কুতুবদিয়ায় জাহাজ ও সন্দ্বীপে ট্রলারে ডাকাতি

যাত্রীদের মোবাইল, নগদ টাকা স্বর্ণালংকার ও জাহাজের মালামাল লুট

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৫ মার্চ, ২০২৪ at ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া চ্যানেলে সিমেন্টের ক্লিংকারবাহী এমভি আকিজ লজিস্টিক২৩ নামক একটি জাহাজে এবং সন্দ্বীপের দীর্ঘাপাড় থেকে উড়ির চর প্রান্তে আসার পথে একটি যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) চট্টগ্রাম থেকে সিমেন্টের ক্লিংকার লোড করে এমভি আকিজ লজিস্টিক২৩ জাহাজটি কুতুবদিয়া বাতিঘরের প্রায় ৪ কিলোমিটার পশ্চিমে নোঙর করে। পরদিন রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বড় একটি ফিশিং ট্রলার যোগে দেশিয় তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জাহাজে উঠে মুখোশধারী ২৫/৩০ জন ডাকাত। এ সময় জাহাজের মাস্টারসহ ১২ জন কর্মচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে স্মার্ট ফোন, নগদ টাকা, ব্যাটারি, ইঞ্জিনরাডারইকোসাউন্ডের মনিটর, জিপিএস, সোলার প্যানেলসহ প্রায় দশ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মুখোশধারী ওই ডাকাতদের চিহ্নিত করা না গেলেও সকলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায় কথাবার্তা বলছিলেন। এবং সকলে ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বলে ধারণা করছেন জাহাজে অবস্থানরত কর্মচারীরা।

এ ঘটনায় বুধবার (১৩ মার্চ) আকিজ শিপিং লাইন লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের সিনিয়র অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে কোম্পানির পক্ষে কুতুবদিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাত ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে সাগরে জাহাজ ডাকাতির বিষয়টি নিশ্চিত করে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম কবির জানান, সাগরে অপরাধ নির্মূলে আলাদা একটি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তবুও ওই ঘটনায় কুতুবদিয়ার কোনো জলদস্যু জড়িত আছে কিনাসে বিষয়ে কঠোর নজরদারিতে রয়েছে পুলিশ।

এদিকে আমাদের সন্দ্বীপ প্রতিনিধি জানান, বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর দুইটা নাগাদ সন্দ্বীপ দীর্ঘাপাড় থেকে কাঠের ট্রলারটি উড়িরচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। দুপুর আড়াই টার সময় বামনী নদীর মাঝপথে স্পিডবোটে আসা সাতআটজনের একটি ডাকাত দল আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ওই যাত্রীবাহী ট্রলারে থাকা যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলটি তাদের কাছ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার, মুঠোফোনসহ মালামাল ছিনিয়ে নেয়।

ট্রলারে থাকা যাত্রী মো. শাহাদাত আজ সকালে আজাদীকে বলেন, আমি আমার ঘর দেওয়ার জন্য সন্দ্বীপে আমার আত্মীয় থেকে প্রাপ্ত সাত লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় মাঝ নদীতে ডাকাতরা এসে আমার টাকা নিয়ে যায়।

ট্রলারে থাকা আরেক যাত্রী মো. জাবেদ জানান, জলদস্যু শাহীনের নেতৃত্বে জলদস্যু নুরনবী, আশ্রাফ, কামাল, ছোট্টন, আকতার, নুরে আলম অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি করে চলে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডাকাতি করতে আসা ডাকাতদের স্পিডবোটের মালিক কোম্পানিগঞ্জে চর এলাহী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক।

এ ব্যাপারে রাজ্জাক চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। কেউ আমাকে জানায়নি। স্পিডবোটের মালিকানা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ঘাটে একটা বোট আছে তবে আমি সে বোটের মালিক না। মালিক হচ্ছে শেখ বেলাল। তিনি আরও বলেন, কোনো অপরাধীর ব্যাপারে আমার আপোষ নেই।

ঘটনার সময় যাত্রীদের মধ্যে কোনো একজনের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও এখন ছড়িয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় কোনো মামলা হয়নি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম নৌ পুলিশ সুপার আ ফ ম নিজাম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নৌ পুলিশ তদন্ত করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় টাইগাররা
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়তলী কারখানায় মেরামত করা হচ্ছে ৯৫ টি কোচ