয়া দে; মহুয়া ভট্টাচার্য; মানসী বড়ুয়া; মানসী বণিক; মানশী কাব্যশ্রী; মালা মাহবুব; মাহবুবা চৌধুরী (এক মুঠো চাঁদ); মিনতি বড়ুয়া; বীর মুক্তিযোদ্ধা মিনু রানী দাশ; মিলি সুলতানা (অন্তরে আছো তুমি, রইব তোমার সাথে); মীনাকুমারী দাশ; মীনহার সুলতানা নিকা; শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী (তোমাদের জন্য); মুনিয়া মুন; মৃণালিনী চক্রবর্তী; মেহেরুন্নেসা চৌধুরী; মেহেরুন্নেছা মেরী; মেহেরুননেসা রশিদ (ছড়াগ্রন্থ বৃষ্টির ছোঁয়ায় ব্যাঙের হাসি, পরী নাচে পরী হাসে); মোরশেদা নাসির (বিবসনা হৃদয়); মৌসুমী সেন।
র.
রওশন জাহান রহমান; রঞ্জনা বড়ুয়া; রমা চৌধুরী (স্বর্গে আমি যাব না, শহীদের জিজ্ঞাসা ); রনিতা জামান (ভালোবাসার বাহু ডোরে), রাহাত আরা বেগম; রিতিল মনিষা; রিফাত আরা শাহানা (আলোক আমার আলোক); রিফাত ফাতিমা তানসি (জ্যোৎস্নায় হেঁটে যায় কবিতারা); রিমঝিম আহমেদ (লিলিথের ডানা, কয়েক লাইন হেঁটে, বিস্ময় চিহ্নের মতো); রুনা তাসমিনা; রুমানা নাওয়ার (আমার যখন ঊনিশ); বেগম রুনু সিদ্দিকী (ছড়াগ্রন্থ- তা ধিন তা, ছড়াবাগ, ফুল ফোটে পাখি গায়, নিবেদন, মম হৃদয়ে ইথারে বিথারে); রুমি চৌধুরী (এক মুঠো মেঘ, নীল দিগন্তের ছায়াসঙ্গী); রেহেনা মাহমুদ (এবং হিমু মন); রেহানা শ্রাবন্তী রানী; রেশমা আনোয়ার; রোকেয়া হক (স্বপ্নের বালুচর ও লাল সবুজের ভালোবাসা); রোকেয়া হাসনাত (শিউলী মালা, রৌদ্রস্নাত দ্বিপ্রহর); রোজী রহমান।
ল.
লাবণ্য কান্তা; লাজিমা জেসমিন; লিপি চৌধুরী (মনের অন্তনীলে); লীনা চৌধুরী; লুনা দাশ (বিমূর্ত আলিঙ্গন), লুবাবা ফেরদৌস সায়কা, লুলুল বাহার (অষ্টরম্ভা)।
শ.
শবনম খানম শেরওয়ানী ওরফে শিশিরকণা গুহ, শম্পা চক্রবর্তী, শরীফা বুলবুল (আমি সেই দুঃখবাহী নদী, দহনের ৮৩৫ দিন, আমার আকাশ সরকারী নয়, গণতন্ত্র তোমার পায়ের নিচে); শাওন আহমেদ; শারমীন কবির বীণা (ভালোবাসি শুধু তোমাকে), শামসুন নাহার; শামসুন্নাহার মাহমুদ, শামসুন্নাহার রহমান পরাণ; শামীম আকতার; শামীম লুৎফা; শামীমা নাজ; শামীম আরা লুসি, শামীম ফাতেমা মুন্নী (মন-জোছনায় ভালোবাসায়, ছড়াগ্রন্থ : হেমন্তের শেষ রাতে); শাম্মী তুলতুল (পূর্বের নাম শাম্মী শিল্পী তুলতুল); শাহনাজ সুলতানা (হৃদয়ে শূন্যতা); শাহানা আকতার মহুয়া (প্রত্ন পিপাসার জল); শাহানারা রশীদ ঝরণা; শাহীন আনোয়ার (মেঘের পালক); শাহীনূর রহমান; শাহেদা জেনু; শিউলি নাথ; শিপ্রা বিশ্বাস; ড. শিরিণ আখতার; শিরিন আফরোজ (খুঁজি জীবনের সুখ); শুক্লা ইফতেখার

(দ্রৌপদীর প্রেমিকেরা ও অন্য একজন, সম্পর্কের স্বরলিপি); শুচি সৈয়দ; শেফালিকা ধর (অঞ্জলি); শেফায়াতুল নাহার; শেলী নাজ; শেলীনা আকতার খানম; শ্যামলী মজুমদার (যৌথকাব্য : কবিকৃতি); শাহীন আক্তার।
স.
সঞ্চিতা বড়ুয়া; সঞ্চিতা ভট্টাচার্য; সঙ্গীতা বড়ুয়া; সাইয়েদা জয়নাব শিউলী; সাদিয়া নাসরিন রিপা (তবুও জীবন জ্বলে); সাজিয়া আফরিন; সানজিদা খানম কাঁকন; সাফিনা আক্তার; সাবরিনা সুলতানা; সাবিহা মুসা; সামিম আরা; সারওয়াৎ নাজনীন শিবলী; অধ্যাপিকা সালমা চৌধুরী (ছড়াগ্রন্থ- ছড়া শুধু ছড়া, ইকরি মিকড়ি); সায়রা আলম; সায়রা খানম (তোমারই জন্য); সারাফ নাওয়ার (খড়গের হাত, বাতাসে উড়ছে পাঁজর, ৩৯ নং অনুচ্ছেদ, রাত্রির ভাটলিপি, দূরের তান্ত্রিক, আঙুলের আস্বাদন); সাহিদা রহমান মুন্নী; সাহেরা ইসমাইল (পুষ্পিত অনুরাগ); সিপ্রা দত্ত (সুখের লাগিয়া, ভেসে যাওয়া কুল); সীমা কুণ্ডু (অতিবৃত্ত পথ); সুনন্দা বড়ুয়া; সুপর্ণা দাশ; সুফিয়া আকতার শেলী; সুমনা সুমি (ভালবাসার রোদ বৃষ্টি); সুমিমা ইয়াসমিন; সুরাইয়া জহুর শিরিন (নিঃশব্দে বৃষ্টি, ছড়াগ্রন্থ খোকা ও চাঁদের বুড়ি); সুলতানা নুরজাহান রোজী (পথের পরে, সমুদ্রের নোনা জল); সুলতানা রাজিয়া (পাতায় পাতায় ছড়া); সেঁজুতি বড়ুয়া; সেলিনা শেলী (সেলিনা আকতার শেলী) [নিভে আসা সূর্য সকাল, অন্ধকার ও অন্তর্গত, চিতাচৈতন্যের গান, দ্বিধাসংহিতা, তাচ্ছিল্যকুসুম]; সৈয়দা রওশন আরা রহমান; সৈয়দা লুৎফুন্নিসা; সৈয়দা সেলিমা আক্তার (ছড়াগ্রন্থ : যুগলবন্দি ছড়া, নাশরাহ্‌ র জন্য ছড়া, জাগতে আমি ভালোবাসি, মিঠে কড়া ছড়ার ঘড়া, বিষ্টি যখন পড়ে, মাগো তুমি ও আয়রে খুকু); সোমা মুৎসুদ্দী।
হ.
হাজেরা বেগম পলি (অনুভবে তুমি); হেমন্ত বালা দত্ত।
এ ছাড়া কবিতার অনুবাদ করেছেন এমন নারীও আছেন চট্টগ্রামে। অনুবাদক সুপর্ণা দাশ তাদের মধ্যে একজন। তিনি বিদেশি কবির অনেক কবিতা অনুবাদ করেছেন। এখানে সুপর্ণা দাশ অনুদিত রেডলফ স্টোরের কবিতা ‘ক্রীতদাস’ তুলে ধরা যায়- ‘কণ্ঠস্বর যেখানে তরুণ নয়, হয়তো বলবে কেউ/ঐক্যতানের কন্ঠস্বর/পর্ণশালা থেকে পর্ণশালা আবর্তিত গানের বন্যা/কণ্ঠ স্ফীত ও দৃঢ় করে।
বাংলা সাহিত্যের এ অঙ্গনে প্রতিনিয়ত যেমন আসছে নতুন নতুন প্রতিভা, তেমনি যোগ হচ্ছে অনন্য সৃজনকর্ম-গ্রন্থ, সংকলন প্রভৃতি। এঁরা আমাদের ছড়া-কবিতার যুগ যুগ ধরে প্রবহমান ধারাটি এগিয়ে নিয়ে যাবেন সামনের পথে, ঋদ্ধ করবেন সাহিত্য ভাণ্ডার এবং উর্ধ্বে তুলে ধরবেন অগ্রগতির পতাকাটি- এ প্রত্যাশা সবার।
বি. দ্র.: আগামীতে লেখাটি সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত ও পরামর্শ সাদরে গ্রহণপূর্বক আরো পরিমার্জিতরূপে প্রকাশের আশা রাখি।
তথ্যসূত্র
হাজার বছরের চট্টগ্রাম : মোহাম্মদ খালেদ, দৈনিক আজাদী ৩৫ বর্ষপূর্তি বিশেষ সংখ্যা, ১৯৯৫
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে চট্টগ্রাম – ড. মনিরুজ্জামান
চট্টগ্রামের মানস সম্পদ – শামসুল আলম সাঈদ
লেখক কোষ : চট্টগ্রাম- রাশেদ রউফ
প্রবন্ধ- সমাজ ও সাহিত্যে নারী : প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম – জিনাত আজম (স্বাধীনতার বইমেলার ১২ বছর সংকলনে প্রকাশিত)
প্রবন্ধ- চট্টগ্রামের শিশুতোষ ছড়াসাহিত্য – বিপুল বড়ুয়া (সবুজ আসর, দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ)
স্যোশাল মিডিয়ায় প্রচারিত অনলাইন বইমেলার লেখকদের মূল্যায়ন- রাশেদ রউফ
লেখক : সাংবাদিক, শিশুসাহিত্যিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে আরো গণশৌচাগার নির্মাণের উদ্যোগ
পরবর্তী নিবন্ধআজাদী : সংবাদপত্র শিল্পের সাফল্যে ঐতিহাসিক রেকর্ড