চতুর্থ স্ত্রীকে খুন করে তৃতীয় স্ত্রী সহ গ্রেপ্তার

আজাদী অনলাইন | মঙ্গলবার , ৯ নভেম্বর, ২০২১ at ৮:১৬ অপরাহ্ণ

নগরীর হালিশহরের এক বাসা থেকে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ১৫ মাস পর তার পরিচয় শনাক্ত করে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্বামী ও সতীনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

খুন হওয়া ২৫ বছর বয়সী ওই নারীর নাম লাকী আক্তার ওরফে পিংকী। গত বছরের ২১ জুলাই হালিশহর থানার রহমানবাগ আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।

পরিচয় জানার পর তার স্বামী সোহাইল আহমেদকে(৩৮) গতকাল সোমবার (৮ নভেম্বর) বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহাইলের তৃতীয় স্ত্রী নাহিদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকা থেকে। বিডিনিউজ

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারিশ আজ মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সোহাইল ধূর্ত প্রকৃতির লোক। লাকী ছিলেন তার চতুর্থ স্ত্রী। গত বছরের জানুয়ারি মাসে তারা বিয়ে করেন। ‘রেজাউল করিম’ নাম ব্যবহার করে রহমানবাগের ওই বাসাটি তিনি ভাড়া নিয়েছিলেন।”

গত বছরের ২১ জুলাই ওই বাসা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে বাড়ির কেয়ারটেকার পুলিশে খবর দেন। পরে রান্নাঘরে বিছানার চাদর মোড়ানো অবস্থায় লাকীর মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় হালিশহর থানায় মামলা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, “সোহাইল বাসাটি ভাড়া নেওয়ার সময় রেজাউল করিম নামে জাতীয় পরিচয়পত্রের অস্পষ্ট একটি ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন। তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তির আসল নাম সোহাইল। তার ছবি সংগ্রহের পর বাসার কেয়ারটেকারকে দেখালে তিনি তাকে লাকীর স্বামী হিসেবে শনাক্ত করেন।”

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে হালিশহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আল মামুন বলেন, “লাকীকে বিভিন্ন কারণে ‘সন্দেহ করতেন’ সোহাইল। মরদেহ উদ্ধারের চার দিন আগে ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় তার তৃতীয় স্ত্রী নাহিদা রহমানবাগের বাসায় যান। ওই দিন লাকীর সঙ্গে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সোহাইল তাকে মারধর করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে লাকীর পরনের কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বিছানার চাদর মুড়িয়ে মরদেহ রান্নাঘরে রেখে পালিয়ে যান সোহাইল। সে সময় সব দেখেও চুপ ছিলেন নাহিদা।”

পুলিশ জানায়, লাকীর আগে সোহাইল আরও তিনটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাগেরহাটে এবং তৃতীয় স্ত্রী নাহিদাকে নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বাসা ভাড়া করে রেখেছিলেন।

পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন বলেন, “লাকী, নাহিদা ও সোহাইল চট্টগ্রামে একই পোশাক কারখানায় চাকরি করার সুবাদে পরিচিত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে নাহিদাকে এবং ২০২০ সালে লাকীকে বিয়ে করেন সোহাইল।”

লাকীকে হত্যার পর সোহাইল নারায়ণগঞ্জ, সাভার এবং গাজীপুরে পালিয়ে ছিলেন। পরে বাগেরহাটের মোংলা থানার মিঠাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রী নাসিমার বাসায় থাকছিলেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পরিদর্শক মামুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে চার আসামি গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধপেকুয়ায় জেলবন্দি চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল