চার বছরেও শেষ হয়নি ভারুয়াখালী সেতুর কাজ

৫০ বছর ধরে দুর্ভোগের ঘূর্ণিপাকে ২ লাখ মানুষ

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার | রবিবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

একটি মাত্র সেতুর অভাবে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এক গন্ডীবদ্ধ জীবন ছিল কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী ইউনিয়নের দুই লাখ মানুষের। দুর্ভোগ ঘুচাতে বহু তদবিরের পর বরাদ্দ হয় সেই স্বপ্নের সেতু। কিন্তু কোনোভাবেই যেন কপাল খুলছে না এই অভাগা ইউনিয়নবাসীর। কারণ সেতু নির্মাণ শুরু হলেও চার বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। এতে দুর্ভোগের ঘূর্ণিপাকে আটকে বাসিন্দাদের জীবন।

জানা গেছে, সোজা পথে কক্সবাজার শহরের সাথে ভারুয়াখালী দূরত্ব ৯ কিলোমিটার। কিন্তু খুরুশকুলভারুখালী সীমান্তের জোয়ারি খাল নামে একটি খাল এই দূরত্বকে নিয়ে গেছে ৩৬ কিলোমিটারে। আর খাল পার হয়ে যেতে গেলে ছোট খেয়া নৌকাই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। স্থানীয়রা জানান, আধুনিক যুগে এসে নানা কারণে দীর্ঘ বিকল্প আর খাল পারাপারে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। তাই এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন একটি সেতু। নানা তদবিরের পর ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন পায় ৩৯২ মিটার দীর্ঘ ভারুয়াখালীখুরুশকুল সেতু প্রকল্প। দুই দফা দরপত্র আহ্বানের পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন ও এম এ জাহের লিমিটেড নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে অতিরিক্ত দুই বছরে দুই দফা সময় বাড়িয়েও কাজের এই সেতুর কাজ হয়নি।

এলজিইডি বলছে, সেতুর ১৩টি স্প্যানের মধ্যে আটটি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল খালের ওপর এখনো কাজ শুরু হয়নি। এতে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বের গতিতে কাজ চললে আরো চার বছরেও কাজ শেষ হবে না। কাজের এমন ধীরগতি হতাশ স্থানীয় জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধিরা।

ভারুয়াখালীখুরুশকুল সেতু এখন শুধু একটি প্রকল্প নয়। এটি হয়ে উঠেছে বিচ্ছিন্ন মানুষের একমাত্র ভরসা। দ্রুত কাজ শেষ করার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হোকএমনই প্রত্যাশা এ অঞ্চলের মানুষের।

ভারুয়াখালী ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর তিন চারজন লোক দিয়ে কাজ করানো হয়। এত বড় সেতু নির্মাণে পাঁচছয় জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করালে বাস্তবায়ন হবে কোনো দিন? ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ করার জন্য তাগিদ দেয়া হোক, অন্যথায় তাকে বাতিল করে নতুন করে ঠিকাদার দেয়া হোক।

স্থানীয় বাসিন্দা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী শওকত বলেন, সেতুটি হলে মাত্র ৯ কিলোমিটার পথেই পৌঁছানো যাবে শহরে। কিন্তু কাজ শুরুর প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। মেয়াদ বেড়েছে বারবার, কিন্তু কাজের কোনো গতি নেই। ফলে প্রতিদিনই ছোট খেয়া নৌকায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন স্থানীয়রা।

কক্সবাজার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খান বলেন, ঠিকাদারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে পাহাড় কাটার সময় মাটি ধসে শ্রমিক নিহত
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে বাংলাদেশি নারী আহত