চাকরির প্রলোভনে লিবিয়ায় নিয়ে চার যুবককে জিম্মি

মুক্তিপণের জন্য মারধর, নির্যাতনের ভিডিও প্রেরণ ভুক্তভোগীরা সবাই আনোয়ারার একই এলাকার

আনোয়ারা প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ, ২০২৪ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

উন্নত জীবনের আশায় দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়ে বন্দিদশায় পড়েছে আনোয়ারার চার যুবক। দালাল চক্র মুক্তিপণ হিসেবে চাইছে মোটা অংকের টাকা। এজন্য প্রতিনিয়ত তাদের অমানুষিক নির্যাতনও করা হচ্ছে। পরিবারের কাছে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে দ্রুততম সময়ে মুক্তিপণ না দিলে দেয়া হচ্ছে হত্যার হুমকিও। ভুক্তভোগীরা হলেন, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মধ্যম গহিরা বাচা মিয়া মাঝির ঘাট এলাকার জাবেদুর রহিম (১৯), নাঈম উদ্দিন (২০), মো. ওয়াসিম (২২) ও বোরহান উদ্দিন (১৯)

জানা যায়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই হয়ে নানান দেশ ঘুরিয়ে লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয় ওই চার যুবককে। সেখানে চাকরির পরিবর্তে বিশেষ চক্রের হাতে তুলে দিয়ে জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি নির্যাতনের ভিডিও ভুক্তভোগীদের পরিবারে পাঠিয়ে পরিবার প্রতি ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি ও টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি দুই মাস আগে লিবিয়ার হাসপাতালে উন্নত চাকরি দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি চার লাখ বিশ হাজার টাকা করে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেয়। পরে তাদের ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই হয়ে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে হাসপাতালে চাকরি না দিয়ে উল্টো একটি মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেয়। এ চক্র তাদের জিম্মি করে গত মঙ্গলবার পরিবার ও স্বজনদের কাছে কয়েকটি নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ও অডিও পাঠিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা পরিশোধের জন্যে ইসলামী ব্যাংক চকরিয়া শাখার একটি ব্যাংক হিসাব নম্বরও পাঠানো হয় বলে জানা যায়। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে যুবকদের মেরে ফেলার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।

ঘটনার শিকার জাবেদুর রহিমের পিতা আবদুর রহিম বলেন, ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ছেলেকে লিবিয়া পাঠিয়েছি ভালো চাকরির আশায়। কিন্তু ওরা চাকরি না দিয়ে উল্টো আমার ছেলেকে জিম্মি করে আরো ১০ লাখ টাকা দাবি করতেছে। এখন আমরা তো অসহায়। আমার ছেলেকে কিভাবে বাঁচাবো?

ঘটনার শিকার বোরহান উদ্দিনের ভাই সাহাব উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার বিকেল থেকে আমার মুঠোফোনের ইমু ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার ফোন করে বুধবার ৩টার মধ্যে চারজনের জন্য চার লাখ টাকা পাঠাতে বলেছে। আর তাদের নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজও পাঠাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

আনোয়ারা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা এলাকার চার যুবককে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা দেখা করে অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য সব রকমের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৩ জোড়া ট্রেনে যাত্রী পরিবহন হবে ১৫ হাজার
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি নেতারা স্ত্রীদের ভারতীয় শাড়ি পোড়াবেন কি না, জানতে চান প্রধানমন্ত্রী