চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় কাচে ঘেরা ‘স্নেক কর্নার’

| শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

অজগর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার পুরনো বাসিন্দা; এবার আরও কয়েক প্রজাতির বিষহীন সাপ দর্শনার্থীদের জন্য এনেছে কর্তৃপক্ষ। পা হীন এই প্রাণীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে কাচ ঘেরা ‘স্নেক কর্নার’। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, আগে অজগর রাখা হত খাঁচায়। এখন নতুন করে কাচের তৈরি বক্স করে সাপ রাখা হচ্ছে। অন্যান্য সাপের মত অজগর সাপের জন্যও কাচের বক্স তৈরি করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

সাপকে পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাণী হিসেবে বর্ণনা করে ডেপুটি কিউরেটর বলেন, মানুষের মধ্যে এই প্রাণীটি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা এবং ভীতি আছে। মানুষের সাথে সাপকে পরিচিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুভ জানান, ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ২২ ফুট চওড়া এ স্নেক কর্নারে বর্তমানে তিন থেকে চার প্রজাতির সাপ আছে। মোট ১৪ প্রজাতির সাপ রাখা যাবে সেখানে। স্নেক কর্নার তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় নয় লাখ টাকা। চিড়িয়াখানার নিজস্ব তহবিল থেকে এই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। স্নেক কর্নারে এক পাশে অজগরের জন্য জায়গা করা হয়েছে। আবার খোপ খোপ করে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে অন্যান্য প্রজাতির সাপ। কাচের খোপগুলোতে আলাদা করে কৃত্রিম গাছ, পানি সঞ্চালনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।ডেপুটি কিউরেটর শুভ বলেন, স্নেক কর্নার দৃশ্যমান হলেও আরও কাজ বাকি আছে। আরও অনেক জায়গায় এ ধরনের কাচের বঙে সাপ রাখা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানারটা অত্যাধুনিক। এখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সাপগুলো দর্শনার্থীদের জন্য পরিদর্শন করা হবে। যাতে দর্শনার্থীরা সাপগুলো সহজেই দেখতে পান। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় অজগরের পাশাপাশি ইন্দোচীনা দাঁড়াশ, ইন্ডিয়ান দাঁড়াশ, তামাটে দুধরাজ প্রজাতির সাপ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আরও সাপ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানান ডেপুটি কিউরেটর শুভ।

তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণার কারণে অনেকেই বিষহীন সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলে। আবার অনেকে বিভিন্ন জায়গায় সাপ পেলে সেগুলো আহত কিংবা জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসে। এসব সাপ আমরা চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তারপর সংরক্ষণ করছি।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার চিকিৎসক সরোয়ার উদ্দিন বলেন, যে সাপ যে পরিবেশে থাকতে অভ্যস্ত সে সাপের জন্য সে ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেসব সাপ শুকনো স্থানে থাকে সেগুলোতে শুকনো স্থানে, যেগুলো পানিতে থাকতে অভ্যস্ত সেগুলোর জন্য কাচের বঙে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কীভাবে সাপের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে সেই প্রশ্নে সার্জন সরোয়ার বলেন, সাপ এমন একটি প্রাণী, যে খুব কম আহার করে। সপ্তাহে দুই একবারের বেশি সাপ আহার করে না। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা সাপগুলোর জন্য বাইরে থেকে ইঁদুর সংগ্রহ করছি। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য চিড়িয়াখানায় ইঁদুরের ব্রিডিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে ইঁদুরগুলো সাপের খাবার হিসেবে দেওয়া হবে।

ডেপুটি কিউরেটর শুভ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে চার বছরে আমরা চিড়িয়াখানায় অজগরের ডিম সংগ্রহ করে কৃত্রিম উপায়ে ইনকিউভেটরের মাধ্যমে ৮০টি অজগরের বাচ্চা ফুটিয়েছি। পরে সেগুলো সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে এবং লোহাগাড়া চুনতী অভয়ারণ্যে ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমাদের ইচ্ছা অজগরের পাশাপাশি অন্যান্য সাপের ডিম থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা না ফুটলে কৃত্রিম উপায়ে ফোটানোর। সেগুলোও অজগরের মত প্রকৃতিতে অবমুক্ত করব। ডেপুটি কিউরেটর জানান, চিড়িয়াখানার স্নেক কর্নারে সাপ সংগ্রহের কাজ চলমান আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ, মাইক্রো চালক গুরুতর আহত
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতারণার ফাঁদ পেতে নারীদের টার্গেট করে স্বামী, সহযোগিতায় স্ত্রী