চসিকের পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজারকে বদলির নির্দেশ

‘ময়লা-আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট’

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

নগরীর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে নজীর ভান্ডার (র:) মাজার লেইন এলাকায় একটি পুকুরে ময়লা-আর্বজনা ফেলায় ওই এলাকায় কর্মরত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজারকে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এসময় ওই কর্মকর্তাকে ভর্ৎসনা করেন প্রশাসক। ‘ময়লা-আর্বজনা ফেলে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে’, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর পেয়ে গতকাল বেলা ১২টায় ঘটনাস্থল নজীর ভান্ডার (র:) মাজার লেইন এলাকায় উপস্থিত হন প্রশাসক। এসময় অভিযোগের সত্যতা পান তিনি। তখন প্রশাসক ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজারকে ভর্ৎসনা করে, তাকে তৎক্ষণিক ওই এলাকা থেকে শাস্তি স্বরূপ বদলি করতে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে নির্দেশ দেন। পরে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে ‘বড় পুকুরটি’ রক্ষায় আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
এসময় প্রশাসক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পাঠানটুলী ওয়ার্ডের পুকুরে ময়লা ফেলে ভরাটের যে চিত্র প্রত্যক্ষ করলাম তা রীতিমত বেআইনি কর্মকাণ্ড। পুকুর-জলাশয় রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) এর আইন রয়েছে। কেউ ইচ্ছে করলেই পুকুর ভরাট করতে পারে না। পাঠানটুলী ওয়ার্ড এমনিতে গিঞ্জি এলাকা অগ্নিকাণ্ড ও বৃষ্টির দিনে পানি ধরে রাখতে পুকুর জলাশয়ের প্রয়োজন রয়েছে। এলকায় অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নিনির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হবে। তাই আগুন থেকে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও অতিবৃষ্টিতে জলাবন্ধতা থেকে রক্ষা ও পানি ধারণ ক্ষমতার উৎস হলো পুকুর জলাশয়। আশ্চর্যজনক হলো নগরীর কিছু মানুষের চিন্তা শক্তি লোপ পেয়েছে। তারা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছে।
প্রশাসক বলেন, নগরে বসবাসকারীদের নাগরিক হয়ে উঠতে হয়, না হলে দুর্ভোগের শেষ হবে না। তিনি পুকুরে ফেলা সকল আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কারে কর্পোরেশনের অতিরিক্ত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এসময় তিনি ওই এলাকার রাস্তায় পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিয়মিত ঝাড়ু দেয়না বলে প্রশাসককে অভিযোগ দিলে প্রশাসক বলেন, নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সব শ্রেণি পেশার নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। কর্পোরেশনের কর্মীরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাজে গাফেলতি করলে ব্যবস্থা নিব। কিন্তু যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলাতো দন্ডনীয় অপরাধ। গৃহস্থালি ময়লা আবর্জনা সংরক্ষণে ঘরে ঘরে কর্পোরেশনের বীন দেয়া আছে। বীন ময়লা-আবর্জনা সংরক্ষণের পর কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন সেবকদের দিলে তারা তা নিয়ে যান। অথবা নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেললে হয়। কিন্তু সরাসরি পুকুরে ফেলে তা ভরাট করে ফেলা এটাতো দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশের জন্যও ক্ষতি। এই পুকুরের পানি পানের ফলে যেকোন সময় পেটের পীড়া ডায়রিয়া-টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়ে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে। কাজেই সমাজের মঙ্গলের স্বার্থে নিজের আশ-পাশ রাস্তা ঘাট পরিষ্কার রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।
খোরশেদ আলম সুজন আরো বলেন, নগরীর পাঠানটুলী, কদমতলী, বাইতুশ শরফ মাদ্রাসা ও দেওয়ানহাট এলাকায় ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে ফুটপাতের উপর তাদের মালামাল টায়ার, টিউব, গাড়ির যন্ত্রাংশ রেখে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে রেখেছেন। এতে জনসাধারণ ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে না পেরে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। প্রশাসক ব্যবসায়ীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটপাত হতে তাদের মালামাল অপসারণ করে জনসাধারণের চলাচলের পথ সুগম করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জেল জরিমান করা হবে বলে জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুনের পর লাশ গুম সাড়ে ৪ বছর পর পাওয়া গেল কঙ্কাল
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি নেতা নাজিমকে শোকজ