সিটি মেয়রের বক্তব্যে দ্বিমত সাবেক প্রশাসক সুজনের

| শনিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

গাছ কেটে ফুটপাতে ৬৬ দোকান নিয়ে সিটি মেয়রের বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল শুক্রবার (৫ নভেম্বর ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি সিটি মেয়রের বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন পত্রিকায় সিএনএ’র অভিন্ন প্রতিবেদন নিয়ে ৫ নভেম্বর সিটি মেয়রের একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে আমি প্রশাসক থাকাকালীন বিগত ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি টেঙটাইল, শেরশাহ ও তারাগেট এলাকায় দোকান নির্মাণের জন্য অনুমোদন প্রদান করি। বাস্তবিক সত্য হচ্ছে- সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের নিমিত্তে ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারের দখলে থাকা ফুটপাতগুলো সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনী এবং নগরবাসীর সহায়তায় দখলমুক্ত করি। এর ফলে ওই এলাকার অধিবাসীগণ স্বস্তিতে ফুটপাতে চলাফেরা করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে উচ্ছেদকৃত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে কর্পোরেশনে এসে দোকানগুলো ফিরে পেতে বিভিন্নভাবে আকুতি জানান। তাই মানবিকভাবে বিষয়টি সুরাহা করতে সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে এই মর্মে সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে সড়ক ও ড্রেন সংস্কারের পরে যদি কোনো জায়গা অবশিষ্ট থাকে তাহলে কর্পোরেশনের প্রকৌশল এবং রাজস্ব বিভাগের সমন্বয়ে অবশিষ্ট জায়গাসমূহ প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে ভাড়া দেওয়া হবে। যাতে কর্পোরেশন যে কোনো প্রয়োজনে উক্ত জায়গা নিজেদের দখলে নিয়ে আসতে পারে এবং সে লক্ষ্যে প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃক জায়গা চিহ্নিতকরণ, এস্টেট বিভাগ কর্তৃক ভাড়া দেয়া ও আদায় সংক্রান্ত একটি ফাইল অনুমোদন করি। উক্ত ফাইলের কোথাও ফুটপাতের উপর দোকান কিংবা কোনো স্থাপনা নির্মাণের কথা উল্লেখ করা নাই। পরবর্তীতে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ আমার দায়িত্ব হস্তান্তরের পরেই ৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে বর্ণিত জায়গাসমূহ চিহ্নিতকরণ, বরাদ্দ এবং ভাড়া নির্ধারণ করবে এস্টেট শাখা মর্মে একখানা পত্র ইস্যু করেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, জায়গা চিহ্নিতকরণ, দোকান বরাদ্দকরণ, সেলামী আদায়, ফুটপাতে দোকান নির্মাণ এবং গাছ কাটাসহ আনুসাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে আমার দায়িত্ব হস্তান্তরের পরেই অর্থাৎ আমার পরবর্তী প্রশাসনই সমুদয় কাজসমূহ সম্পাদন করে। যেখানে আমার ন্যূনতম কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি পূর্বের ন্যায় আবারও দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করছি বর্ণিত স্থানে গাছ কেটে ফুটপাতে কোনো ধরনের দোকান নির্মাণের কোনো বরাদ্দপত্র আমি প্রদান করিনি। যদি কর্পোরেশনের কাছে সেরকম কোনো বরাদ্দপত্র থাকে তাহলে তা জনসম্মুখে উপস্থাপন করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
এখানে উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জায়গা চিহ্নিতকরণ, জায়গা বরাদ্দ, সেলামী আদায়সহ দোকান নির্মাণের কর্মযজ্ঞ সম্পাদিত হলেও সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কি এ ব্যাপারে অবগত ছিলেন না? সংবাদপত্রসমূহে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ কেউ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন, যা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর মতো অবস্থার মতো। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের নিকট অনুরোধ থাকবে কোথাও কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করে নেওয়ার জন্য। কিন্তু প্রকৃত সত্য গোপন করে অন্যের ওপর দোষ চাপানো কতটুকু যুক্তিযুক্ত, তার বিচারের ভার নগরবাসীর কাছে উপস্থাপন করলাম। অযথা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে প্রকৃত সত্য জনগণের কাছে উপস্থাপন করাই সমীচিন বলে মত প্রকাশ করেন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই
পরবর্তী নিবন্ধএক লাখ অ্যাক্টিভিস্ট মাঠে নামাচ্ছে আওয়ামী লীগ