এসিডে ঝলসে গেছে তরুণী প্রেমিক গ্রেপ্তার

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ৭ মে, ২০২২ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় রাতের আঁধারে ইয়াসমিন আক্তার (২০) নামে এক তরুণীকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাদী পক্ষের মামলার ভিত্তিতে নুরুল আজিম (২৮) নামে তরুণীর প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার আজিমের পরিবারের দাবি, মামলায় উল্লিখিত ঘটনার সময় আজিম ঘরেই অবস্থান করছিল। সে ঘটনায় জড়িত নয়, তৃতীয় কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। অন্যদিকে ইয়াসমিনের পরিবারের দাবি, আজিম তার এক সহযোগীকে নিয়ে এসিড দিয়ে ঝলসে দিয়েছে ইয়াসমিনকে। এদিকে অধিকতর তদন্তে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন হবে বলে আশা পুলিশের।

ঈদের পরদিন বুধবার (৪ মে) দিনগত রাত সোয়া ২টার দিকে উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ডিঙ্গেল লোংগা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৫ মে) ভোরে অভিযুক্ত প্রেমিক মো. নুরুল আজিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজিম কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা থানার রাইখালী ইউনিয়নের খন্তখাটা এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে। পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। ঘটনার পর ইয়াসমিন আক্তারের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে মো. আজিম এবং অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে আসামি করে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস ধরে আজিমের সাথে ইয়াসমিনের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এক পর্যায়ে ইয়াসমিন জানতে পারে আজিম বিবাহিত এবং তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এ জন্য আজিমের সাথে সে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এতে প্রেমিক আজিম ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময় তাকে পথেঘাটে এমনকি বাড়িতে এসেও নানা হুমকি ধমকি দিচ্ছিল। এর ধারাবাহিকতায় আজিম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির সহায়তায় এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

এই বিষয়ে আবু তাহের গতকাল বিকেলে বলেন, ‘তার বোন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলের ৩৬নং ওয়ার্ডে বার্ন ইউনিটের ৩১নং সিটে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা গুরুতর। শরীরের কোমর পর্যন্ত ঝলসে গেছে। সেদিন রাতে আজিম তার এক সহযোগীকে নিয়ে বাড়িতে আসে। এ সময় জানালা দিয়ে সে ইয়াসমিনকে ডেকে নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি করতে থাকে। এক পর্যায়ে তার হাতে থাকা কাচের বোতলভর্তি এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানালে তারাই এসে আমার বোনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

এদিকে অভিযুক্ত আজিমের মা আম্বিয়া বেগম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ছেলে যদি সত্যিকারের অপরাধী হয়ে থাকে তার শাস্তি হোক আমিও চাই। কিন্তু যেই সময়ে ঘটনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই সময় আজিম ঘরেই ছিল। আমাদের বসতঘর থেকে ইয়াসমিনের বসতঘরে যেতে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। তাহলে কি করে সে রাঙ্গুনিয়ার বেতাগীতে ঘটনা করে রাঙামাটির দুর্গম খন্তকাটা এলাকার নিজ বসতঘরে মুহূর্তের মধ্যে আসতে পেরেছে। আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত নয়, তৃতীয় কোনো ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) খান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে ভোরের দিকে অভিযুক্ত আজিমকে নিজবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আজিমের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও একজনকে বিবাদী করে একটি মামলা নেয়া হয়েছে।’ এই ঘটনায় তৃতীয় কেউ জড়িত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাদী পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন করা হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁধভাঙা ঈদ আনন্দ
পরবর্তী নিবন্ধনেই যানজট, স্বস্তিতে যাত্রীরা