চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্য

কাঞ্চনা চক্রবর্তী | মঙ্গলবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত প্রাচ্যের রাণী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রাম পাহাড়, সমুদ্র এবং উপত্যকায় ঘেরা। সৌন্দর্যের লীলাভূমি বললে হয়তো খুবই কম বলা হবে। মাতা প্রকৃতি তার দু’হাত ভরে অকৃপণভাবে এই নগরীকে সবুজে সাজিয়েছে। পাহাড়, নদী, বন-বনানী, উপত্যকা আর সমুদ্রের সহাবস্থান এই নগরীকে দান করেছে এক অপরূপ সৌন্দর্য। যা অন্য কোনো জেলা শহরে নেই। এ যেন একই অঙ্গে শত রূপ! প্রকৃতপক্ষে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের রাণী। প্রকৃতির রূপ মাধুর্যের কারণে এই নগরীর জীববৈচিত্র্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ। এই শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের অভয়ারণ্য। এই জীবগুলোর সংখ্যা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সভ্যতার করাল থাবা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, বন ও জলাভূমিকে ধ্বংস করা, বায়ু ও পানি দূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন প্রাকৃতিক সম্পদের অপরিকল্পিত আহরণ, জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ অঞ্চল এবং প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের উন্নয়নের নামে হস্তক্ষেপ, অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত পর্যটন ব্যবস্থা আর পুঁজিবাদী ও মুনাফালোভীদের কারণে জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন শুধু নয় অনেক প্রজাতির বিলুপ্ত হতে সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই নগরীর সৌন্দর্য আর প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে জীববৈচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। এমনিতে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে অনেক গাছপালা ও প্রাণী বৈচিত্র্য আজ বিলুপ্তির পথে। কিছু প্রজাতি আবার বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই মহানগরীতে উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং অনুজীবগুলো অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। বর্তমানে তার অল্প কিছু সংখ্যক অবশিষ্ট আছে। আমরা সকলেই জানি, প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানে এতে করে বিশাল একটি শূন্যতা সৃষ্টি হয়। যা খাদ্যচক্রের বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই শূন্যতা পূরণ হতে লেগে যায় কয়েক লক্ষ বছর। জেনে রাখা উচিত, পৃথিবী ইতোমধ্যে পাঁচবার বড় ধরনের জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তির মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিলেও আসলে আমাদের জ্ঞান হয়ে গেছে সীমিত। আমরা এর ভয়াবহতা বুঝতে পেরেও পারছি না বা শংকিত হয়েও সতর্ক হচ্ছি না। কেন না অতীতের জীব বৈচিত্রের কারণ আর বর্তমানের কারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগে ছিল প্রাকৃতিক কারণ আর বর্তমানে তা মনুষ্যসৃষ্ট। এখন জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তি হওয়ার প্রধান কারণ মানুষের অপরিকল্পিত বিজ্ঞান। এই ক্ষতি এমনই ভয়াবহ যে, নতুন প্রজাতির কোনোটাই নতুনভাবে উদ্ভব হতে পারছে না। কারণ এর জন্য দরকার সময় আর প্রাকৃতিক পরিবেশ। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। এই শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে না। উদ্ভিদের সাথে প্রাণের সহাবস্থান না থাকলে প্রকৃতির স্বাভাবিক কাঠামো ভেঙে পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্য প্রাণী ছাড়াও মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান অঙিজেন। এই উপাদানটি ছাড়া কোন প্রাণিই বাঁচতে পারে না। একটু খেয়াল করলে আমাদের হয়তো বোধোদয় হলেও হতে পারে। আমরা প্রতিদিন এক অবিশ্বাস্য পরিমাণে অঙিজেন গ্রহণ করে থাকি। স্বাস্থ্য বিষয়ক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শেয়ার কেয়ার এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মিনিটে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ ৭-৮ লিটার বাতাস নেয়। সেই হিসেবে ২৪ ঘণ্টায় আনুমানিক ১১ হাজার লিটার বায়ু সেবন করে থাকে। এর মধ্য থেকে ফুসফুস কেবল ৫ শতাংশ বিশুদ্ধ অঙিজেন ছেঁকে নেয় এবং হৃদপিণ্ডের স্পন্দন এর মাধ্যমে তা রক্তে মিশে যায়। হিসাব করলে দেখা যায়, একজন মানুষের প্রতিদিন প্রয়োজন হয় ৫৫০ লিটার বিশুদ্ধ অঙিজেন। একজন মানুষ কোনো ধরনের খাবার ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে অন্তত ২১ দিন, পানি ছাড়া তিন দিন আর বাতাস ছাড়া বেঁচে থাকা যায় মাত্র তিন মিনিট। বর্তমান বিশ্বে করোনা মহামারীতে অঙিজেন কতটা প্রয়োজনীয় তা মানুষ হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অঙিজেন আমরা প্রকৃতি থেকে বিনামূল্যে পেয়ে থাকি। যার একমাত্র উৎস হল গাছপালা ও জলজ উদ্ভিদ শ্যাওলা। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ‘একটি বড় গাছ সর্বোচ্চ চারজন মানুষের জন্য পর্যাপ্ত অঙিজেন সরবরাহ করতে পারে।’ বিবিসি সাইন্স ফোকাস ম্যাগাজিন অনুযায়ী, ‘একজন মানুষ বছরে ৯ দশমিক ৫ টন বাতাস শ্বাস এর মাধ্যমে গ্রহণ করে। বছরে অন্তত ৭-৮টি গাছ এ পরিমাণ অঙিজেন বাতাসে ছাড়তে পারে।
উদ্ভিদ বিষয়ক সাইট ফ্যান্থমফরেস্ট ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ অন্তত ১৮জন মানুষের প্রয়োজনীয় অঙিজেন উৎপাদন করতে পারে। আর ডে ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, একটি গাছ দূষিত বাতাস থেকে বছরে ৪৮ পাউন্ড কার্বন-ডাই-অঙাইড শুষে নেয়। প্রকৃতির সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, গ্রীন দিল্লির বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মানুষ প্রতিদিন ৫৫০ লিটার পিউর অঙিজেন গ্রহণ করে থাকে। সিলিন্ডারজাত করলে এই পরিমাণ অঙিজেন এর বাজারমূল্য প্রায় ১৩ লাখ রুপি। ২.৭৫ লিটার অঙিজেন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সিলিন্ডারের মূল্য ৬৫০ রুপি। এই হিসাবে ৫৫০ লিটার অঙিজেন এর জন্য প্রয়োজন হবে ২০০ টি সিলিন্ডার। অন্যদিকে একজন রোগী ২৪ ঘণ্টা ব্যবহার করতে পারে এমন একটি অঙিজেন সিলিন্ডারের আন্তর্জাতিক বাজার আনুমানিক মূল্য ৮০০ ডলার অর্থাৎ ৬৬ হাজার টাকা।
এবার আমরা চট্টগ্রামের জীববৈচিত্র্যের রূপরেখা দেখি। চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় এবং সংরক্ষণে অতিসম্প্রতি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন্ড হিউম্যান ওপেনিয়ন (ইকো) তাদের একটি গবেষণায় নগরীর আঠারোটি পাহাড় এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাস এবং প্রধান সড়কগুলো আশপাশ বিভাজক মিলিয়ে সর্বমোট বিশটি এলাকার উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত করে। এই কাজটি সম্পন্ন করতে গবেষকদের মোট ছয় মাস সময় লেগেছে। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দান করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ওমর ফারুক রাসেল। উক্ত গবেষণা সহযোগী হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খন্দকার রাজিউর রহমান, ইমাম হোসেন, সজীব রুদ্র, আরিফ হোসাইন, সনাতন চন্দ্র বর্মন, মোঃ মোস্তাকিম ও ইকরামুল হাসান। ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি যেসব পাহাড়ে জনবসতি নেই এবং লোক চলাচল কম সেখানে পাহাড় ও বন অক্ষত আছে। যেমন, মেডিকেলের পাহাড় এখানে উদ্ভিদের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রায় অক্ষত। উদ্ভিদের বৃদ্ধি স্বাভাবিক এবং নানা কীটপতঙ্গ ও প্রাণ আছে ভালোভাবে। কিন্তু যেসব এলাকায় পাহাড় কেটে মানুষ বসতি করেছে এবং চলাচল আছে সেখানে উদ্ভিদ ও বাস্তসংস্থান দুটোই হুমকির মুখে।’
চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু হওয়া গবেষণায় এ পর্যন্ত ৪৯৫ প্রজাতির উদ্ভিদ এর সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭৭ প্রজাতির বৃক্ষ, ৮৬ প্রজাতির গুল্মজাতীয়, ১৭৯ প্রজাতির বীরুৎ জাতীয় ও ৫৩ প্রজাতির লতা জাতীয় উদ্ভিদ পাওয়া গেছে।
আবার এর মধ্যে ৩৬৬ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া গেছে যেগুলো ঔষধি। এছাড়াও বিভিন্ন বিপন্ন প্রায় ১৩টি এবং ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হতে পারে এমন প্রজাতি পাওয়া গেছে ১৩৭ টি ও বেশি। ৩০টিরও বেশি প্রজাতি অসনাক্তকৃত পাওয়া গেছে। গবেষক দলের সদস্যরা বায়েজিদ লিংক রোড এর দু’পাশের পাহাড়, মতিঝর্ণা, মুরগি ফার্ম, টাইগারপাস, বাটালি হিল ও প্রবর্তক সহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ে গবেষণা করে যে তথ্য তুলে ধরেছেন তা যথেষ্ট শঙ্কার। নগরীর পশ্চিম খুলশীর মুরগির ফার্ম এলাকার পাহাড়ে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির সন্ধান মিলেছে এখানে সর্বমোট ১৩৫ প্রজাতির উদ্ভিদ এর সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ঔষধি গাছ সর্বাধিক ১৯৩ প্রজাতির। পাশাপাশি বিলুপ্তির পথে থাকা প্রজাতির সংখ্যাও এখানে সবচেয়ে বেশি ৬৬ টি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় ২০১ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া গেছে। ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, অন্য পাহাড়গুলোর মত মুরগী ফার্ম এলাকায় পাহাড় ও আশেপাশের এলাকায় প্রচুর বসতি গড়ে উঠেছে। এখনই সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে পাহাড় গাছপালা ও অমূল্য ভেষজ প্রজাতির সব হারিয়ে যাবে।’
বায়েজিদ লিংক রোড এর দু’পাশের পাহাড় গুলোতে ২১৬ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। এখানে বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে অনেক সবুজ কিন্তু ভিতরে প্রচুর বসতি গড়ে উঠেছে। সেখানে দ্রুত সবুজ কমেছে। প্রবর্তক পাহাড়ের ১১৭ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। এখানে বেশ কিছু স্থাপনা ও লোক চলাচলের কারণে নিচের অংশের গাছপালা হুমকির মুখে।’
গবেষণা দলের সদস্যরা জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নগরীর মতিঝর্ণা পাহাড়ে। এখানে ১৯৯ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। সেখানে নির্বিচারে পাহাড় কাটায় গাছপালা কমছে অতি দ্রুত। টাইগারপাস সড়কের দু’পাশের পাহাড়ের ২১০ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে। বাইরের অংশে উদ্ভিদের সংখ্যাধিক্য থাকলেও ভেতরের অংশে গাছ কম আর বাটালি হিলে ২২৪ প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এখানে রাস্তা থাকায় লোক সমাগম বেশি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।
আশার কথা আলসার, ডায়াবেটিস, ব্রংকাইটিস এমনকি মানসিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় এমন বহু উদ্ভিদ আছে বন্দর নগরীতে। ঔষধি গাছের মধ্যে আছে নিশ্চিন্দা, ঝুমকোলতা, জংলি বাদাম, বনআলু, পাকুড়, গোলমরিচ, দেশি ছোট এলাচ, বন শিমুল, মুক্তাঝুরি, কালো তুলসী, সাদা কাঞ্চন, শতাধিক কুকুর লতা ঢেকি, কুকুর চিতা হরিনা, বিষলতা, ভেরেণ্ডা, ঝন্‌জ্ঞা লতা, ডুমুর, শিয়াল মূত্র, কেশরাজ, বন পান আর গামারি। বিপন্ন শ্বেতচন্দনের দেখা মিলেছে নগরীর প্রবর্তক পাহাড়ে। সেখানে একটি মাঝারি আকারের গাছের সন্ধান মিলেছে। এটি অত্যন্ত দুর্লভ একটি প্রজাতি। এটি কয়েক বছর আগে লাগানো হয়েছে। নগরীর অন্য কোথাও এই গাছের সন্ধান পাননি তারা। গবেষণায় আরো দেখা মিলেছে বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতির হলদে বেত, শীত শাল, ন্যাটা সাইকাস, গর্জন, লম্বু, দুধ কুরুস, বাঁকা গুলঞ্চ আর সোনা লতার। নগরীর ডিসি হিলের সন্ধান মিলেছে ১৩২ প্রজাতির, ওয়ার সিমেট্রিতে ৯১ প্রজাতির, কানন ধারা আবাসিক এলাকায় ১৩৫, রেলওয়ে সেগুন বাগান এলাকায় ৪৯, গোল পাহাড় এলাকায় ১২৭, ডাকবাংলো পাহাড়ে ১০৬, ডানকান হিলে ১৮১, গোলাপ মিয়া পাহাড়ে ১৫৯ এবং ওমরগণি এমইএস কলেজের পাহাড়ে ১৩০ টি প্রজাতির উদ্ভিদ। এছাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কের দু’পাশে ৪৫ প্রজাতির এবং প্রধান সড়কগুলোর বিভাজক ও আশেপাশে ৫০ প্রজাতির গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। নগরীর ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে আছে ২২৩ প্রজাতির উদ্ভিদ এর মধ্যে ১৮৩টি ঔষধি জাতের বিলুপ্তির হুমকিতে আছে ৬৬ টি প্রজাতির।
সনাক্তকৃত মোট ৪৯৫ প্রজাতির উদ্ভিদ এর মধ্যে ৩৫৪টি দেশীয় প্রজাতির আর বাকি ১৪১ টি বিদেশী প্রজাতির।
এবার দেখা যাক, নগরীর প্রাণি আর অনুজীবদের অবস্থা। ২০১৮ সালে সিটি কর্পোরেশন ৪১টি ওয়ার্ড জুড়ে জীববৈচিত্র্য জরিপ চালাতে বিআরজিবি (বায়ো ডাইভারসিটি রিসার্চ গ্রুপ অফ বাংলাদেশের)এর সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর করে। চসিকের পাইলট প্রকল্পের অধীনে জরিপটি পরিচালনা করেন বিআরজিবি। এর প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশনের ৮ নং শুলক বহর ওয়ার্ড এ জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ৪০টি এখনও বাকী রয়েছে। এই জরীপ ৭৯০টি প্রজাতি চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২২ প্রজাতির অণুজীবের মধ্যে ১৬টি ছত্রাক এবং ৬ টি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্যানোডার্মার নামের একটি ছত্রাক সংগ্রহ করেছে বিআরজিবি। বিআরজিবি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. বদরুল আমিন ভূঁইয়া পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্যের জরিপ তুলে ধরেন। এই জরিপে বিআরজিবির বিজ্ঞানী ড. আমিন উদ্দিন মৃধা, প্রফেসর ড. মো. ইসমাইল মিয়া, প্রফেসর ড. মো. কামাল হোসাইন, প্রফেসর নোমান আহসান, সিদ্দিকী ড. শেখ আব্দুল মান্নান, ড. শহিদুর রহমান মজুমদার, সন্তোষ মজুমদার,উন্মেষ হাবিবা রীমা, আকতার হোসেন, ড. এম এ খালেক সহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম কলেজের ১৬ জন ছাত্র-ছাত্রী এতে অংশ নেন। জরিপে শুলকবহর ওয়ার্ডকে চারটি অঞ্চলে বিভক্ত করে তিনটি দলে বিভক্ত করে। অণুজীব উদ্ভিদ ও প্রাণী। জরিপে ৭৯০টি প্রজাতি চিহ্নিত করেন। ৩২০টি গণ এবং ১১২ টি পরিবারের অন্তর্গত ৩৯০ একটি উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। যার অধিকাংশই বনজ, ফলজ ও ফুল বাগান, কৃষি ও ঔষুধের জন্য অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ গাছ, ৩৫ শতাংশ গুল্ম, ১৫ শতাংশ দুর্বা এবং ১৩ শতাংশ লতা গাছের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রাণী প্রজাতির ৩৭০টি শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচটি প্রজাতি ক্রাস্টাশিয়া, ৫ প্রজাতির শামুক,
২০৫ প্রজাতির পোকা, ১২ প্রজাতির মাকড়সা, ১৬ প্রজাতির মাছ, ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৫ প্রজাতির টিকটিকি, ৭ প্রজাতির সাপ, ৫৯ প্রজাতির পাখি এবং ১৩ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছেন। জরিপে ১৮ টি থানার প্রাণীর মধ্যে চার প্রজাতির মুরগী, তিন জাতের হাঁস এবং কয়েক জাতের কোয়েল, চার জাতের গবাদি পশু এবং তিন জাতের ছাগল পাওয়া যায়। স্থানীয় ও বিদেশী জাতের বিড়াল এবং কুকুর ও তালিকাভুক্ত করা হয়। একই সাথে একুরিয়ামের ১২ টি প্রজাতির মাছ, কুকুরের চারটি ভ্যারাইটি, একটি প্রজাতির চিত্রল হরিণ এবং ১০ প্রজাতির পাখি বন্দি অবস্থায় পাওয়া যায়। উক্ত জরিপে জানা যায়, অনেক প্রজাতির জীব বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ক্যাম্পাসে পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা নির্ধারণ ও সংগঠন শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে। এ গবেষণায় ক্যামেরা ট্র্যাপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পূর্বে গবেষণায় ৯৮ প্রজাতির বন্য প্রাণীর সংখ্যা জানা গেলেও প্রজাতিগুলোর আলাদা সংখ্যা উল্লেখ ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে এই গবেষণার প্রতিটি প্রজাতির আলাদা আদমশুমারি ও বের করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন গবেষণার সংশ্লিষ্টরা। এর মাধ্যমে শহরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বন্যপ্রাণীর সংখ্যার সঠিক হিসাব ও তাদের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে তাও জানা যাবে। বাংলাদেশ বন গবেষণাগারের সিনিয়র রিসার্চ অফিসার শেখ মো. রবিউল আলম এর মতে, আগের চেয়ে এবারের গবেষণা একটু ভিন্ন হবে। আগের চেয়ে এবারের গবেষণা একটু ভিন্ন হবে। কারণ, আগেরবার বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যার কথা বলা হলেও আলাদা কোনো জরিপ ছিল না। এবারের গবেষণায় পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর আলাদা আলাদা প্রজাতি জানার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যাও জানা যাবে। তা ছাড়া এবার প্রথমবারের মতো ক্যামেরা ট্র্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। পাখিরা যাতে গাছের ডালে বসতে পারে, বাসা বাঁধতে পারে- তার জন্য নতুন নতুন বাসা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে নির্ণীত প্রজাতিগুলো সংরক্ষণের জন্য নেওয়া হবে নানা উদ্যোগও।’
গবেষণা দলে আরও রয়েছেন গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, গবেষণা সহকারি মো. কামরুল ইসলাম ও ফিল্ড পর্যবেক্ষক এস এম মাঈনুদ্দিন। ‘পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর সংখ্যা নির্ধারণ ও সংরক্ষণ’ শীর্ষক এ গবেষণা ২০১৬-১৭ সাল থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২১ সালে। এর মাধ্যমে চট্টগ্রামের ষোলশহরে বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে কত প্রজাতির জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী রয়েছে, তা জানা যাবে। পাশাপাশি এগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রকল্পও হাতে নেওয়া হবে। ক্যামেরা ট্র্যাপ, সরাসরি পর্যবেক্ষণ ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এ গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে। পাখির সংখ্যা নির্ধারণের জন্য প্রায় ৫০টি বাসা তৈরি করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী চলাচল করে-এমন ২৬ স্পট নির্ধারণ করে ছয়টি ক্যামেরা লাগনো হয়েছে। কত প্রজাতির সরীসৃপ, উভচর, পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে, তা জানা যাবে এ গবেষণা শেষে। চট্টগ্রাম শহরে অন্যান্য এলাকা থেকে কত ধরনের প্রাণী আসে বা ক্যাম্পাসে নিজস্ব কত ধরনের জীববৈচিত্র্য রয়েছে, তাও জানার জন্য এ গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে বিএফআরআই ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, বন গবেষণাগারের বিভিন্ন গাছের ডালে পাখিরা যাতে বাসা বাঁধতে পারে, তার জন্য দেওয়া হয়েছে মাটির কলস। আবার ছোট ছোট পাখির বাসাও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এসব স্থানে কতটি পাখি আসছে, তা দেখার জন্য রাখা হয়েছে ক্যামেরাও।
চট্টগ্রাম শহরে বৃক্ষ ও জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ এলাকা হচ্ছে ষোলশহরের বন গবেষণাগার ক্যাম্পাস। সংরক্ষিত এ এলাকায় আছে বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ, প্রাণী ও অন্যান্য জীবজন্তু। বন গবেষণাগারের সিনিয়র গবেষক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিনের নেতৃত্বে ২০১০-১১ সালে ‘জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস :বাংলাদেশের শহরে সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছিলো। গবেষণায় মোট ৯৮ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর মধ্যে আট ধরনের উভচর, ১৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৯ প্রজাতির পাখি ও ১৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রেকর্ড করা হয়।
উভচর প্রাণীর মধ্যে কুনো ব্যাঙ, চায়না ব্যাঙ, কোলা ব্যাঙ, কটকটি, ঝিঁঝি ব্যাঙ, সবুজ ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ ইত্যাদি; সরীসৃপ প্রাণীর মধ্যে হলুদ পাহাড়ি কাছিম, তক্ষক, টিকটিকি, রক্তচোষা, গুইসাপ, অঞ্জনী, জাতিসাপ, কেউটে সাপ, দারাজ সাপ, লাউডোগা, ধোরাসাপ, ঘরগিন্নি সাপ, অজগর ইত্যাদি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে পাতিশিয়াল, বাগদাসা, খাটাশ, বড় বেজি, ছোট বেজি, বনবিড়াল, বাদামি কাঠবিড়ালি, সজারু, বড় ইঁদুর, নেংটি ইঁদুর, গেছো ইঁদুর, চিকা, বাদুর, চামচিকা বিএফআরআই ক্যাম্পাসে পাওয়া যায়। আর এখানে পাখির মধ্যে রয়েছে নাগর বাটই, গো-বক, কানি বক, ওয়াক, ভুবন চিল, তিলাঘুঘু, রাজঘুঘু, জালালি কবুতর, কুরা, টিয়া, খুরলে পেঁচা, লক্ষ্মীপেঁচা, কালো কোকিল, কানাকুয়া, পাপিয়া, বউ কথা কও, আবাবিল, নাককাটি, মাছরাঙা, সুইচোরা, ওয়ালং, কাঠঠোকরা, বড় কাঠঠোকরা, পাকড়া কাঠঠোকরা, লালচে কাঠঠোকরা, বড় হলদে কাঠঠোকরা, নীলকান্ত বসন্ত, হুদহুদ, ভাতশালিক, ঝুঁটি শালিক, গোবরে শালিক, কাটশালিক, পাতিকাক, দাঁড় কাক, কুটুম পাখি, ফিঙে, হলদে পাখি, সিপাহি বুলবুল, লেজনাচানী, দোয়েল, নীল শিলাদামা, টুনটুনি, লালঘর পাঙ্গা, নীলটুনি, ফুলঝুড়ি, চড়ূই পাখি, বাবুই পাখি, তিলামুনিয়া, সাদা খঞ্জন, ধূসর খঞ্জন ইত্যাদি।
এ প্রসঙ্গে বিএফআরআইয়ের সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘আগের গবেষণার চেয়ে এবার প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের সংখ্যা বাড়তে পারে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ ধরনের সংরক্ষিত এলাকা থাকায় এবং কৃত্রিমভাবে নতুন নতুন বনায়ন করায় এখানে প্রজাতির সংখ্যা বাড়া স্বাভাবিক। পাহাড়, বাসস্থান ও খাদ্যের আধিক্যের কারণে নতুন নতুন বন্যপ্রাণীও আসছে বিএফআরআই ক্যাম্পাসে।’
স্মৃতির পটে পড়তে গিয়ে জানা যায়, এক সময় চট্টগ্রাম শহরের আশেপাশে সহজে পাওয়া যেত প্রচুর বন মোরগ আর সাপ। তখন হরিণের ডাক আর বাঘের উপদ্রব সাধারণ বিষয় ছিল। কিন্তু আজ সবই ইতিহাস। আমাদের এই মহানগরীর জীববৈচিত্র্যে রক্ষা করতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা আবশ্যক। এমনিতেই মহানগরী সবুজহীন বিবর্ণ আর কংক্রিটের স্তুপের পরিণত হতে আর দেরি নেই। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের বংশধরদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের জন্য শুধু হাতে গোনা কিছু প্রজাতিকে রক্ষা করলেই হবে না। সকল প্রকার জীব প্রজাতির বাস্তুসংস্থানের গুরুত্ব অপরিসীম। তাদের অবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে এদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে জীববৈচিত্র্য সংগ্রহশালা বা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখবে। এর জন্য দরকার যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সুষ্ঠু আইনের প্রয়োগ। কোনোভাবেই বন, গাছগাছালি ও পশু পাখি হত্যা করা যাবে না তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, মশাসহ ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ দমনে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারে পরিবেশ যেমন একদিকে দূষিত হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে উপকারী পতঙ্গ বিশেষত্ব পরাগায়নকারী মৌমাছি ও প্রজাপতি মারা পড়ছে। এই মহানগরীতে পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব আমাদের প্রধান সমস্যা। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের রোগের ঝুঁকি আমাদেরকে একটি অশনি সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের ইয়ুথ সামিট অন বায়োডাইভারসিটি দেওয়া ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় করোনাভাইরাস রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। তিনি জানান, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে মানুষের বর্তমান কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকলে চূড়ান্ত দিকে এগিয়ে যাবে পৃথিবী। করোনা পরিস্থিতির কারণে জাতিসংঘের ৭৫ তম সাধারণ অধিবেশনে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধানরা। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ অধিবেশনের সাইড লাইনে ‘টৎমবহঃ অপঃরড়হ ঙহ ইরড়ফরাবৎংরঃু ঋড়ৎ ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ’ নামের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে সারাবিশ্বে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সনদে স্বাক্ষর করেছে, যেখানে বলা হয়েছে দেশীয় স্থানীয় প্রজাতিকে রক্ষা করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এর ক্ষেত্র দেশি প্রজাতির রক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে আমাদের এই মহানগরীকে বাঁচাতে হবে এবং প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রক্ষা করতে হবে। রাজনৈতিক, ক্ষমতাশীল ও প্রভাবশালীদের করাল থাবা থেকে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য ব্যক্তি, সরকার ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা, পরিকল্পিত নগরায়ন আর কঠোর আইন প্রয়োগ করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ আজ সময়ের দাবি।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, নিজামপুর সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম; প্রাবন্ধিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুয়েলারি ব্যবসায়ীদের উপর ভ্যাট ১.৫ শতাংশ করার দাবি
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের বধ্যভূমি : সংরক্ষণ করা জরুরি