এক লাখ অ্যাক্টিভিস্ট মাঠে নামাচ্ছে আওয়ামী লীগ

| শনিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

অনলাইনে গুজব ঠেকানো এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, গুজব ঠেকাতে আওয়ামী লীগের এক লাখ কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে মাঠে নামানো হচ্ছে। খবর বাংলানিউজের।
কয়েক বছর ধরে অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা সরকারকেও বেকায়দায় ফেলে দেয়। গুজব রটনাকারীরা মূলত ধর্মীয় উস্কানিসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সবশেষ দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লার ঘটনায়ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা হয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, সরকারবিরোধী ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, প্রতিক্রিয়াশীল ও জঙ্গি গোষ্ঠী এই সব সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত। সরকার হটানো বা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্যই তারা এই পথ বেছে নিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে ব্যর্থ হওয়া ওই গোষ্ঠী গুজবের আশ্রয় নিচ্ছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সাইবার অপরাধ আরও বাড়তে পারে।
এদিকে এই সাইবার ক্রাইম দমনে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দুই দিক থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি বলে মনে করছেন সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এ জন্য যেমন সরকারের প্রশিক্ষিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে পাশাপাশি দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগকে প্রশিক্ষিত কর্মী গ্রুপ তৈরি করতে হবে। যারা এই গুজব প্রতিরোধে অনলাইনভিক্তিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জনগণকে গুজবের ব্যাপারে সচেতন করার কাজ করতে পারবে।
এ বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব অপপ্রচার রোধে এক লাখ অনলাইন এক্টিভিস্টের সমন্বয়ে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। এই এক্টিভিস্টদের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সারা দেশের আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের নিয়ে ৭০টি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরির কাজ চলছে। এই মাস্টার ট্রেইনারদের দ্বারা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এক লাখ অনলাইন এক্টিভিস্ট তৈরি করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদাক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ভুয়া আইডি খুলে দেশে ও দেশের বাইরে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এরা পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চায়। সমাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি অনলাইনে অপপ্রচারের যথাযথ জবাব দিতেও তৈরি থাকতে হবে দলের নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছে।
এদিকে এই সাইবার অপরাধ দমনে প্রশাসনিকভাবেও শক্ত অবস্থান তৈরি করা হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীতে সাইবার ইউনিট গঠন করেছে সরকার। এই সাইবার ইউনিটকে আরও শক্তিশালী ও দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
গত ৩০ অক্টোবর পুলিশের ওই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, পুলিশ বাহিনীতে আমরা ছোট আকারে সাইবার ইউনিট করেছি। এটাকে বড় করার জন্য কাজ করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিটি মেয়রের বক্তব্যে দ্বিমত সাবেক প্রশাসক সুজনের
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর নাম আর মুছে ফেলা যাবে না : প্রধানমন্ত্রী