চট্টগ্রামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১২০ ইএফডি মেশিন স্থাপন

| শনিবার , ১৪ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

ভ্যাট ফাঁকি রোধে চট্টগ্রামে ২৫ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত ১২০টি ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন স্থাপন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। ইএফডি মেশিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় সার্ভারের সংযুক্ত থাকার ফলে ক্রেতা মূল্য পরিশোধের সময় সাথে সাথে আরোপিত ভ্যাট আলাদা হয়ে যাবে বলে জানান ভ্যাট কর্মকর্তারা। কেনাকাটার সময় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আদায়ের ফলে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে এমন আশা সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ইএফডি বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রথম তিন মাসের মধ্যে সারাদেশে এক হাজার ইএফডি মেশিন বসানোর পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। চট্টগ্রাম ভ্যাট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইএফডি মেশিন স্থাপনের ফলে এখন থেকে আর কোনো প্রতিষ্ঠানে ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) মেশিন থাকবে না। ইসিআর মেশিন না থাকলেও সেলস ডেটা কন্ট্রোলার (এসডিসি) কিংবা পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) সিস্টেমও রাখতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। সেক্ষেত্রে মেশিন দুটিও ইএফডি’র সাথে সংযুক্ত থাকবে। অন্যদিকে বড় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে এনবিআর নির্ধারিত সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। এনবিআর ইতিমধ্যে ১১টি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে গত আড়াই মাসে ১২০টি ইএফডি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যখনই ভ্যাট দিই, আমাদের সন্দেহ করা হয়। বলা হয়, আমরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছি। এই মেশিনের মাধ্যমে ভ্যাট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা হয়ে যাবে, এতে সন্দেহ দূর হবে। তবে সবাইকে ইএফডি মেশিনের আওতায় আনতে হবে। একটি শপিং সেন্টারের অর্ধেক দোকান মেশিনের আওতায় বাকি দোকানে যদি না থাকে, তবে গ্রাহকরা স্বাভাবিকভাবে যে দোকানে ইএফডি মেশিন নাই সেখানেই যাবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে সব দোকানের কর্মচারী কিংবা যারা ক্যাশ মেইনটেইন করে তারা কিন্তু কেউ উচ্চ শিক্ষিত না। তারা এই মেশিন অপারেট করতে গিয়ে কতটুকু বুঝবে তাও ভাবতে হবে। তাই মেশিনটি দেয়ার আগে অবশ্যই যেন দোকানের মালিক-কর্মচারীদের যাতে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এঙাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, স্বচ্চ প্রক্রিয়ায় ভ্যাট আদায় করতে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইএফডি মেশিন স্থাপন শুরু করে দিয়েছি আমরা। গত আড়াই মাস ধরে কার্যক্রম চলছে। মেশিন স্থাপনের আগে আমরা দোকানের মালিক কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। সামনের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০০ ইএফডি মেশিন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা ৫০টিরও বেশি জুয়েলারি শপে ইএফডি স্থাপন করেছি। এছাড়া বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলোতে এখন কাজ চলছে। ধীরে ধীরে সব প্রতিষ্ঠানকে ইএফডির আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, ইএফডি মেশিন বাধ্যতামূলক এমন ২৫ ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ফাস্ট ফুডের দোকান, ডেকোরেটার্স ও ক্যাটারার্স, মোটরগাড়ির গ্যারেজ, ওয়ার্কশপ ও ডকইয়ার্ড, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ছাপাখানা ও বাঁধাই সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধুলাবিষয়ক ক্লাব, তৈরি পোশাকের দোকান, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালিসামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, শপিং সেন্টার ও শপিং মলের সব সেবা প্রদানকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর ও সুপারশপ, বড় ও মাঝারি ব্যবসা (পাইকারি ও খুচরা) প্রতিষ্ঠান, যান্ত্রিক লন্ড্রি, সিনেমা হল এবং সিকিউরিটি সেবা, কমিউনিটি সেন্টার, মিষ্টান্ন ভান্ডার; স্বর্ণকার ও রৌপ্যকার এবং সোনা-রুপার দোকানদার এবং স্বর্ণ পাকাকারী, আসবাব বিক্রয়কেন্দ্র, কুরিয়ার ও এঙপ্রস মেইল সার্ভিস, বিউটি পার্লার, হেলথ ক্লাব ও ফিটনেস সেন্টার এবং কোচিং সেন্টার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিম্বুক পাহাড়ে ম্রোদের জায়গায় হোটেল নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু