চট্টগ্রামের পাহাড় কাটা রোধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

সবুজ আন্দোলনের সভায় বক্তারা

হাটহাজারী প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দেশ স্বাধীনের পর থেকে সমাজের স্বার্থান্বেষী মানুষ আর সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে বিলুপ্ত হয়েছে চট্টগ্রামের প্রায় ১৩০টির অধিক পাহাড়। আধুনিক সভ্যতার আধুনিকায়নে চট্টগ্রামের পরিবেশ যেন এক গুমোট বাধা নৈরাজ্যের স্বাক্ষী। ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম উন্নয়নের মহাসড়কে থাকলেও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে তা এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এজন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। গতকাল বৃহস্পতিবার সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে নগরীর বদ্দারহাট মোড়ের একটি রেস্টুরেন্টে চট্টগ্রামের পাহাড় কর্তন রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। এ সময় বক্তারা সরকারের সদিচ্ছার অভাব অনুপস্থিত বলে মন্তব্য করেন।

আলোচনায় সবুজ আন্দোলন মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ ডক্টর মোহাম্মদ সানাউল্লাহ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার। প্রধান আলোচন ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোর্শেদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী হুমায়ূন কবির, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মো. রেহায়েত করিম বাবুল, আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি বলেন, চট্টগ্রামের পাহাড় রক্ষায় সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না থাকায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ সিটি কর্পোরেশন যার যার মত করে বিভিন্ন সময়ে অভিযান শুরু করে জরিমানার প্রক্রিয়া চালিয়ে আসলেও ফলশ্রুতিতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। প্রধান আলোচক বলেন, চট্টগ্রামে ২০০৭ সালে পাহাড় ধ্বসে ১২৯ জন মারা যাওয়ার পর শক্তিশালী পাহাড় রক্ষা কমিটির কথা বলা হয় কিন্তু বাস্তবে বড় কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ইতোমধ্যে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন চট্টগ্রামের পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। তার মধ্যে সবুজ আন্দোলন অন্যতম।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের পাহাড় কর্তন রোধে বক্তারা বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেনজেলা প্রশাসক, সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকার, পরিবেশ অধিদপ্তর, ভূমি মন্ত্রণালয় ও বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি প্রণয়ন এবং সকল পরিবেশবাদী সংগঠনকে সাথে নিয়ে এসটেক হোল্ডার বডি তৈরি করা। যে পাহাড়গুলো আছে তার আয়তন নির্ধারণ করা এবং সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। পাহাড়ে বসবাসকারীদের সমতলে স্থানান্তর করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি সকল প্রকল্প ও স্থাপনা স্থানান্তর করে শহর থেকে দূরে পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা। ২৫ ভাগ বনায়ন নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা।

পাহাড় কর্তনকারীদের সর্বোচ্চ সাজার ব্যবস্থা করতে উচ্চ আদালত থেকে আইন পাস করতে হবে। পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা যাচাই। সর্বস্তরে পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সরকারিভাবে জনসচেতনতা তৈরির জন্য নিয়মিত সভা সেমিনার ও তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকৃষকের ঘরে ঘরে প্রণোদনার বীজ-সার পৌঁছে দিচ্ছে সরকার