প্রতারণার ফাঁদ পেতে নারীদের টার্গেট করে স্বামী, সহযোগিতায় স্ত্রী

ঋত্বিক নয়ন | শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

প্রতারণার মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ এবং অর্থ আদায়ই তার লক্ষ্য। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে তার স্ত্রী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। পিবিআইয়ের জালে দীর্ঘদিন পর আটকে গেল প্রতারক শহিদুল। গত বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি থানার তিন টহরী গোদারপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম (৪৪) খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি থানার ১ নম্বর মানিকছড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউছুপ আলী বাড়ির মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে। সে পেশায় একজন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক আজাদীকে বলেন, ধর্ষণের শিকার ভিকটিম গৃহবধূকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি শহিদুল ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর পতেঙ্গা থানার কাটগড় নাজিরপাড়া এলাকায় মামলার দুই নম্বর আসামি সুমন দের (৪০) বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। সেই ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ওই গৃহবধূর পরিবারকে দেখাবে বলে হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে শহিদুল।

একপর্যায়ে শেষবারের মতো শারীরিক সম্পর্ক করলে ভিডিও ডিলিট করার আশ্বাসে ১০ মার্চ ফের ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে শহিদুল। কিন্তু এরপরও ভিডিও ডিলিট না করে শহিদুল এবং দ্বিতীয় আসামি সুমন ভিকটিমের কাছে টাকা দাবি করে। তিন কিস্তিতে ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও ব্ল্যাকমেইল করে ফের ২০ মার্চ ভিকটিমকে ধর্ষণ করা হয়। উপায়ন্তর না পেয়ে ওই গৃহবধূ তার স্বামীকে জানালে তার স্বামী বিষয়টি শহীদুলের স্ত্রীকে জানান। কিন্তু উল্টো শহীদুলের স্ত্রীও ১ লাখ টাকা দাবি করেন। না হয় ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর হুমকি দেন। পরবর্তীতে ভিকটিম এ ঘটনায় চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করলে ২০২৩ সালের ২০ মার্চ আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দেন। পিবিআই কর্মকর্তা জানান, মামলা দায়েরের পর আসামি শহীদুল পালিয়ে যায়। মামলার তদন্তভার পাওয়ার পরেই আসামি শহীদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করতে থাকি। কিন্তু সে বারবার স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। সবশেষ তাকে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ির তিন টহরী গোদারপাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। এসময় তার কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আসামি শহীদুল এভাবে প্রতারণা করে এবং নারীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করতো। এতে তার বন্ধু সুমন দে এবং স্ত্রীও সহযোগিতা করতো। সে মূলত পেশায় একজন ওয়ার্কশপ কর্মচারী। স্ত্রীর সাথে নগরীর পতেঙ্গায় সে ভাড়া বাসায় থাকতো। মামলা দায়েরের পর বারবার অবস্থান পাল্টে সে গোদারপাড় এলাকার সাব্বিরের গ্যারেজ নামক একটি ওয়ার্কশপে কাজ নেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় কাচে ঘেরা ‘স্নেক কর্নার’
পরবর্তী নিবন্ধত্রাণের শাড়ি‘২ বন্ধুর স্ত্রীকে’, সমালোচনার মুখে ব্যারিস্টার সুমন