কক্সবাজারের সবখানেই এখন উন্নয়নের ছোঁয়া

রামুতে বঙ্গবন্ধু উৎসবে তথ্যমন্ত্রী

রামু প্রতিনিধি | শনিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫৪ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষ যা কল্পনা করেনি, স্বপ্নেও ভাবেনি, তা আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এখানে (কক্সবাজার) রেল আসবে তা ছিল স্বপ্ন। ব্রিটিশ আমল থেকে তা মানুষ শুনে আসছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারই তা বাস্তবে রূপ দিয়েছে। কক্সবাজার জেলার চেহারা এখন পাল্টে গেছে। নেই জরাজীর্ণ সড়ক, নেই অনুন্নত জনপদ। সবখানে এখন উন্নয়নে ছোঁয়া দৃশ্যমান।

গতকাল শুক্রবার রাতে রামুর বঙ্গবন্ধু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এত বড় বড় বিমান নামবে তা কেউ ভাবেনি। রামুতে ক্যান্টনমেন্ট, বিকেএসপি, সিএমএইচ, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল হবে তাও কেউ ভাবেনি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামীণ জনপদের মানুষের স্বপ্ন পূরণে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন। দেশের লাখো মানুষকে মুজিব বর্ষের ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে। এখন খালি পা আর ছেঁড়া জামা পড়ার দৃশ্য দেখা যায় না, কুঁড়েঘরেও মানুষ থাকেনা। বিগত ১৪ বছরে কক্সবাজাররামুকে বদলে দিয়েছেন এমপি কমল। তাই আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের পক্ষে নৌকা প্রতীকে সবাইকে রায় দিতে হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপির নেতৃত্বে রামু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাত দিনব্যাপী এ বঙ্গবন্ধু উৎসব।

আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, নির্বাচন সন্নিকটে। বিএনপি নেতারা সরকারের তৈরি সেতুর উপর উঠেও উন্নয়ন হয়নি বলে সমালোচনা করেন। করোনার টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বিএনপি, কিন্তু পরবর্তীতে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির সকল নেতা টিকা নিয়েছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর বঙ্গবন্ধু বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন বাঙালি জাতির জন্য বড় বিপর্যয় আসবে। এজন্যই তিনি পাকিস্তানিদের অত্যাচারের নাগপাশ থেকে এদেশের মানুষকে মুক্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু আপোস করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা না করে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করে বিশ্বে প্রথম জাতিরাষ্ট্র গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেনক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখিসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। বঙ্গবন্ধু যখন দেশগড়ার এবং দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন, তখনই কিছু বিপথগামী, ক্ষমতালোভী ও চক্রান্তকীদের হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ বদলে যেত। ঠাঁই পেত উন্নত দেশের কাতারে। রামুর বঙ্গবন্ধু উৎসব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে প্রতিবছর আমি এ উৎসবে এসেছি। শীতের রাতে এত মানুষের সমাগম আর কোথাও দেখিনি। এ উৎসব মানুষের প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ উপস্থাপন ও বাংলা বিজয়ের ৫১ বছর উপলক্ষে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, বঙ্গবন্ধু উৎসব উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মা।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, বঙ্গবন্ধু উৎসবের সমন্বয়ক সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি। বঙ্গবন্ধু উৎসবে পরিবেশ বন্যপ্রাণী ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. নাছির উদ্দীনকে ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়।

বঙ্গবন্ধু উৎসবের মহাসচিব উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক ও উপজেলা যুবলীগ সাধারণ নীতিশ বড়ুয়া সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. ফরিদুল আলম, কাউয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলম, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য ফরিদুল আলম, কক্সবাজার জেলা জজ কোর্টের এডিশনাল পিপি অ্যাড. একরামুল হুদা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, খুনিয়াপালং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ প্রমুখ। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্মসম্পাদক মাহাবুবুল হক মুকুল, সাবেক মহিলা সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, সাংবাদিক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রেজাউর রহমান রেজা, ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো।

সংগীত প্রযোজক বশিরুল ইসলামের পরিচালনায়, সংস্কৃতি কর্মী তাপস মল্লিকের সঞ্চালনায় রাত ৮টা থেকে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের ষষ্ঠ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় পরিবেশনায় ছিল, সরগমালয় সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রত্যাশা শিল্পী গোষ্ঠী, রামুর রায়মোহন সংগীতালয় ও কক্সবাজার স্মল আর্ট স্কুলের নাটক। একক গানে ছিলেন, শিউলী দে, আদিত্য মল্লিক পঞ্চম, পলি বড়ুয়া, রেজাউল আমিন মোর্শেদ, রাহুল, কামাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আন্না পাল, পুলক বড়ুয়া আপ্পু, জাকিয়া সোলতানা মেরী।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন, লিড গিটারে এইচ বি পান্থ, বেস গিটারে মমি, অক্টোপ্যাডে সজল দে, কীবোর্ডে সৈকত নন্দী, তবলায় রাজিব বড়ুয়া। আজ শনিবার শেষ হবে ‘বঙ্গবন্ধু তোমার জন্ম হয়েছিল বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ’ স্লোগানে সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএপ্রিলেই মিলবে ক্ষতিপূরণের ১২০ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সক্ষমতা না থাকলে সারা দেশে প্রভাব পড়বে