উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বিএনপির

| বুধবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

দেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ‘তৈরি না হওয়ায়’ আসন্ন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল বিএনপি। ভোট বর্জনের কথা আগেই জানিয়েছিল দলটি; গত সোমবারও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তে তারা অটল আছেন। তারপর রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভোট বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল মঙ্গলবার দলীয় প্যাডে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রিজভী বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলবিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এই সরকার ভোট, সংবিধান, ভিন্নমত প্রকাশ, বহুদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনসহ মানুষের সহজাত অধিকারগুলোকে নির্দয় দমনের কষাঘাতে বিপর্যস্ত করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। তাই সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তারের ফলশ্রুতিতে এই অবৈধ সরকারের অপরাজনীতি ও নির্বাচনি প্রহসনের অংশীদার না হওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বিএনপি আগামী ৮ মে থেকে শুরু হওয়া সকল ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট হবে। এসব উপজেলায় তিনটি পদে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন সোমবার। এরপর বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল। ২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং ২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। প্রথম পর্বের ভোট হবে ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোট হবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে রিজভী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের নিকট জবাবদিহি করে সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত। এই শর্তের অনুপস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র হিংস্ররুপে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিকট স্বৈরাচারের অভ্যূদয় হয়েছে। আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। এদের আমলে কখনই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীনদের অধীনে সব জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের নানাভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়। অনেককেই মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়তলী এলাকা থেকে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধউপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অনেকেই অংশ নেবেন : কাদের