একান্ত ভাবনা

শায়েলা আহমেদ | সোমবার , ২১ মার্চ, ২০২২ at ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

গত ৮ মার্চ সারা বিশ্বে পালিত হল বিশ্ব নারী দিবস। এই একটি দিনে আমরা নারীর সম্মান ও নারীর অধিকার নিয়ে বেশ তৎপর হয়ে উঠি। আমি মনে করি নারী শব্দটি লিঙ্গ ভেদে ভিন্ন অর্থ বুঝালেও আসলে নারী পুরুষ কোন আলাদা বিষয় নয়। আমাদের পরিচয় হওয়া উচিত আমরা মানুষ। আমাদের সামাজিক অবস্থানে অধিকাংশ নারীরা নিজেদের ঘরেই অবহেলিত। এমন কি এক নারীর প্রতি অন্য নারীর যে হিংসা দ্বেষ বৈষম্য তা এখনও এই সমাজে বিদ্যমান। সম অধিকার বলে আমরা যতই শ্লোগান দেই না কেন, সেই অধিকার আমরা কতোটুকুই পেয়েছি তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। উদাহরণ হিসেবে আমরা একটু উত্তরবঙ্গের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি। সেখানে পাথর ভাঙার যে দিনমজুর নারী পুরুষ রয়েছে, তারা সমান কাজ করেও এদের পারিশ্রমিক কিন্তু সমান নয়। সেখানে একজন নারী পাচ্ছে ৬০ টাকা। অন্যদিকে পুরুষ পাচ্ছে ১০০ টাকা করে। দেখা যাচ্ছে বৈষম্য এখানেও রয়ে যাচ্ছে। তেমনি আমরা দেখতে পাচ্ছি ভোটের ক্ষেত্রেও একই উপযুক্ততা থাকা সত্বেও নোমিনেশন পুরুষেরা বেশী পাচ্ছে মহিলাদের চেয়ে। আসলে এই বৈষম্য সহজে দূর হবার নয়। নারীরা আজও সমতাহীন অবস্থায় বসবাস করছে। কী শারীরিক কী মানসিক সব ক্ষেত্রেই নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। অথচ আমাদের সংবিধানেও নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। তারপরও এই বৈষম্য কেনো? বৈষম্য দূর করতে হলে পরিবার থেকেই প্রথম শুরু করতে হবে। এখনও অনেক পরিবারে মেয়ে শিশু জন্ম হলে মুখ অন্ধকার হয়ে যায়। এ মনোভাব দূর হওয়া বাঞ্চনীয়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় নারীরাও নারীর অগ্রসর হওয়াতে কখনো কখনো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এসব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র একদিন নারী দিবস পালন করেই এ বৈষম্য দূর হবার নয়। এরজন্য ঘরে বাহিরে পরিবার ও সমাজের সর্বত্র সচেতনতা ও মূল্যবোধের প্রয়োজন। নারীর পাশাপাশি পুরুষের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলে এ বৈষম্য কখনো দূর হবার নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিল্প-সাহিত্য-ঐতিহ্য ও উন্নয়নের পটিয়া উৎসব
পরবর্তী নিবন্ধরমজানে ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য ব্যবস্থা