চা থেকে টি-কোলা

| শনিবার , ১২ মার্চ, ২০২২ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

চা থেকে নতুন ধরনের একটি পানীয় (টি-কোলা) তৈরি করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষকদলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের (এফইটি) অধ্যাপক ড. ইফতেখার গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। খবর বিডিনিউজের।
গবেষক দলের অন্য দুই সদস্য হলেন এফইটি বিভাগে অধ্যয়নরত এম ইঞ্জিনিয়ারিং থিসিসের শিক্ষার্থী নাবিল নওরোজ বৈশাখ এবং একই বিভাগে মাস্টার্সের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মো. আল ইমরান জাকারিয়া।
অধ্যাপক ইফতেখারুল বলেন, দেশে শিশু কিশোরদের মধ্যে চায়ের প্রতি কিছুটা অনীহা কাজ করলেও কার্বোনেটেড বেভারেজের প্রতি তাদের আগ্রহ অনেক বেশি। গরমের দিনে চা থেকেও ড্রিঙ্কসে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে লোকজন। বাজারে থাকা ড্রিঙ্কসগুলো আমাদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকর। তাই এমন এক ধরনের পানীয় তৈরি করার পরিকল্পনা করি যাতে চা এর সব গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে । সেই লক্ষ্যে একটি গবেষণা প্রস্তাব তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রে পাঠাই। ওই কেন্দ্র থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কাজ শুরু করি।
গবেষক দলের সদস্য নাবিল নওরোজ বলেন, একটি মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যকর এবং আকর্ষণীয় টি কোলা প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছি। ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি দিয়ে টি-কোলা তৈরি করি। আমদের তৈরি ড্রিঙ্কসগুলোতে রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে চায়ের উপকারী উপাদান পলিফেনাল, ক্যাফেইন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি বিদ্যমান রয়েছে।
আরেক সদস্য আল ইমরান জাকারিয়া বলেন, ভোক্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা ‘সেনসরি অ্যানালাইসিস টেস্ট’ বা ১৫ থেকে ২০ জনকে এই কোলা খেতে দিয়েছি। সেখানেও আমরা আশানুরূপ ফলাফল পেয়েছি। আশা করি, সামনে আমরা একটি স্বাস্থ্যকর বেভারেজ পাব।
শাবি গবেষণা কেন্দ্রে তৈরি টি-কোলার মেয়াদ তিনমাস পর্যন্ত থাকবে জানিয়ে জাকারিয়া বলেন, মেয়াদ আরও বাড়ানো নিয়ে কাজ করছেন তারা। এছাড়া সুগারের পাশাপাশি সমগুণ সম্পন্ন নন-সুগার প্রোডাক্ট ডেভেলপ করছি যাতে করে ডায়োবেটিস রোগীরাও টি-কোলা গ্রহণ করতে পারেন।
এই টি কোলা তৈরি করতে যেসব কাঁচামাল প্রয়োজন তার অধিকাংশ দেশেই রয়েছে জানিয়ে গবেষকদলের প্রধান ইফতেখারুল বলেন, এ পণ্যটি তৈরি করতে অন্যান্য পানীয়র চেয়ে কম খরচ হবে। ফলে এর দাম ও সীমিত থাকবে। গবেষণা সংশ্লিষ্ট পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির অভাবে কিছু পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারেননি উল্লেখ করে এ ব্যাপারে সরকারের পৃষ্টপোষকতা চান তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতা পেলে আমরা এই গবেষণা আরও বৃহৎ পরিসরে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। উদ্ভাবনটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় হেলে পড়া ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬