এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হতে পারে মারাত্মক

সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

| রবিবার , ২৩ জুলাই, ২০২৩ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বে এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও। সেজন্য অংশত দায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, যা মশার বিস্তারের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে।

ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গুর বিস্তার পৃথিবীজুড়েই বাড়ছে। ২০০০ সালে যত মানুষ মশাবাহিত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল, সেই সংখ্যা আট গুণ বেড়ে ২০২২ সালে ৪২ লাখে উন্নীত হয়েছে। এ বছর মার্চে সুদানের রাজধানী খার্তুমে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। ইউরোপে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পেরুর বেশিরভাগ অঞ্চলে ডেঙ্গুর কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

গত জানুয়ারিতে ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছিল, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগগুলোর মধ্যে বর্তমানে ডেঙ্গুই বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা মহামারীতে পরিণত হওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে।

ডব্লিউএইচওর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. রমন ভেলাউধন শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর ডেঙ্গু যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে বিশ্বে রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে কিনা তা নির্ভর করছে এশিয়ার দেশগুলোতে বর্ষা মৌসুম দীর্ঘায়িত হবে কিনা তার ওপর।

২০১৯ সালে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বের ১২৯টি দেশে। সে বছর সব মিলিয়ে ৫২ লাখ মানুষের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছিল, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

দুই আমেরিকা মহাদেশ মিলিয়ে ইতোমধ্যে ৩০ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে এ বছর। দক্ষিণ আমেরিকার বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে ও পেরুর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ডেঙ্গুর সবচেয়ে বাজে প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা। সেখানে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বিস্তার ঠেকাতে রেডিয়েশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। রেডিয়েশন দিয়ে ডিএনএতে পরিবর্তন এনে মশার বংশবিস্তারের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। তারপর সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রকৃতিতে।

ডব্লিউএইচও বলছে, রোগীর যে সংখ্যা সরকারের খাতায় আসে, তা মোট সংক্রমণের একটি অংশমাত্র, কারণ অনেকের মধ্যেই উপসর্গ সেভাবে স্পষ্ট হয় না। অনেকেই পরীক্ষার বাইরে থেকে যান। এ রোগে মৃত্যুর হার ১ শতাংশের কম। উষ্ণ আবহাওয়া এডিস মশার দ্রুত বংশবৃদ্ধি এবং তাদের দেহের ভেতরে ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। পাশাপাশি নগরায়ন, পণ্য পরিবহন ও মানুষের চলাচল, দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা মশার বিস্তারে সহায়ক হয়।

উত্তর গোলার্ধের বিভিন্ন দেশে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা ডেঙ্গুর বিস্তার বাড়িয়ে দেবে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছিল ডব্লিউএইচওর ব্রিফিংয়ে। ড. রমন ভেলাউধন উত্তরে বলেন, এখনই তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে বংশবৃদ্ধির চেয়ে এ মশার মৃত্যু বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু মুশকিল হলো এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করে ছায়াচ্ছন্ন জায়গায় পরিষ্কার পানিতে, যেখানে তাপমাত্রা তত বেশি বাড়ে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেনাবাহিনী কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাটে চালু হলো ফেরি