কাবুলের বিলাসী জীবনই কাল হলো জাওয়াহিরির

| বৃহস্পতিবার , ৪ আগস্ট, ২০২২ at ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ

গোয়েন্দাদের চোখে ধুলা দিয়ে বছরের পর বছর আফগানিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে লুকিয়ে ছিলেন জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি। পাহাড়ের ওই কঠিন পরিবেশ ছেড়ে জীবনের শেষ ক’টি মাসে তিনি রাজধানী কাবুলের কাছে এক অভিজাত এলাকায় থাকতে শুরু করেছিলেন, যেখানে থাকেন তালেবানের শীর্ষ কর্মকর্তারাও। আর সেটাই যেন জাওয়াহিরির জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের নজরে পড়ে যান এবং তাকে হত্যা করা হয়। খবর বিডিনিউজের।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন থেকে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ৭১ বছরের জাওয়াহিরিকে হত্যা করা হয়। এ আল-কায়েদা নেতা কাবুলে নিজ বাড়ির বারান্দায় হামলার শিকার হন। তবে এতে কোনো বেসামরিক নাগরিক মারা যাননি বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
গত বছর তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের কয়েক মাস পরই জাওয়াহিরিকে খুব নিরাপদ একটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে এমন কথাই জানিয়েছেন তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ নেতা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাওয়াহিরি যে বাড়িতে ছিলেন তার কিছু ছবি ছড়িয়েছে। যদিও ওই ছবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ছবিগুলোতে গোলাপি রঙের একটি ভবনের কয়েকটি জানালা ভাঙা দেখা যাচ্ছে। বাড়িটি তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা এবং বেড়ার উপর কাঁটাতার মোড়ানো। দুই বা তিনতলা ভবনের চারপাশে অনেক গাছগাছালি।

জাওয়াহিরি যে বাড়িতে থাকতেন সেটি কাবুলের শহরতলি শেরপুরে অবস্থিত। অভিজাত এলাকা শেরপুর অনেক নিরিবিলি, অনেক সবুজ এবং সেখানে বড় বড় ভবন রয়েছে। আফগানিস্তানের সাবেক জেনারেল এবং আদিবাসী উজবেক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আব্দুল রশিদ দোস্তাম সেখানে বাস করতেন। তালেবানের শীর্ষ কর্মকর্তারাও ওই এলাকায় বাস করেন। সেখানে কিছু কিছু বাড়িতে বাগান এবং সুইমিংপুলও রয়েছে।

তালেবানের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী তালেবান সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে জাওয়াহিরি বেশিরভাগ সময় আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশের মুসা কালা জেলার পাহাড়গুলোতে থাকতেন। তিনি সেখানে নিজেকে খানিক আড়ালেই রাখতেন। তবে ওই সময়ে বেশ কয়েকবার জাওয়াহিরি পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যাতায়াত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবানের আরও কয়েকজন নেতা বলেন, তালেবান প্রশাসন কাবুলে জাওয়াহিরিকে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছিল। তবে সেখানে তিনি খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না এবং কোথাও যেতে হলে তাকে তালেবানের অনুমতি নিতে হতো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৌদি-আমিরাতের কাছে ৫শ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রিতে সম্মত যুক্তরাষ্ট্র
পরবর্তী নিবন্ধইউক্রেন থেকে বিশ্বের কত শস্য দরকার