এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ

লোহাগাড়ার আধুনগর ।। লোড ও পিটিআই টেস্ট ছাড়াই বেইজ ঢালাইয়ের অভিযোগ

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় লোড (ধারণ ক্ষমতা) টেস্ট ও পিটিআই (পাইল ইন্টিগ্রিটি) টেস্ট ছাড়া গার্ডার ব্রিজের বেইজ ঢালাইসহ নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠেছে। সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কালোয়ার পাড়া সংলগ্ন এলাকায় আধুনগর রাজঘাটা সড়কে এ ব্রিজ নির্মাণ করছিল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ঠিকাদার ব্রিজ নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন। এ ঘটনায় একইদিন স্থানীয় সাইফুল ইসলাম জুয়েল নামে এক ব্যক্তি লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারীসহ স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. জুনাইদ জানান, ব্রিজে নিম্নমানের নির্মাণ সমাগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া কোনো লোড ও পিটিআই টেস্ট করা হয়নি। লোড টেস্টের জন্য লোহার এঙ্গেল, বালিসহ কিছু সামগ্রী প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে মাত্র। কিন্তু বাস্তবে কোনো ধরনের টেস্ট করা হয়নি। এভাবে দায়সারাভাবে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। রয়েছে প্রাণহানির আশংকা।
জানা যায়, অভ্যন্তরীণ সড়কটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হয়ে উজিরভিটা পর্যন্ত বিস্তৃত। উক্ত সড়কের কালোয়ার পাড়া সংলগ্ন এলাকায় গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। যার দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার ও প্রস্থ ৫.৫ মিটার। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। মেসার্স আবছার কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজ নির্মাণ করছে। স্থানীয়রা শুরু থেকে ব্রিজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ করে আসছেন। প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারের লোকজন চাঁদাবাজি মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ঠিকাদার মো. নুরুল আবছার ও প্রকল্প প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম জানান, লোড টেস্ট ও পিটিআই টেস্ট না করার অভিযোগ মিথ্যা। তবে তারা লোড টেস্ট ও পিটিআই টেস্টের কোনো ধরণের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
লোহাগাড়া উপজেলা ঠিকাদার সমিতির সভাপতি নুরুল আলম জিকু জানান, স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায় উপজেলা প্রকৌশলী তাকে মুঠোফোনে ব্রিজ নির্মাণ কাজের স্থানে যাবার অনুরোধ করেন। সেখানে গেলে প্রকল্প প্রকৌশলী তাকে জানায় কাজের অর্ডারে লোড টেস্ট ও পিটিআই টেস্টের নির্দেশনা নাই। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এসে প্রকল্পের ফাইল চেক করে দেখেন ওই দুটি টেস্ট করার নির্দেশনা রয়েছে। ঠিকাদার ও প্রকল্প প্রকৌশলীর যোগসাজসে কোনো টেস্ট ছাড়া দায়সারাভাবে কাজটি শেষ করার চেষ্টা করেছিল। উক্ত ব্রিজ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের এমন কর্মকান্ডে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইফরাদ বিন মুনির জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। তবে বিষয়টি শুনেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ উল্যাহ জানান, লোড ও পিটিআই টেস্ট ছাড়া গার্ডার ব্রিজের বেইজ ঢালাইসহ নিম্নমানের কাজের অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্ড ম্যানেজমেন্ট অটোমেশন প্রকল্পে গতি
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬