এই ট্রফি দেশের সব মানুষের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

সোমবার রাতে সাফ ফুটবলের শিরোপা জয়ের পর থেকে ক্লান্তিহীন আনন্দ উদযাপন করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের নারী ফুটবলাররা। গতকাল বাংলাদেশ সময় ১টার দিকে কাটমান্ডু থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় সাবিনারা। টানা খেলা, আনন্দের অতিশয্যে নির্ঘুম রাত সব মিলিয়ে ক্লান্ত থাকাটাই স্বাভাবিক। তার উপর ভ্রমণের ধকল তো আছেই। সাবিনা খাতুনের চেহারায় এই ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর থেকে মানুষের ভালবাসায় সে সব ক্লান্তি যেন উধাও হয়ে গেল। বিমানবন্দরে দারুণ অভ্যর্থনা পেয়ে অভিভূত বাংলাদেশ অধিনায়ক গর্বিত কণ্ঠে তাদের স্মরণীয় সাফল্য উৎসর্গ করলেন দেশের মানুষকে। নেপালে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে গতকাল দুপুর দুটার একটু আগে ঢাকায় পা রাখে বাংলাদেশ দল। বিমানবন্দরে নানা আয়োজনে তাদেরকে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে বিমানবন্দরেই ছোট্ট সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া ৯ম পৃষ্ঠার ৩য় কলাম
জানান সাবিনা।
তিনি বলেন, আমাদেরকে এত সুন্দর করে বরণ করে নেওয়ার জন্য আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। মন্ত্রী মহোদয় ও ফেডারেশনের যারা এসেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশের মেয়েদের, বাংলাদেশের ফুটবলকে যে আপনারা এত ভালোবাসেন, এসব দেখে আমরা অনেক অনেক গর্বিত। সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বলুন বা ১৮ কোটি কিংবা ২০ কোটি, এই ট্রফি বাংলাদেশের সব মানুষের। নারী সাফে আগের সব আসরের চ্যাম্পিয়ন ও এবারও ফেভারিট হয়ে আসা ভারতকে গ্রুপ পর্বেই উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। একের পর এক জয় ও প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষেও দাপুটে জয়ে শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাবিনা। ৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোল স্কোরার তিনি। আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন তিনিই।
বাংলাদেশ নারী ফুটবলের মুখ হয়ে ওঠা এই ফুটবলার আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন, অনেক পরিশ্রম ও পরিকল্পনার ফসল এই জয়। এবার তারা তাকাতে চান আরও উঁচুতে। আমাদের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, মন্ত্রী মহোদয়ের সহায়তায় ২০১২ সাল থেকে মহিলা ফুটবল ভালোভাবে চলছে। মেয়েদের পরিশ্রম যদি দেখেন, ৪-৫ বছরের সাফল্য দেখেন, এতেই সব বোঝা যায়। সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমাদের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে সামনের দিকে আরও কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়।
বিমানবন্দরে সাবিনাদের নিয়ে ছিল কেক কাটার পর্ব। দলের সবার গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। বাইরে দলকে বরণ করে নিতে অপেক্ষায় ছিল হাজারও জনতা। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, ব্যানার। এক যুগের বেশি সময় ধরে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসা কোচ এবং এই সাফল্যের নেপথ্য কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটনও মুগ্ধ দেশে ফিরে এমন সংবর্ধনা পেয়ে। রাজসিক এই আয়োজনে আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের এই পথচলা অনেক দিনের। অনেক পেছন থেকে আমরা উঠে এসেছি, ২০১২ সাল থেকে পরিবর্তনটা শুরু হয়েছিল। সবার অবদানেই আজকের এই সাফল্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঋতুপর্ণার মাথায় তিন সেলাই
পরবর্তী নিবন্ধস্বপ্নজয়ী মেয়েদের আনন্দযাত্রা